আমাদের জীবনে অনেক জিনিসই আমরা সহজে পেয়ে যাই আবার কিছু জিনিস আমাদের কাছে সহজ মনে হলেও তার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়!! তখন মনে প্রশ্ন জাগে এমন কেন হয়। আসলে এটাই আল্লাহর হিকমত ও উত্তম পরিকল্পনা। আল্লাহপাক রসুল (সাঃ) কে মেরাজে নিয়েছিলেন, যা মানুষের সাধ্যতীত কল্পনার বাহিরে কত নিরাপদ, সুন্দর ও সুমর্যাদাপূর্ন সেই মেরাজ ও ইসরার সফর। অথচ সেই রসুল (সাঃ) কে মক্কা হতে মদিনায় হিজরত করতে হলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। সাওরে গুহায় যখন লুকিয়ে ছিলেন শত্রুদল খুব কাছেই ছিলো তখন আবুবকর (রাঃ) কে আশ্বাস দিলেন আল্লাহ আছেন তাদের সাথে। আচ্ছা মেরাজ ও ইসরায় যাওয়ার পথটা কঠিন ছিলো নাকি মক্কা হতে মদীনা যাওয়ার!?কারণ মেরাজ ও ইসরা ছিল রসুলের (সাঃ) জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে উপহার পক্ষান্তরে হিজরত ছিল উম্মতের জন্য অনুসরণীয়। কেননা মানুষ চাইলেই মেরাজ ও ইসরায় যেতে পারবে না কিন্তু কেয়ামত পর্যন্ত হিজরত রয়েছে। মেরাজ ও ইসরায় রসুল (সাঃ) আল্লাহর সাথে কথা বলেছেন, সিদরাতুল মুনতাহা ও জান্নাতের নেয়ামত দেখেছেন আর হিজরত পরবর্তী ও রসুলের সারাজীবন ছিলো আল্লাহর সাক্ষাৎ ও জান্নাত লাভের পথ। তেমনি আমরা না চাইতেও আল্লাহ আমাদের সুস্হদেহ ও বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন মন দিয়েছেন। যদি আল্লাহ কাউকে জন্মান্ধ বা পঙ্গু করেন কেউ তাকে সুস্থ করতে পারে না। তাই আল্লাহর এই রহমত আমরা অতি সহজে পেয়ে মূল্যায়ন করি না। এই সুস্থ দেহ, মন নিয়ে কঠিন সংগ্রামে লিপ্ত হতে দেয়, হারামকে ত্যাগ করে হালাল ও সরল পথে চলে জান্নাত নিশ্চিত করতে হয়। আমাদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো আল্লাহর রহমত, তা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য পালনীয় নয় বরং পালনীয় হলো আমাদের সৎ কর্মগুলো। আল্লাহ জান্নাতে অসংখ্য নেয়ামত রেখেছেন অথচ তিনি অনেক সময় দুনিয়ার জীবনে সামান্য রিজিক কঠিন করে দেন। তার কারণ দুনিয়ার জীবন উপভোগের নয় বরং জান্নাত পাওয়ার পরীক্ষা। আর ক্ষুধা, দারিদ্র্যতা, প্রাণনাশের ভয়, সন্তান, স্ত্রী, পিতা-মাতা, ব্যবসার লাভ-ক্ষতি, আশ্রয়, প্রিয় বস্ত সবকিছুই সেই পরীক্ষার অংশ। (সুরা বাকারাহ-১৫৫, সুরা মুলুক-২, সুরা তওবা-২৪)। তাই জীবনে কিছু জিনিস সহজে পাবেন তা আল্লাহর রহমত, আর কিছু জিনিস পেতে কষ্ট হবে তা আল্লাহর তরফ হতে মর্যাদা বৃদ্ধির পরীক্ষা, অথবা পাপ হতে মুক্তি লাভের উসিলা। হতাশ না হয়ে যেকোন পরিস্থিতিতে খুশি মনে মেনে নেওয়াই উত্তম।