ঈদ উৎসব নাকি ইবাদত পর্ব-২

সালাত আদায় ফরজ। কুরবানী যেভাবে আগ্রহ, আনন্দের সহিত পালন করা হয়। সালাত যদি এতটা আগ্রহ, আনন্দের সহিত পড়া হতো তাহলে চরিত্রই বদলে যেত। সালাতহীন কুরবানী ঈমানবিহীন আমলের মত।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুমিন ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হলো নামাজ ত্যাগ করা।’ (মুসলিম)। অন্য বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ঘোষণা করেন, ‘আমাদের ও তাদের মধ্যে পার্থক্য হল- নামাজ। যে তা পরিত্যাগ করল সে কাফের হয়ে গেল।’ (মুসনাদে আহামদ)।

হযরত বুরায়দা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আমাদের ও তাদের (মুনাফিকদের) মধ্যে যে অঙ্গীকার (পার্থক্য) আছে, তা হচ্ছে সালাত। সুতরাং যে সালাত পরিত্যাগ করল, সে প্রকাশ্যে কুফরি করল। (মুসনাদে আহমদ, জামে আত-তিরমিযী, আন-নাসায়ী, আবু দাঊদ ও ইবনে মাজাহ)।

হযরত উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে ব্যক্তি নামায ছেড়ে দিল ইসলামে তার কোনো অংশ নেই। ইমাম আহমাদ (রহ.) মত প্রকাশ করেন, একজন লোক নামায অস্বীকার না করলেও কেবল নামায পরিত্যাগ করলেই কুফরির অন্তর্ভুক্ত হবে। তিনি নিম্নোক্ত হাদীসটিকে দলীল হিসেবে গ্রহণ করেন। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : সর্বপ্রথম তোমরা দ্বীনের যা হারাবে তা হলো আমানত এবং সর্বশেষ দ্বীনের যা হারাবে তা হলো সালাত। (শু‘য়াবুল ঈমান, সুনানে বায়হাকী)

এখানে সালাত ছেড়ে দেওয়া বলতে ইচ্ছেকৃতভাবে সালাত আদায় না করাকে বুঝানো হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত ঘুম হতে দেরিতে উঠার কারণে, বা আযান শুনতে না পাওয়া, ওয়াক্ত ভুলে যাওয়ায় সালাত বাদ পড়লে কাউকে কাফের ভাবা যাবে না।

অনেকে দেখি কুরবানির গরুর হাটে যেতে আগ্রহী, গরু নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সবাই কাটায় কিন্তু মসজিদ, সালাতে আগ্রহ বা আনন্দ আসে না।

একটু চিন্তা করুন, ধরুন আপনার বহু অর্থে কেনা শখের কুরবানী পশুটি কুরবানীর ঠিক পূর্ব মুহূর্তে হারিয়ে গেল বা মারা গেল। আপনি যতটা কষ্ট পাবেন ততটা কি এক ওয়াক্ত সালাত না আদায় করলে পান!? যদি না পান তাহলে আপনি ঈমানের স্বাদ পাননি! আপনি কুরবানী উৎসব হিসেবে পালন করছেন শুধু, ইবাদত হিসেবে নয়।

আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ “(কিয়ামতের ময়দানে) বান্দার সর্বপ্রথম যে আমলের হিসাব নেয়া হবে তা হল এই নামায। উহা যদি বিশুদ্ধ হয়ে যায় তবে সে মুক্তি পেয়ে গেল ও সফল হল। আর উহা যদি বিনষ্ট বা বরবাদ হয়ে যায়, তবে সে ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেল।” (তিরমিযী, নাসাঈ, আবু দাঊদ ও ইবনু মাজাহ্)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *