কেয়ামতের আলামত পর্ব-৯ (ভূমিকম্প, ভূমিধ্বস – হার্প টেকনোলজি)

আল্লাহ তা আলা বলেন,

(হে নবী) আপনি বলুন! তিনিই (আল্লাহ) শক্তিমান যে, তোমাদের ওপর কোনো শাস্তি ওপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পদতল থেকে প্রেরণ করবেন অথবা তোমাদেরকে দলে-উপদলে বিভক্ত করে সবাইকে মুখোমুখি করে দেবেন এবং এককে অন্যের ওপর আক্রমণের স্বাদ আস্বাদন করাবেন। দেখ, আমি কেমন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি যাতে তারা বুঝে নেয়।’

সুরা আনআম : ৬৫

তাফসীর গ্রন্থে আলেমগন ব্যাখা করেন –

‘আসমান থেকে আজাব অবতীর্ণের মমার্থ হলো- তীব্র শব্দ, পাথর অথবা ঝড়ো হাওয়া; আর পায়ের নীচ থেকে আজাব প্রেরণের ব্যাখ্যা হলো- ভূমিকম্প এবং ভূমি ধ্বসের মাধ্যমে পৃথিবীর অভ্যন্তরে ঢুকে যাওয়া।

এছাড়া ঘন ঘন ভূমিকম্প ও ভূমিধস সংঘটিত হবে হাদীস হতে জানা যায়।

ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ভূমিধ্বস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণস্বরূপ আযাব এ উম্মাতের মাঝে ঘনিয়ে আসবে। জনৈক মুসলিম ব্যক্তি প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কখন এসব আযাব সংঘটিত হবে? তিনি বললেনঃ যখন গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র বিস্তৃতি লাভ করবে এবং মদ্যপানের সয়লাব হবে।

হাসান, সহীহাহ (১৬০৪)।

জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২২১২
হাদিসের মান: হাসান হাদিস

হাদীস হতে জানা যায় মানুষকে ভূমিকম্প দ্বারা শাস্তি দিবেন। এছাড়া ভূমিধ্বস দ্বারা কেয়ামতের পূর্বে জালেমদের আযাব দিবেন এবং মুসলিমদের ও তাদের মহান নেতাকে (মাহাদী হাফি:) রক্ষা করবেন যা মাহাদী প্রকাশ করার ঘটনা হবে বলে হক্বপন্থী আলেমগন ঐক্যমত।

আমর নাকিদ ও ইবনু আবূ উমার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবন সাফওয়ান (রহঃ) হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি, একটি সৈন্যদল এ (আল্লাহর) ঘরের বিরুদ্ধে লড়াই করার উদ্দেশ্যে আগমন করবে।

অতঃপর তারা যখন এ ভূমির এক বায়দায় (ময়দানে) পদার্পণ করবে তখন তাদের মাঝের অংশটি ভূমিতে ধসিয়ে দেয়া হবে। এ সময় অগ্রভাগের সৈন্যরা পেছনের সৈন্যদেরকে চিৎকার করে ডাকতে থাকবে। অতঃপর সকলকেই ভূমিতে ধসিয়ে দেয়া হবে। পালিয়ে যাওয়া একটি লোক ব্যতীত তাদের কেউ আর অবশিষ্ট থাকবে না। সে-ই তাদের সম্পর্কে অন্যদেরকে সংবাদ দিবে। এ কথা শুনে এক ব্যক্তি বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি (আবদুল্লাহ) নামে হাফসা (রাঃ) এর উপর মিথ্যা আরোপ করেননি এবং হাফসা (রাঃ) এর ব্যাপারেও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনিও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর মিথ্যা আরোপ করেননি। (মুসলিম -৬৯৭৮)

অপর হাদীসে আছে – আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত পা নাড়ালেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! (আজ রাতে) ঘুমন্ত অবস্থায় আপনি এমন আচরণ করেছেন, যা পূর্বে আপনি কখনো করেননি। তিনি বললেনঃ আশ্চর্য ব্যাপার এই যে, কুরায়শ বংশীয় এক ব্যক্তি বায়তুল্লাহ শরীফে আশ্রয় গ্রহণ করবে। তার কারণে আমার উম্মাতের একদল লোক বায়তুল্লাহর উপর আক্রমণের ইচ্ছা করবে। তারা রওয়ানা হয়ে উদ্ভিদশূন্য ময়দানে আসতেই তাদেরকে সহ ভূমি ধ্বসিয়ে দেয়া হরে। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! বিভিন্ন রকমের মানুষই তো রাস্তা দিয়ে চলে। জবাবে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাদের মধ্যে কেউ তো সেচ্ছায় আগমণকারী, কেউ অপারগ, আবার কেউ পথিক মূসাফির। তারা সকলে এক সাথেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে তাদের উত্থান হবে। আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে তাদের নিয়্যাতের ভিত্তিতে উত্থিত করবেন। (মুসলিম – ৬৯৮০)

সহীহ মুসলিম, আবু দাউদ, আল ফিতানের হাদীস মিলালে স্পষ্ট হয়ে যায় যে উক্ত আশ্রয়প্রার্থী ব্যক্তি হবেন খলিফা মাহাদী যার বিরুদ্ধে শাম হতে সেনা পাঠানো হবে এবং মদীনার বায়দা নামক স্হানে তাদের ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। যা মাহাদী (হাফি:) প্রকাশের আলামত হিসেবে ধরা হয় এবং অনেকে এই ঘটনায় তার সাথে যোগদান করবে।

এখন সমস্যা হল- অনেক আলেমই কোথাও ভূমিকম্প, ভূমিধ্বস হলে হার্প টেকনোলজির কারণে হয়েছে, দাজ্জালী শক্তি বা শয়তানের ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিমত করে। তখনও হয়তো তারা বলবে হার্প টেকনোলজির কারণে ভূমিধ্বস হয়েছে – কারন শাম হতে যে বাহিনী বের হবে তারা মুসলিম (নামধারী ও কিছু মুসলিম বাধ্য হয়ে আসবে) হবে। হয়তো মিডিয়াভক্ত আলেমগণ মাহাদীর (হাফি:) বাহিনীকে ইহুদিদের দালাল বা দাজ্জালি বাহিনী অভিহিত করবে। তাদের রক্ষা করতে দাজ্জাল হার্প টেকনোলজি ব্যবহার করছে বলে অভিহিত করবে।

আসুন হার্প সম্পর্কে একটু জেনে নিই

হার্পের পুরো নাম হলো হাই ফ্রিকোয়েন্সি একটিভ অরোরাল রিসার্চ প্রোগ্রাম (High Frequency Active Auroral Research Program)।

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ও নৌবাহিনীর আর্থিক সহায়তায় আলাস্কা বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিরক্ষা উন্নয়ন গবেষণা কর্মসূচী সংস্থা (ডিআরপিএ) হার্প গবেষণা চালাচ্ছে ১৯৯৩ সাল থেকে। এ কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য হলো আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে আয়নমলের সৌরবিদ্যুতের ওপর প্রভাব তৈরি করা। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হার্প দিয়ে মানব বিধ্বংসী অস্ত্রের পরীক্ষার অভিযোগ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। জানা যায়, এই প্রকল্প শুরু হয় স্নায়ু যুদ্ধের শুরু থেকে। রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র আলাদাভাবে এ নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে। হার্পের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া উভয়েই কৃত্রিমভাবে প্রাকৃতিক দুর্বিপাক সৃষ্টির অস্ত্র তৈরি করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। হার্প নিয়ে রাশিয়ার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষেই অভিযোগ বেশি আসছে। এর কারণ যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে হার্প নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে বলে মিডিয়ায় আসছে।

হার্প প্রকল্পের অধীনে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তরঙ্গকে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীর মধ্যভাগের ভূতত্ত্বে আঘাত হানার জন্য নতুন গোপন অস্ত্র তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ঠাণ্ডা ইস্পাতকে অগ্নিপ্রজ্বলিত করা বা সাধারণ অস্ত্রকে পারমাণবিক অস্ত্রে রূপান্তর করার মতো ক্ষমতাশালী এ অস্ত্র। পূর্বের অস্ত্র থেকে এটার পার্থক্য এই যে, ভূতলের মধ্যভাগে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যক্ষ প্রভাব ঘটাতে এটি সক্ষম। যা আর কোনো অস্ত্রের পক্ষে সম্ভব না।’ বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘হার্প কর্মসূচির অধীনে বৈজ্ঞানিকদের গবেষণায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা বহুদূর এগিয়ে গেছে এবং বিশ্ব সম্প্রদায় এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। বেতার যোগাযোগের মাধ্যম ভেঙে ফেলতে সক্ষম নতুন অস্ত্রটি।

আর হার্প পরিচালকদের মতে, এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো আয়নমলের বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও ঘটনা সনাক্তকরণ এবং অনুসন্ধান করা। এর মাধ্যমে নিম্মোক্ত কাজগুলো করা যাবে এটা তারাই স্বীকার করেছেন।

০১) আয়নমলের বৈশিষ্ট, চরিত্র ও তা সনাক্ত করতে ভূবিদ্যা সম্পর্কিত কিছু পরীক্ষা চালানো যাতে করে ওজনস্তরের নিয়ন্ত্রণ লাভ করা যায়।
০২) আয়নমলে লেন্সের মাধ্যমে অতি উচ্চকম্পাঙ্কের শক্তিকে ফোকাস করা এবং আয়নমন্ডলের প্রক্রিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ নেয়া।
০৩) প্রেরিত ইনফ্রারেড তরঙ্গ আয়নমন্ডলের ইলেকট্রন গুলোকে আরো গতিশীল করবে এবং অন্যান্য আলোক তরঙ্গ নির্গমনের মাধ্যমে রেডিও ওয়েভের চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে।
০৪) ভূচৌম্বকীয় গঠনের পরিবর্তনের মাধ্যমে রেডিও তরঙ্গের প্রতিফলন নিয়ন্ত্রণ করা।
০৫) পরোক্ষভাবে তাপ দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত রেডিও ওয়েভ এর চলাচলের ওপর প্রভাব ফেলা যা আয়নমন্ডলের নিয়ন্ত্রণের সামরিক উদ্দেশ্যকে সম্প্রসারিত করে।
০৬) আয়নমলের ৯০ কি.মি. নিচে রেডিও ওয়েভের প্রতিফলক স্তর তৈরী করা, যা দিয়ে অনেক দূর দুরান্ত পর্যন্ত নজরদারি করা যাবে।

হার্প সম্পর্কে যতটুকু জানা যায়- সবাই স্বীকার করে এটা অন্তত৷ গোপনীয় প্রকল্প আর এই প্রকল্প নিয়ে ক্ষমতাসীন দেশগুলোর পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ (দুর্যোগ, ভূমিকম্প তৈরি) অনেক কিন্তু কিছু প্রমাণিত সত্য নয়। কিন্তু বড় বড় গবেষণাবিদদের মতে- হার্প দিয়ে যদি ভূমিকম্প তৈরি হয় তা মাটির সামান্য গভীর হতে করা যাবে বিরাট আকারে নয়। কিন্তু একশ্রেনীর আলেম আছে যারা মানুষকে কেয়ামত দিবসের পেরেশানি, কবরের আযাব, জাহান্নামের ভয় যতটা না দেখায় তারচেয়ে বেশি ভয় দেখায় এসব টেকনোলজির। অথচ কুরআনে দাজ্জালের নাম আসেনি কিন্তু বার বার কেয়ামত ও জাহান্নামের ভয় দেখানো হয়েছে।

বহু যুবককে দেখেছি মোবাইলে ইসলামের কথা বলতে ভয় পায় এজন্য যে দাজ্জালের এজেন্টরা সব কন্ট্রোল করছে, সব দেখছে অথচ সর্বদ্রষ্টা, যিনি সবকিছু জানেন, আল্লাহর ভয়ে পাপ হতে বিরত হচ্ছে না!! আসলে যে ভয়টা রবকে পাওয়া উচিত সেরূপ ভয় আজ মুসলিমরা কাফেরদের পাচ্ছে (বিভিন্ন টেকনোলজি ও পারমাণবিক অস্ত্র)। অথচ মৃত্যু চিরসত্য তা আসবে।

আর কেউ ঈমানে অটল থাকলে, শাহাদাতের মৃত্যুর আশা রাখলে যেকোন টেকনোলজি, অস্ত্রের আঘাতেই মারা যাক সেই শহীদ। এটাই তো মুমিনের প্রার্থনা হওয়া উচিত। আসলে শয়তান ও দাজ্জালের মূল পরিকল্পনা এই নয় – শুধু মানুষ হত্যা করা তাহলে সে রাজত্ব করবে কার উপর? বরং তাদের পরিকল্পনা আরও ভয়াবহ। মানুষের মাঝে শিরক, কুফর, আল্লাহর ভয়ের বদলে দুনিয়ার ভীতি বৃদ্ধি করা যাতে মানুষকে জাহান্নামে নিতে পারে।

কুরআনে বর্নিত,

“আমি অবশ্যই আপনার বান্দাদের এক নির্দিষ্ট অংশকে আমার অনুসারী করে নেব। আমি তাদের পথভ্রষ্ট করবই।’

সুরা নিসা, আয়াত : ১১৮-১১৯

শয়তান মানুষকে ভীতি দেখাবে-

‘শয়তান তোমাদের দারিদ্র্যের ভয় দেখায় ও কৃপণতার আদেশ করে।’

সুরা বাকারা, আয়াত : ২৬৮

ঠিক একই কাজ দাজ্জাল করবে-

আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযি:) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দাজ্জালের আত্মপ্রকাশের পর কোন এক মুসলিম লোক তার দিকে এগিয়ে যাবে। তারপর পথে অস্ত্রধারী দাজ্জাল বাহিনীর সঙ্গে তার দেখা হবে। তারা তাকে প্রশ্ন করবে, কোথায় যাবে? সে বলবে, আবির্ভূত দাজ্জালের কাছে যাব। তারা তাকে আবারো প্রশ্ন করবে, তুমি কি আমাদের প্রতিপালকের উপর ঈমান আননি? সে বলবে, আমাদের প্রতিপালক গুপ্ত নন। দাজ্জালের লোকেরা তাকে লক্ষ্য করে বলবে, তোমরা তাকে হত্যা করে দাও। তখন তারা একে অপরকে বলবে, আমাদের রব কাউকে তার সামনে নেয়া ব্যতিরেকে হত্যা করতে কি তোমাদের বারণ করেননি? তারপর তারা তাকে নিয়ে দাজ্জালের কাছে যাবে। দাজ্জালকে দেখামাত্রই সে বলবে, হে লোক সকল! এ-তো সেই দাজ্জাল, যার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে বর্ণনা দিয়েছেন। তারপর দাজ্জাল তার লোকদেরকে আগন্তুক লোকের মাথা ছিন্ন-ভিন্ন করার নির্দেশ দিয়ে বলবে, তাকে ধর এবং তার মাথা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দাও। তারপর তার পেট ও পিঠে আঘাত করা হবে। আবার দাজ্জাল তাকে প্রশ্ন করবে, তুমি কি আমার প্রতি ঈমান আনয়ন করবে না। সে বলবে, তুমি তো মাসীহ্ দাজ্জাল। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর দাজ্জাল তার ব্যাপারে নির্দেশ দিবে। দাজ্জালের হুকুমে মাথা হতে পা পর্যন্ত তাকে করাতে চিরে দু’ টুকরো করে দেয়া হবে। তারপর দাজ্জাল উভয় টুকরার মধ্যস্থলে দন্ডায়মান হয়ে তাকে সম্বোধন করে বলবে, উঠো। সে সোজা দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর আবারো তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তুমি কি আমার প্রতি ঈমান আনবে না? অত:পর আগন্তুক ব্যক্তি বলবে, তোমার সম্পর্কে কেবল আমার মাঝে সুস্পষ্ট ধারণা বেড়েই চলবে। তারপর আগন্তুক লোক বলবে, হে লোক সকল! আমার পর দাজ্জাল আর কারো সংঙ্গে এমন আচরণ করতে সক্ষম হবে না। এরপর যবাহ্ করার জন্য দাজ্জাল তাকে পাকড়াও করবে। কিন্তু তার গলা ও ঘাড় তামায় রূপান্তর করা হবে। ফলে দাজ্জাল তাকে যবাহ্ করতে সক্ষম হবে না। উপায়ান্তর না দেখে দাজ্জাল তখন তার হাত-পা ধরে তাকে নিক্ষেপ করবে। লোকেরা মনে করবে, দাজ্জাল তাকে আগুনে নিক্ষেপ করেছে। বস্তুত: সে জান্নাতে নিক্ষিপ্ত হবে। অত:পর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীনের কাছে এ লোকই হবে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বড় শাহাদাতের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। (ই.ফা. ৭১১০, ই.সে. ৭১৬৪)

সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭২৬৭
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

এই হাদীসে স্পষ্ট – দাজ্জাল তার অনুসারীদের হত্যা করার নির্দেশ নয় বরং তার কাছে নিয়ে আসার নির্দেশ দিবে যেন ধোকা দিয়ে ঈমানহারা করতে পারে এবং ভক্তদের নিকট তার প্রতি বিশ্বাস দৃঢ় করতে পারে। কিন্তু মুমিন তখনও বিজয়ী থাকবে, আল্লাহ সুরক্ষা করবেন।

বাঁচার উপায়

আল্লাহর উপর তাওয়াককুল করা। ইরশাদ হয়েছে,

‘নিশ্চয়ই তার কোনো আধিপত্য নাই তাদের ওপর যারা ঈমান আনে ও তাদের প্রতিপালকের ওপর নির্ভর করে।’

সুরা ফাতির, আয়াত : ৯৯

আবার কিছু যুক্তি দেখি- যদিও হার্প টেকনোলজি দিয়ে অনেক বড় কিছু করা সম্ভব হতো সবার আগে অন্যদেশে না করে এমন দেশে করতো যেদেশে তারা দীর্ঘ অনেক বছর যুদ্ধ করেও বিজয়ী হতে পারেনি। আর আপনার, আমার জীবদ্দশায় খলিফা মাহাদী (হাফি:) প্রকাশিত হোক আর না হোক কুরআন-সুন্নাহ আজও অক্ষুন্ন আছে সে পথে চলুন। তাহলে জান্নাত সহজ হবে আর মাহাদীর (হাফি:) পথটাকে হয়তো সুগম করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *