পাঁচ বছর পূর্বের কথা, কিছু ছোট ভাইকে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাওয়াহ দিলাম। তারা মানলো এটা হারাম – তবুও বললো এই বিষয়ে আলেমদের বক্তব্য চাই। তখন আহলে হাদীস, দেওবন্দী কয়েকজন আলেমের বক্তব্য দিলাম। তারা বুঝলো ও মেনে নিল।
একজন আলেম বলেছিল- হিন্দু মুসলিম যে কথা, গণতান্ত্রিক মুসলিম সে কথা। তার কারাগারে যাওয়ায় চোখের জল ঝরেছিল। আজ তিনি গণতন্ত্রের নেতা। এছাড়া অনেক আলেমই গণতন্ত্রকে কুফরী ঘোষণা করে।অনেকে গণতন্ত্রকারীদের তাকফীরও করে। অনেককে তাদের বক্তব্য শোনাতাম।
বেশ কিছুদিন পর ছোট ভাইয়েরা বলল, এলাকায় ওয়াজ চলছে- গণতন্ত্রবিরোধী বিশিষ্ট আলেম এসেছে, তার সাথে ওয়াজে প্রধান বক্তা এসেছে অমুক আল্লামা যিনি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সমর্থক ও নেতা।
গণতন্ত্র যদি হারামই হয় একই স্টেজে দুরকম বক্তা অথচ দুজনই একই মাযহাবের দাবিদার। আকীদা ভিন্ন রেখে মাযহাব এক। আবার গণতন্ত্রবিরোধী বক্তা গণতান্ত্রিক আলেমকে আল্লামা, হাফি সহ মহান আলেম ও নেতা হিসাবে ঘোষিত করেন।
ছোট ভাইদের প্রশ্ন ছিল- গণতন্ত্র হারাম হলে আলেম, জাহেল সবার জন্য হারাম। ওরা সাধারণ মানুষকে গণতন্ত্রের জন্য তাকফীর করে আবার গণতন্ত্র রাজনীতি করা আলেমকে হাফি, আল্লামা, রহি: লাগায়। এটা মানলে যদি কুফরী হয় তাহলে সবার জন্য কুফরী। আর এটা জায়েজ হলে সবার জন্য জায়েজ। অথচ আলেমদের হতে শিখে বহু যুবক গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বলে আজও কারাগারে আছে।
আসলে আপনারা বছরের পর বছর তারাবীহর সালাত, আমিন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। গণতন্ত্রের মত বিষয় নিয়ে আপনারা পরস্পর আলোচনা করে ফাতোয়া দিন। এটা যদি কুফর, শির্ক হয় তাহলে গণতন্ত্র মানা আলেম কিভাবে আপনাদের কাছে প্রিয় রাহবার, মহান বীর হতে পারে? জেনেশুনে কুফরী আকীদার লোকদের মুসলিমদের মহান নেতা বললে আপনারা মুসলিম থাকবেন কি?
কোন ব্যক্তি হিন্দু, ইহুদিদের কুফর জানা সত্বেও মুসলিম বললে সে কি মুসলিম থাকে!? অথচ গণতন্ত্র মানার কারণে সাধারণ মানুষকে আপনারা তাকফীর করেন। যাদের অনেকের কাছে এর কুফরীর স্পষ্ট দাওয়াহ যায়নি।
একই স্টেজে আপনারা উভয়ই বক্তব্য দেন, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বজায় রাখেন। তাহলে উম্মত কিভাবে দিকনির্দেশনা পাবে?