কঠোর নীতি ও নরম নীতি!

দুনিয়ার জীবন মুমিনের জন্য কারাগার স্বরূপ। একটা কারাগারে মানুষ মুক্তির অপেক্ষায় থাকে কখন প্রিয় মানুষের সাথে সাক্ষাৎ হবে। তেমনি মুমিন দুনিয়ার জীবনে আল্লাহর সাক্ষাতের আশা নিয়ে বহু কষ্ট, দুঃখে আমল করে কাটায়।

যখন একজন নিরাপরাধ দ্বীনদার মানুষকে মিথ্যা অপবাদে ফাসিয়ে কারাগারে অপরাধীদের সাথে রাখা হয়- নিরাপরাধ মানুষটি চারপাশে তাকিয়ে দেখে খুনের আসামী, ধর্ষনের আসামী, কোথাও নেশাগ্রস্ত, কেউ সন্ত্রাসী। তখন সে ভয় পায় ঈমান ও আমল কিভাবে রক্ষা করবে। ক্ষনে ক্ষনে সালাতের সময় নিয়ে ভাবে, সময় মতো সালাত পড়ার চেষ্টা করে।

দুর্নীতি, ঘুষ, মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ আসামী চিন্তা করে- তাকে যারা পাহারা দিচ্ছে তারাই ঘুষ, দুর্নীতিতে লিপ্ত। ঘুষের টাকায় সিগারেটসহ বহুকিছু পাওয়া যায় কারাগারে। দ্বীনদার ব্যক্তির জামিনের কার্যক্রম করানোর জন্য হয়তো উকিল আসে- তাকে পরামর্শ দেয় মিথ্যা বললে হয়তো জামিন মিলবে! সে ভাবে আমাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে – সত্য দ্বীন প্রচার করার জন্য আর মিথ্যা বললে নাকি মুক্তি মিলবে।

তাদের বক্তব্য – ওয়াজ হতে ফিরে আসতে হবে। এই ধরনের বক্তব্য আর দিবে না। কেউ গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বললে তাকে ইসলামী নামধারী দলে যোগ দিয়ে বা সমর্থন করে প্রমান করতে হবে আগের মতবাদ ভুল ছিল বা অতি কঠোর ছিল।

কারণ জালেমরা জানে গণতন্ত্র দ্বারা ইসলাম কায়েম হবে না এটা ধোঁকা, ফলে তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য হবে।

অনেকে মেনে নিয়ে মুক্তি পায়। আর যাদের ঈমান পরিপূর্ণ তারা ভাবে কোন আইনে আমার বিচার করবে – আল্লাহ তো সত্য দ্বীন প্রচার করার জন্য পুরষ্কৃত করেন, জাহান্নাম হতে মুক্তি দিন। আর ওরা সত্য বললে শাস্তি দেয় তাহলে কি তারা আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছে না? কারাগার তার কাছে প্রিয় লাগে জালেমের নিকট নত হওয়া হতে। অন্যদিকে মুক্তিপ্রাপ্তদের জানিয়ে দেওয়া হয়- কি কি বলতে পারবে ও ওয়াজে কি কি বলতে মানা।

ইসরায়েল, ভারত, বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে যতখুশি ওয়াজ করুন সমস্যা নেই। কিন্তু নিজদেশের কুফর, শির্ক, তাগুতী আইন নিয়ে কথা বললে আবারও বিপদ, কারাদন্ড হতে পারে। এজন্য দেখা যায়- আফগান, শাম নিয়ে জ্বালাময়ী বক্তব্য দিলেও নিজ দেশের ক্ষমতাসীনরা রসুল (সা:), তার স্ত্রীদের নিয়ে উপহাস করলেও বেশিরভাগই নিরব থাকে!

আল্লাহর ভয়ের চেয়ে বান্দার ভয় বেশি যেন না হয়ে যায়!
সাবধান হোন। আল্লাহ আগে হিসাব নিবেন – আমাদের চারপাশে কতটুকু দ্বীন প্রতিষ্ঠা করেছি অথবা দ্বীনের জন্য কতটুকু লড়েছি।

মৃত হায়েনায় লাথি মারা বীরত্ব নয়, জীবিত হায়েনাদের সাথে লড়াই করাই বীরত্ব। শুধু সাবেক ক্ষমতাসীনদের জুলুম, ইসলাম নিয়ে উপহাস বর্ণনা করে প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন জালেমদের বিরোধিতা প্রয়োজন।

আবার তারাও তাবলীগ ইস্যুতে সমাধানে না এসে কঠোর অবস্থানে পরস্পরের রক্ত ঝরানোর বক্তব্য দিচ্ছে। তাগুত, নাস্তিক, কাফেরের ক্ষেত্রে নরমনীতি আবার নিজেদের ভাইদের সাথে মারামারির প্রস্তুতি! আপনাদের মতেই তো এটা খারেজীর নীতি। নাস্তিকদের সাথে টকশো, আলোচনা অনুষ্ঠান করা যাবে, তাগুতের প্রশংসা করবে অথচ তাবলীগের ক্ষেত্রে আলোচনা নয় প্রতিরোধের হুমকি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *