রসুল (সা:) ও আহলে বায়াতের সম্মান (সম্মান ও কর্ম জীবন)! রসূলের শানে শব্দচয়নে সতর্কতা!

রসুল (সা:) নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠতম রসুল। সৃষ্টিজগতের মধ্যে সর্বোচ্চ ভালোবাসা ও সম্মানের অধিকার তার। হাজার মুমিনের কন্ঠে আজও তার ও আহলে বায়াতের জন্য প্রশংসা ও দূরুদে দোয়া করা হয়। তার প্রশংসায় উত্তম শব্দ প্রয়োগ করা উচিত আর এমন কোন মন্তব্য করা উচিত নয় যা তার মর্যাদাক্ষুন্ন করে।

কর্মজীবন

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:

“আল্লাহ এমন কোন নবী প্রেরণ করেন নি, যিনি বকরি চরান নি।”

এ কথা শুনে সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনিও? নবী করীম (সা) বললেনঃ “হ্যাঁ আমিও কয়েকটি মুদ্রা (কীরাত)-এর বিনিময়ে মক্কাবাসীদের ছাগল চরিয়েছি।” আর কারো কারো মতে এর অর্থ ‘কারারীত’ নামক স্থানে বকরী চরিয়েছি।

ইমাম বুখারী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

রসুল (সা:) সহ নবীরা বকরি বা মেষ চরিয়েছেন। প্রতিটি নবী অভাবগ্রস্থ ছিলেন তা নয় বরং সোলাইমান (আ:) সহ অনেকে ছিল বিত্তশালী। তারপরেও মেষ চরানো ছিল তাদের জন্য প্রশিক্ষণ। বকরি বা মেষ দেখতে সবগুলো প্রায় একই প্রকৃতির, প্রত্যেককে আলাদা করে হিসাব ও পর্যবেক্ষণ করার প্রয়োজন হয়। বন্য প্রাণী, ঝড়-তুফানসহ সব বিপদ হতে রক্ষার জন্য (সবর) দৃঢ়তা ও দক্ষতার প্রয়োজন হয়। নবীরা শৈশব হতে সেই প্রশিক্ষণ লাভ করেন যা পরবর্তীতে দাওয়াহ ও জেহাদের কাজে লাগে।

রসুল (সা:) জাহেলী সমাজ ব্যবস্থায় বেড়ে উঠেন, যখন সুদের ছড়াছড়ি, ব্যবসার সততা ছিল কম। সেই সমাজব্যবস্থায় মেষ পরিচালনা করার মত পবিত্র রিজিক তাকে দান করেন আল্লাহ পাক। আজও দেখবেন- হারামের ছড়াছড়িতে গৃহপালিত পশু পালন অপেক্ষাকৃত পবিত্র রিজিক।

ব্যবসায় অংশীদারিত্ব

ইবন ইসহাক বলেন, খাদীজা বিন্ত খুওয়ায়লিদ একজন সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী মহিলা ছিলেন। লাভে অংশীদারিত্বের চুক্তিতে পুরুষদেরকে তিনি তাঁর ব্যবসায় নিয়োগ করতেন। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সত্যবাদিতা, বিশ্বস্ততা ও সচ্চরিত্রতার কথা জানতে পেরে তিনি তাঁর নিকট প্রস্তাব পাঠালেন, যেন তিনি ব্যবসায় পণ্য নিয়ে সিরিয়া সফর করেন। বিনিময়ে তিনি তাঁকে অন্যদের তুলনায় অধিক মুনাফা প্রদানের প্রস্তাব করেন। সঙ্গে থাকবে খাদীজার গোলাম মায়সারা।

রাসূলুল্লাহ (সা) খাদীজার (রা) এই প্রস্তাবে সম্মত হন এবং পণ্যসামগ্রী নিয়ে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তাঁর সঙ্গে খাদীজার গোলাম মায়সারাও রওয়ানা হন। সিরিয়া পৌঁছে রাসূলুল্লাহ (সা) জনৈক পাদ্রীর গির্জার নিকট একটি গাছের ছায়ায় অবস্থান গ্রহণ করেন। পাদ্রী মায়সারাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞেস করেন, গাছের নিচে অবতরণকারী ব্যক্তিটি কে? মায়সারা বললেন, ইনি হারমবাসী কুরায়শী বংশের এক ব্যক্তি। পাদ্রী বললেন, এ যাবত এই গাছের নিচে নবী ব্যতীত কেউ অবতরণ করেনি। তারপর রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর নিয়ে আসা ব্যবসা-পণ্য বিক্রি করলেন এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়ে তাঁর পছন্দমত অন্য মাল ক্রয় করলেন। এরপর মায়সারাকে নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন।

ঐতিহাসিকদের ধারণা, মায়সারা লক্ষ্য করেন যে, সূর্যের তাপ প্রখর হওয়ার সাথে সাথে দু’জন ফেরেশতা মুহাম্মদ (সা)-কে ছায়া প্রদান করছেন। তখন তিনি উটের পিঠে চড়ে এগিয়ে চলছিলেন। মক্কায় এসে খাদীজাকে তিনি তাঁর পণ্য বুঝিয়ে দেন। খাদীজা দ্বিগুণ বা প্রায় দ্বিগুণ মূল্যে তা বিক্রি করেন। মায়সারা খাদীজার নিকট পাদ্রীর মন্তব্যের কথা এবং নবীজী (সা)-কে দুই ফেরেশতার ছায়াদানের কথা ব্যক্ত করেন। আর খাদীজা (রা) ছিলেন একজন দৃঢ়চেতা, সম্ভ্রান্ত ও বুদ্ধিমতী মহিলা।

মায়সারা ঘটনার ইতিবৃত্ত শুনালে খাদীজা (রা) রাসূলুল্লাহ (সা)-কে ডেকে পাঠালেন। ঐতিহাসিকদের ধারণা, হযরত খাদীজা (রা) রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলেন, চাচাতো ভাই! আপনার সুখ্যাতি, আপনার বিশ্বস্ততা, আপনার উত্তম চরিত্র, সত্যবাদিতা-এ সবের কারণে আমি আপনার প্রতি আকৃষ্ট। তারপর তিনি সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন।

উল্লেখ্য যে, খাদীজা (রা) কুরায়শ মহিলাদের মধ্যে বংশগতভাবে অতিশয় সম্ভ্রান্ত, মর্যাদায় সকলের সেরা ও শ্রেষ্ঠ বিত্তবতী মহিলা ছিলেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

অর্থাৎ রসুলকে (সা:) তার মেধা, শ্রম, সততার ভিত্তিতে খাদিজার (রা:) ব্যবসায় অংশীদারিত্ব করেন। ইসলামে এরূপ ব্যবসা জায়েজ যেহেতু খাদিজা (রাঃ) ব্যবসা পরিচালনার জন্য একজন বিশ্বস্ত পুরুষের প্রয়োজন ছিল। আল্লাহ খাদিজাকে (রা:) সম্মানিত করেন রসুলের (সা:) স্ত্রী হিসেবে এবং তার সম্পদকে দ্বীনের কাজে লাগানোর উত্তম তৌফিক দেন।

আমাদের দেশে যুগ যুগ হতে বহু মসজিদে আহলে বায়াতের ফজিলত বর্ণনা করা হয়নি কিন্তু বিতর্কিত শব্দ প্রয়োগ করা হয় যা রসুল (সা:), তার পবিত্র স্ত্রী ও আহলে বায়াতের শানের সাথে সাংঘর্ষিক। কুরআনের নির্দেশ এমন কোন দ্বৈত অর্থবোধক শব্দ প্রয়োগ করা হতে বিরত থাকা যা রসুলের (সা) মর্যাদা ক্ষুন্ন করে।

কুরআনে বর্নিত,

হে মু’মিনগণ! তোমরা ‘রা‘য়েনা ’ বলনা, বরং ‘উনযুরনা’ বল এবং শুনে নাও – অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে যন্ত্রনাময় শাস্তি। (সুরা বাকারাহ-১০৪)

‘রা’য়েনা’ শব্দটি আরবী ভাষায় নির্দেশসূচক শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে ‘আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন’। সাহাবাগণ এ শব্দটি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করত। কিন্তু এ শব্দটি ইয়াহুদীদের ভাষায় এক প্রকার গালি ছিল, যা দ্বারা বুঝা হতো (আমাদের রাখাল, বিবেকবিকৃত লোক)।

তারা এ শব্দটি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে উপহাসসূচক ব্যবহার করত। মুমিনরা এ ব্যাপারটি উপলব্ধি না করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শানে ব্যবহার করা শুরু করে, ফলে আল্লাহ তা’আলা এ ধরণের কথাবার্তা বলতে নিষেধ করে আয়াত নাযিল করেন।

অপর আয়াতে এসেছে –

ইয়াহুদীদের মধ্যে কিছু লোক কথাগুলো স্থানচ্যুত করে বিকৃত করে এবং বলে, “শুনলাম ও অমান্য করলাম” এবং শোনে না শোনার মত; আর নিজেদের জিহবা কুঞ্চিত করে এবং দ্বীনের প্রতি তাচ্ছিল্ল্য করে বলে, রাইনা। কিন্তু তারা যদি বলত, শুনলাম ও মান্য করলাম এবং শুনুন ও আমাদের প্রতি লক্ষ্য করুন, তবে তা তাদের জন্য ভাল ও সঙ্গত হত। কিন্তু তাদের কুফরীর জন্য আল্লাহ্‌ তাদেরকে লা’নত করেছেন। ফলে তাদের অল্প সংখ্যকই ঈমান আনে। (সুরা নিসা-৪৬)

যারা ইচ্ছেকৃত রসুলের (সা:) শানে বিকৃত শব্দ প্রয়োগ করে আল্লাহ তাদের অভিশপ্ত করেছেন আর ভুলবশত করলে তওবা করা উচিত।

আবু হুরাইরাহ্ ও আনাস্ (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন: রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন: ‘‘সে সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমাদের কেউ পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার নিজ মাতা-পিতা, ছেলে-সন্তান ও সকল মানুষ চেয়েও অধিক প্রিয় হই’’। (বুখারী)

যে শব্দ আমাদের নিজ পিতামাতার জন্য প্রয়োগ করা অপমানকর মনে করা হয়- সেই শব্দ রসুল (সা:) ও আহলে বায়াতের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা অপমানজনক নয় কি?

আহ সাহাবীরা কতটা সতর্কতা বজায় রাখতেন রসুলের (সা:) সাথে কথা বলার সময়।

আল্লাহ বলেন,

হে মু’মিনগণ! তোমরা নবীর আওয়াজের উপর তোমাদের আওয়াজ উচ্চ করো না। তোমরা নিজেরা পরস্পরে যেমন উচ্চ আওয়াজে কথা বল, তাঁর সঙ্গে সে রকম উচ্চ আওয়াজে কথা বলো না। তা করলে তোমাদের (যাবতীয়) কাজকর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে, আর তোমরা একটু টেরও পাবে না। (সুরা হুজুরাত -২)

ইবনু আবূ মুলায়কাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উত্তম দু’ ব্যক্তি- আবূ বাকর ও ‘উমার (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে কণ্ঠস্বর উঁচু করে ধ্বংস হওয়ার দ্বার প্রান্তে উপনীত হয়েছিলেন। যখন বানী তামীম গোত্রের একদল লোক নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসেছিল। তাদের একজন বানী মাজাশে গোত্রের আকরা ইবনু হাবিসকে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তাব করল এবং অপরজন অন্য জনের নাম প্রস্তাব করল। নাফি বলেন, এ লোকটির নাম আমার মনে নেই। তখন আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) ‘উমার (রাঃ)-কে বললেন, আপনার ইচ্ছে হলো কেবল আমার বিরোধিতা করা। তিনি বললেন, না, আপনার বিরোধিতা করার ইচ্ছে আমার নেই। এ ব্যাপারটি নিয়ে তাঁদের আওয়াজ উঁচু হয়ে গেল। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, ‘‘হে মু’মিনগণ! তোমরা নবীর গলার আওয়াজের উপর নিজেদের গলার আওয়াজ উঁচু করবে না’’…..শেষ পর্যন্ত।

ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর ‘উমার (রাঃ) এ তো আস্তে কথা বলতেন যে, দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস না করা পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা শুনতে পেতেন না। তিনি আবূ বাকর (রাঃ) সম্পর্কে এমন কথা বর্ণনা করেননি। [৪৩৬৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৮১)

বুখারী ৪৮৪৫

সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মসজিদে নাববীতে দাঁড়িয়েছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমার দিকে একটা কাঁকর নিক্ষেপ করলো। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, তিনি ‘উমার ইবনুল খাত্তাব (রাযি.)। তিনি বললেনঃ যাও, এ দু’জনকে আমার নিকট নিয়ে এস। আমি তাদের নিয়ে তাঁর নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা কারা? অথবা তিনি বললেনঃ তোমরা কোন স্থানের লোক? তারা বললোঃ আমরা তায়েফের অধিবাসী। তিনি বললেনঃ তোমরা যদি মদিনার লোক হতে, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের কঠোর শাস্তি দিতাম। তোমরা দু’জনে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মসজিদে উচ্চস্বরে কথা বলছো! (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৫৬)

বুখারী ৪৭০

যারা দীর্ঘ বছর আহলে বায়াতের ফজিলতের হাদীস বর্ণনা করা হতে বিরত থেকেছে এবং অনেকে তাদের শানে বিরূপ শব্দ প্রয়োগ করেছে। এটা জাহেলিয়াত নয় কি? এমন এক অবস্থা আহলে বায়াতের সাথে হাদীসে বর্ণিত (আ:) লাগানো হলে শিয়া বলে অপবাদ দেওয়া হয়।

আলী (রা:) ও আহলে বায়াতকে (রা:) আল্লাহ পবিত্র করেন এবং আলী (রা:) সবচেয়ে কম বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। রসুলের (সা:) সাহচর্যে উত্তম চরিত্রের অধিকারী হন। তার নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয় মদ পান করে সালাত পড়িয়েছেন।

আয়িশাহ্ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে বের হলেন। তার পরনে ছিল কালো নকশী দ্বারা আবৃত একটি পশমী চাদর। হাসান ইবনু আলী (রাযিঃ) এলেন, তিনি তাকে চাদরের ভেতর প্রবেশ করিয়ে নিলেন। হুসায়ন ইবনু আলী (রাযিঃ) এলেন, তিনিও চাদরের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়লেন। ফাতিমাহ (রাযিঃ) এলেন, তাকেও ভেতরে ঢুকিয়ে ফেললেন। তারপর ‘আলী (রাযিঃ) এলেন তাকেও ভেতরে ঢুকিয়ে নিলেন। তারপরে বললেনঃ “হে আহলে বায়ত আল্লাহ তা’আলা তোমাদের হতে অপবিত্রতাকে দূরীভূত করে তোমাদের পবিত্র করতে চান”- (সূরাহ আল আহযাব ৩৩ঃ ৩০। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬০৪৩, ইসলামিক সেন্টার ৬০৮০)

সহিহ মুসলিম -৬১৫৫ (সাহাবীদের ফজিলত অধ্যায়)

আলী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সে মহান সত্তার কসম! যিনি বীজ থেকে অঙ্কুরোদগম করেন এবং জীবকুল সৃষ্টি করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, মু’মিন ব্যক্তিই আমাকে ভালোবাসবে, আর মুনাফিক ব্যক্তি আমার সঙ্গে শক্রতা পোষণ করবে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪৪, ইসলামিক সেন্টারঃ ১৪৮)

সহিহ মুসলিম -১৪৩(ইমান অধ্যায়)

বরং মদ পান করার হাদীস আলী (রা:) বর্ণনা করেন-

আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ মদ হারাম হওয়ার পূর্বে আমাদেরকে এক আনসার দাওয়াত দিল। দাওয়াত শেষে আব্দুর রহমান ইবন আউফ এগিয়ে গিয়ে মাগরিবের সালাতের ইমামতি করলেন। তিনি সূরা আল-কাফেরুন তেলাওয়াত করতে গিয়ে এলোমেলো করে ফেললেন। ফলে এ আয়াত নাযিল হয় যাতে মদ খাওয়ার পর বিবেকের সুস্থতা না ফেরা পর্যন্ত সালাত আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে। [আল-আহাদীসুল মুখতারাহঃ ২/১৮৮ নং ৫৬৭, অনুরূপ ২/১৮৭ নং ৫৬৬; আবু দাউদঃ ৩৬৭১; তিরমিযী: ৩০২৬]

এই হাদীস নিয়ে ইখতেলাফ রয়েছে অনেকে সহীহ, ঈমাম তিরমিজি হাসান গারীব বলেছেন, আবার কেউ যঈফ বলেছেন।

সুরা নিসায় এসেছে,

হে মুমিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষন পর্যন্ত না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার এবং যদি তোমরা মুসাফির না হও তবে অপবিত্র অবস্থাতেও নয়, যতক্ষন পর্যন্ত না তোমরা গোসল কর। আর যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক বা তোমাদের কেউ শৌচস্থান থেকে আসে অথবা তোমরা নারী সম্ভোগ কর এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম কর সুতরাং মাসেহ কর তোমরা তোমাদের চেহারা ও হাত, নিশ্চয় আল্লাহ পাপ মোচনকারী, ক্ষমাশীল। (আয়াত -৪৩)

সকল প্রকার গণতান্ত্রিক কুফরী রাজনীতি হতে আমরা মুক্ত। সুতরাং পোস্টের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক কারণ নয় বরং সত্য স্পষ্ট করা যেন ফেতনামুক্ত হওয়া যায়! কোন আলেম বা ব্যক্তি রসুলের (সা:) ও ইসলামের ক্ষেত্রে বিরূপ শব্দ প্রয়োগ করলে মুমিনরা প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করবে স্বাভাবিক।

কিন্তু ক্ষমতাসীন শাসনব্যবস্থায় কেউ যদি রসুলের (সা) সম্মানে বিরূপ শব্দ প্রয়োগ করে তখন নিরবতা পালন করে ও তাকে দেশের মহান নেতা প্রচার করে প্রশংসা করা নেফাকী নয় কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *