বিতর্কিত যখন জনপ্রিয়

বিতর্কিত জিনিসের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও আসক্তি থাকে বেশি, এই আগ্রহ ও আসক্তি হতেই মানবচরিত্রের চরম অধঃপতনের সূচনা হয়। মানবজাতির সূচনায় আদম (আ:) এর নিষিদ্ধ ফল হতে শুরু করে মানুষ এখন নারী, নেশা এমনকি নিষিদ্ধ বইয়েও আসক্ত হয়ে পড়ছে।

কয়েকটি নিষিদ্ধ বই

উইলিয়াম টেইন্ডালের বাইবেল- অশ্লীতার কারণে প্রথম যে বইটি নিষিদ্ধ হয় তা হল খ্রিষ্টানদের বাইবেল। তৎকালীন ইংল্যান্ডের রাজার নির্দেশে এই বাইবেলের ছয় হাজার কপি পুড়িয়ে ফেলা হয়। কিন্তু মজার ব্যাপার হল সেই অনুদিত বাইবেলই সারাবিশ্বের মানুষ অনুসরণ করছে।

প্রজাপতি- সমরেশ বসুর প্রজাপতি অশ্লীলতার কারণে ১৮ বছর নিষিদ্ধ করা হয়। প্রসিদ্ধ লেখক বৃদ্ধদেব বসু আদালতে যুক্তি তুলেছিলেন- অশ্লীলতার কারণে প্রজাপতি নিষিদ্ধ হলে বাইবেল, মহাভারতকেও নিষিদ্ধ করা হোক। পরে এর উপর সকল আইনি বাধা উঠিয়ে নেয়া হয়।

ললিতা- ভ্লাদিমের নবকভের লেখা এই বইটি খোলাখুলি যৌণতার বিবরনের কারণে নিষিদ্ধ হয়। নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পর এটি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠে। আজ ভারত-বাংলায় কত নারীর নাম ললিতা যা কিনা যৌণতার সমার্থক শব্দ।

দ্য রামায়ান, অব্রে মেনন- অব্রে মেননের লেখা রামায়নের কাহিনী বিকৃত করার কারণে ভারত সরকার ১৯৫৬ সালে প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে বন্ধ করে দেয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি দেবদেবীকে মানবরূপে উপস্হাপন করেন অথচ রামায়নের কাহিনীকে বিকৃত করে উপস্হাপনকারী অরেকটি বই হল মাইকেল মধুসূদনের মেঘনাদবধ। যা আজ HSC পাঠ্যপুস্তকে স্হান পায়।

এর মূলবক্তব্য কৃত্তিবাসী ও বাল্মীকির রামায়ণ ও মহাভারতে রাম ও সীতার কাহিনীর বিপরীত। আর হিন্দুপন্ডিতদের মতে রাজশেখর বসুর অনুবাদ করা বাল্মীকির রামায়নটাই সবচেয়ে ভালো যার সারাংশও মেঘনাদবধের সাথে সাংঘর্ষিক। এই মহাকাব্যের কিছু অংশ পাঠ্যপুস্তকে স্হান দেওয়ার মাধ্যমে লাখো মুসলিমদের দেব, দেবীর নাম শিখতে বাধ্য করা হচ্ছে। আর ওদের চোখে রাবন ও মেঘনাদের মত খলনায়কদের নায়কে পরিণত করা হচ্ছে ও লিখতে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যদিকে তা হিন্দুদের ধর্মশাস্ত্র রামায়নের বিকৃত উপস্হাপন কিন্তু এ ব্যাপারে মুসলিম আলেমরাও চুপ হিন্দু পন্ডিতগণও নিরবতা পালন করছে।

জীবনানন্দ দাসের আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে- এই কবিতায় যে বক্তব্য পেশ করা হয়েছে তা বৌদ্ধ, হিন্দুদের জন্মান্তরবাদ অনুসারে। তাদের বিশ্বাস মৃত্যুর পর আবার আত্মা পৃথিবীতে ফিরে আসে। পাপের কারণে হয়তো অন্য প্রাণীর রূপে ফিরে আসতে পারে। অথচ মুমিনদের বিশ্বাস হল- পাপীর (কাফেরের) জন্য রয়েছে জাহান্নাম আর মুমিনের জন্য আল্লাহর উপহার জান্নাত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *