রাস্তাঘাট, পার্ক, দেওয়ালে দেওয়ালে এমনকি ফেসবুকে নেতার ছবি ও প্রশংসায় ব্যস্ত অনেকে। যতটা প্রশংসা ও তোষামোদি করা হয় সারাদিন তার অর্ধেক প্রশংসা আল্লাহরও করে না। নেতাকে ভালোবাসা ও অনুগত্যের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে অথচ এসব নেতারা আল্লাহ বিরোধী আইন কায়েম করেছে। প্রতিদিন সালাতে সূরা ফাতেহায় বলা হচ্ছে- সকল প্রশংসা জগতের প্রতিপালক আল্লাহর, ও তার আনুগত্য ও সাহায্য চাওয়ার স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে তাকে রব ও তার বিধানের অনুগত্যের স্বীকৃতি দিচ্ছে। তাহলে এক অন্তরে আল্লাহর বিধানের প্রতি অনুগত্যের শপথ আবার আল্লাহ বিরোধী আইন প্রতিষ্ঠাকারীদের প্রতি অনুগত্য কিভাবে হতে পারে? এটা কি শিরক নয়? আল্লাহকে যেভাবে ভালোবাসা, ভয় করা উচিত আজ অনেকে সেরূপভাবে নেতাকে ভালোবাসা, ভয় করে বা সম্পদ ও সম্মানের জন্য তাদের মিথ্যা প্রশংসা করে। অথচ সম্পদ, সম্মান, রিযিক, সকল প্রশংসার মালিক আল্লাহ হতে দূরে থাকে!! আল্লাহ বলেন- “আর কোনো লোক এমনও রয়েছে যারা আল্লাহকে রেখে অন্যান্যাকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালোবাসা পোষন করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা ঈমানদার তারা আল্লাহকে প্রচন্ড ভালোবাসে।” (সূরা বাকারাহ-১৬৫)। আবূ হুরাইরাহ (রা.) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “ধ্বংস হোক দিনারের গোলাম, দিরহামের গোলাম ও উত্তম পোশাকের গোলাম [অর্থাৎ দুনিয়ার প্রতি আসক্ত ব্যক্তি]! যদি তাকে তা দেওয়া হয়, তাহলে সে সন্তুষ্ট হয়। আর না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়।” (সহীহ আল-বুখারী, হাদীস ২৮৮৭)। যার নিয়ত হবে শুধু নেতৃত্ব লাভ, সুনাম-সুখ্যাতি অর্জন এবং ব্যক্তিস্বার্থসহ অন্যান্য বস্তু হাসিল করা, তার অবস্থাও অনুরূপ। তার উদ্দেশ্য হাসিল হলে খুশী হয়, উদ্দেশ্য হাসিল না হলে নারাজ হয়। এ ধরণের লোকই স্বীয় নফ্সের পূজা করে। মূলত সে অর্থের গোলাম। কেননা প্রকৃত গোলামী হচ্ছে অন্তরের গোলামী। যে বস্তু মানুষের অন্তরকে গোলাম বানিয়ে নেয়, উক্ত মানুষ প্রকৃত পক্ষেই সে বস্তুর গোলাম হয়ে যায় এবং সে ঐ বস্তুর দাসে পরিণত হয়। আল্লাহ বলেন, “যারা শুধু দুনিয়ার জীবন এবং এর চাকচিক্য কামনা করে, আমি তাদের সব কাজের প্রতিদান দুনিয়াতেই দিয়ে থাকি এবং তাতে তাদের প্রতি কিছুমাত্র কমতি করা হয় না। এরাই হল সেসব লোক আখেরাতে যাদের জন্য আগুন ছাড়া অন্য কিছু নেই। তারা এখানে যা কিছু করেছিল সবই বরবাদ হয়েছে; আর যা কিছু উপার্জন করেছিল, সবই বিনষ্ট হল।” (সূরা হুদঃ ১৫-১৬)। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, “যে কেউ ইহকাল কামনা করে, আমি সেসব লোককে যা ইচ্ছা দুনিয়াতেই দ্রুত দিয়ে দেই। অতঃপর তাদের জন্যে জাহান্নাম নির্ধারণ করি। ওরা তাতে নিন্দিত-বিতাড়িত অবস্থায় প্রবেশ করবে”। (সূরা বানী ইসরায়েল, ১৮)।