চাদাবাজদের রুখতে হবে!

কিছু জালেমের পতন ঘটলে তা হতে শিক্ষা না নিয়ে নতুনরা জালেমের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। বারবার ক্ষমতার পতন ঘটে, জনগনের নিরাপত্তা কি মিলে? খুন, চাদাবাজী, হত্যা, ধর্ষন সবই চলমান শুধু লোকজন ও দল ভিন্ন। কারণ জুলুমের আইন একই থাকে, আর এই আইনে নিকৃষ্ট মুনাফেক, মুরতাদরা বারবার শাসনক্ষমতা পায়।

এসকল দল, নেতা, চাদাবাজরা আসলে কাকে ইলাহ মানে এক আল্লাহ! না দুনিয়ার তাগুত, নফস ও অর্থ সমৃদ্ধিকে। মুজাহিদ যেরকম ময়দানে তাকবীর ধ্বনি দিয়ে আল্লাহর দ্বীনের প্রশংসা ও বিজয় কামনা ও প্রচার করে। ওরা সেরকম প্রকাশ্যে চাদার জন্য মানুষকে পিটিয়ে মেরে নিজেদের দল, নেতার নামে স্লোগান দেয়। ওরা আল্লাহর দ্বীনকে ছুড়ে ফেলে নেতার দ্বীনের (নিয়মনীতি, নির্দেশ ) আনুগত্য করে চলছে। মুজাহিদ যেমন ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালায় ওরা তেমনি নিজেদের দল, নেতার ক্ষমতার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যায়।

মুমিন যেরকম ইসলামের বিপরীত, বিরোধী মতবাদকে ঘৃনা করে। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য এসকল মতবাদের অনুসারীদের সাথে লড়াই করতে সদা সচেষ্ট থাকে। ওরা তেমনি ওদের দ্বীন আদর্শ, তাগুতী নেতার বিরোধী প্রতিটি প্রচার, বিরোধিতাকারীকে (তা চাদা ও জুুলুমের বিরোধিতা হোক) শত্রু ভাবে। তাদের প্রতিরোধ করতে পাশবিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

তাদের রাষ্ট্রীয় আদর্শ নেতা তাগুতী নেতা আর মুমিনদের আর্দশ নেতা রসুল (সা:)। তাদের লক্ষ্য থাকে তাদের দলকে ক্ষমতায় বসানো যেকোন মূল্যে যেন তাদের পাপগুলো বৈধ রুপ পায়। তারপর কি বলবেন- তারা মুমিনদের মত একই পথের অনুসারী।

কুরআনে বর্নিত হয়েছে-

যারা বিশ্বাসী তারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে এবং যারা অবিশ্বাসী তারা তাগূতের পথে সংগ্রাম করে। সুতরাং তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম কর। নিশ্চয় শয়তানের কৌশল দুর্বল (সুরা নিসা-৭৬)

মুমিন নিজ জানমাল দিয়ে ইসলাম কায়েম করতে চায়। আর ওরা ওদের দুনিয়ার সমৃদ্ধির জন্য ওদের নেতা বা দলকে ক্ষমতায় বসাতে চায়। ওরা মূলত দুনিয়ার লোভ, অর্থকে রবে পরিণত করেছে।

আবু হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ধ্বংস হোক দীনারের গোলাম, দিরহামের গোলাম ও উত্তম পোশাক-আশাক ও উত্তম চাদরের গোলাম (দুনিয়াদার)! যদি তাকে দেওয়া হয়, তাহলে সে সন্তুষ্ট হয়। আর না দেওয়া হলে অসন্তুষ্ট হয়।’ [বুখারি ২৮৮৭, ৭৪৩৫, তিরমিযি ২৫৭৫, ইবন মাজাহ ৪১৩৬]

কেউই দীনার, দিরহাম, উত্তম পোশাকের সরাসরি পূজা করে না। কিন্তু এসকল জিনিস হাসিল করতে ইসলামের নিয়মনীতি ছেড়ে নিজের অন্তরের খেয়ালখুশির অনুসরণ করে। আজকের চাদাবাজদের দেখবেন চাদা পেলে খুশি হয় আর না ফেলে জুলুম, নির্যাতন, হত্যা চালায় তাদের তাগুতী নেতার নির্দেশে।

ওদের রুখতে হবে তার জন্য ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রয়োজন। যদি প্রকাশ্যে একজনকেও ইসলাম অনুযায়ী বিচার করা যেত ওদের হুংকার, বীরত্ব নামক পাশবিকতার ইচ্ছে পালিয়ে যেত।

হাজার হাজার মানুষের সামনে ঘটনা ঘটে আমরা প্রতিবাদের সাহস ও সংঘবদ্ধ হতে পারি না। আবার আমরা স্লোগান দিই ও স্বপ্ন দেখি- আমরা ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করবো। যে সাহস পাথর, লাঠি, দেশীয় অস্ত্রের মোকাবিলা করতে অক্ষম সেই সাহস নিয়ে স্বপ্ন দেখেন মিসাইল, ক্ষুধা, রক্ত বিভীষিকা মেকাবিলা করে ফিলিস্তিনের বিজয়ের। জিহাদ কি বুঝতে হবে- দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিটি সশস্ত্র সংগ্রামই জিহাদ।

নিয়ত পরিশুদ্ধ রেখে প্রতিটি অনৈইসলামিক কর্মকাণ্ড, জুলুম প্রতিরোধ করাই জেহাদ। এর এজন্য মরলে শহীদ। আর উত্তম জিহাদ হচ্ছে জালেম শাসকের বিরুদ্ধে সত্য বলা। নবীরা যা করেছেন, তারা জালেম শাসকের শির্ক, কুফরী শাসনব্যবস্থা ও জুলুমের প্রতিবাদ করতেন। অনেকে শহীদ হয়েছেন।

আমাদের সেই পথে এগোতে হবে। জালেম, তাগুতের অনুসারীদের রুখতে হবে প্রতিটা এলাকা হতে। সেজন্য প্রয়োজন পরিশুদ্ধ ইসলামের অনুসরন ও মুজাহিদের মত সাহসীকতার।

প্রকৃত বীর সেই যে জীবন দিয়ে (শহীদ হয়ে) হাজার মানুষকে অনুপ্রেরণা জাগায় তার মতো ইসলামের পথে জুলুম রুখতে শহীদ হতে। আর সবচেয়ে বড় জুলুম শির্ক আর সবচেয়ে বড় জালেম হচ্ছে তাগুত। যারা এসব আইন চাপিয়ে দেয়, প্রতিনিধিত্ব করে, বিচার ফায়সালা করে, এসকল আইন রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তার জন্য তারা মুমিনদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *