ঈমান কি শুধু মুখে

আমরা সবাই নিজেকে মুসলিম ও ঈমানদার ভাবি অথচ আমাদের জীবনের সাথে রসুল (সা) ও সাহাবীদের জীবনীর কোন মিলই নেই। তারা ঈমান আনার সাথে সাথে তাদের উপর চরম নির্যাতন শুরু হয় আর আমরা আরামে দিন কাটাচ্ছি। এর মূল কারণ আমরা কালেমার অর্থই বুঝিনি। কালেমা ও ঈমান আনার মূল শর্ত হল তাগুতসহ সকল শিরককে বর্জন করা, তার বিরোধিতা করা। আল্লাহ বলেন- “অবশ্যই আমি প্রত্যেক জাতির নিকট রসুল প্রেরণ করেছি, এই প্রত্যাদেশ দিয়ে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত থেকে দূরে থাক।” (সুরা নাহল-৩৬)। আল্লাহ ছাড়া সকল বিধানদাতা তাগুত, আর আল্লাহর মত করে কাউকে ভালোবাসলে/ ভয় করাও শিরক। আসলেই আমরা আল্লাহকে কতটুকু ভয় করি, কতটুকু ভালোবাসি?! যে যুবক নিয়মিত ট্রাফিক আইন মেনে চলে শাস্তি, জরিমানা ও ক্যামেরার ভয়ে অথচ সেই আল্লাহ ভীতি ও জাহান্নামের কথা ভুলে প্রতিনিয়ত পাপ করে চলছে। অথচ আল্লাহ সবকিছু দেখছেন। প্রায় দেখি কেউ উপহাস, গালি, মন্দ কথা শুনলে তার মন ভীষন বিষন্ন হয়। অনেকে খুব রেগে যায়। অথচ যখন আল্লাহর বিধান পরিবর্তন ও উপহাস করা হয়, রসুলকে (সাঃ) গালি দেওয়া হয় তখন কি আমাদের মনে ততটুকু কষ্ট লাগে। প্রায় ভাবি একটা হুদহুদ পাখির সমপরিমাণ ঈমান ও ভালোবাসা আল্লাহর প্রতি আমাদের নেই। আল্লাহর সাথে শিরক সে মেনে নিতে পারেনি, সে সাবার রানী ও তার জাতিকে শিরকে লিপ্ত হতে দেখে সোলাইমানকে (আঃ) তথ্য জানিয়েছিল যেন সোলাইমান (আঃ) তাদের বিপক্ষে কঠোর ব্যবস্হা নেন। সে বলেছিল- “আমি সাবা থেকে নিশ্চিত সংবাদ নিয়ে আগমন করেছি। আমি এক নারীকে সাবাবাসীর উপর রাজত্ব করতে দেখেছি। তাকে সবকিছুই দেওয়া হয়েছে তার একটা বিরাট সিংহাসন আছে। আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সিজদাহ্ করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যাবলী সুশোভিত করে দিয়েছে। অতঃপর তাদের সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে ।অতএব তারা সৎ পথ পায় না।” (সুরা নামল- ২১-২৪)। আসহাবে কাহাফের কুকুরটাও আমার চেয়ে বিচক্ষণ। সে শিরক ও মুশরিকদের সঙ্গত্যাগ করে মুমিন যুবকদের সাথে গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলো। কত লেকচার, কত ইতিহাস জেনেও আমাদের নড়বড়ে ঈমান অথচ মুসা (আঃ) এর যুগের জাদুকররা ও আসহাবে উখদুদের লোকগুলো ঈমান আনার সাথে সাথে জীবন দিতে প্রস্তুত হয়ে গেছেন কোন শাস্তিকে ভয় না করে। এমনকি আসহাবে উখদুদের মানুষগুলো জ্বলন্ত আগুনে লাফ দেন তবুও ঈমানের সাথে আপোষ করেননি। তাদের ওহীর জ্ঞানও তেমন ছিল না। না আমাদের মত পূর্নাঙ্গ কিতাব ছিল। প্রকৃতপক্ষে আমাদের ঈমান অন্তরে খুবই কম, মুখেই প্রকাশ করি বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *