পাগল ও ক্ষুধার্তের জন্য ইসলামের বিধান

এমনও যুগ ছিল মুসলিমরা প্রতিটা ক্ষেত্রে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা বিচার চাইতো। আজ ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে শান্তি বিনষ্ট হবে, উগ্রবাদ ছড়াবে বলা লোকগুলো নিজেরাই বিচারক হয়ে গেছে! যে যার আইন কার্যকর করছে।

সামান্য ভাতের জন্য ক্ষুধার্ত, অসুস্থকে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে আর তারাই ইসলামকে উগ্রবাদ প্রচার করে, আসলে ওরাই প্রকৃত উগ্রবাদী।

নিজেরা বড় পাপ করে তওবা করে না, ক্ষমতাসীনদের অন্যায়ে চুপ থাকে, তোষামোদ করে কিন্তু নিরীহদের সামান্য ভুল হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করে। কেউ ক্ষুধার জ্বালায় সামান্য খাদ্য যদি চুরি করে খায় তার জন্য এত বড় সাজা দেওয়া হয় – চিন্তা করেছেন তারা যে অবিরত জেনা, শির্ক করছে!

ইসলাম অনুযায়ী তার শাস্তি কি?

কোন মুসলিম ভাই যদি আপনাদের উপর তা প্রয়োগ করে তখন উগ্রবাদী বলবেন! ইসলাম আগে রাষ্ট্রে কুরআনের শাসন কায়েম করে তারপর শাস্তির বিধান। কারন ইসলামী রাষ্ট্রে বেপর্দা নারী, পতিতালয়, নেশাদ্রব্য থাকবে না তাই অপরাধ করাও সহজ নয়। তারপরও যদি কেউ অপরাধ করে ন্যায়বিচার, শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বিচার করা হয়।

আর ইসলামে ক্ষুধার্তকে পরিপূর্ণ খাবার অধিকার দেওয়া হতো। ক্ষুধার কারনে কেউ চুরি করলে এই রাষ্ট্রের শাসক ও ধনীরা সমালোচিত হতো। আল্লাহর আযাবের ভয়ে ফানাহ চাইতো। যাকাত, দান-সদকার ব্যবস্থা করতো।

আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। জনৈকা মাখযুমী মহিলার চুরি সংক্রান্ত অপরাধ কুরাইশদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তুললে তারা বললো, এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে কে আলোচনা করবে? তারা বললো, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রিয় পাত্র উসামা ইবনু যায়িদই এ প্রসঙ্গে কথা বলতে সাহস করতে পারে।

অতঃপর উসামা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট একথা বলাতে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ হে উসামা! তুমি কি মহান আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি মওকুফের সুপারিশ করছো? অতঃপর তিনি ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে বলেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির এজন্য ধ্বংস হয়েছে যে, তাদের মধ্যকার মর্যাদাশীল কেউ চুরি করলে তারা তাকে ছেড়ে দিতো, আর তাদের দুর্বল কেউ চুরি করলে তার উপর শাস্তি বাস্তবায়িত করতো। আমি আমার আল্লাহর কসম করে বলছি! মুহাম্মাদের কন্যা ফাতিমাহও যদি চুরি করতো, তাহলে অবশ্যই আমি তার হাত কাটতাম। (আবুদাউদ ৪৩৭৩, বুখারী, মুসলিম)

আজ তাই হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা বড় পাপ করলেও চুপ আর সামান্য অপরাধে বিরাট শাস্তি দেওয়া হয় নিরীহদের।

অন্যদিকে পাগলের উপর শাস্তি হয় না যতক্ষণ সুস্থ না হয়। ইসলামী রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলদের কর্তব্য তার সুস্থতার ব্যবস্থা করা।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তিন ধরনের লোকের উপর হতে কলম তুলে রাখা হয়েছে: (১) ঘুমন্ত ব্যাক্তি, যতক্ষন না জাগ্রত হয় (২) নাবালেগ, যতক্ষন না সাবালেগ হয় এবং (৩) পাগল, যতক্ষন না জ্ঞানসম্পন্ন হয়। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন ,ইবনু জুরাইজ পর্যায়ক্রমে ক্বাসমম ইবনু ইয়াযীদ হতে ‘আলি (রাঃ) থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এর সূত্রে এ হাদীস বর্ণনা করেন, তাতে ‘বার্ধক্যজনিত কারনে নিস্তেজ বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যাক্তি’ কথাটুকু রয়েছে। (আবুদাউদ)

আর চুরির অপরাধে হাত কাটা হয় নির্দিষ্ট পরিমান সম্পদের উপরে যা হাদীস অনুযায়ী একটা ঢালের দাম। ক্ষুধার্ত চুরি করলে তার উপর এই শাস্তি অর্পিত হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *