যেভাবে ইসলামিক মদ,ইসলামিক সুদ বলে কিছু হয়না একইভাবে ইসলামি গনতন্ত্র বলে কিছু নেই। কিছু লোক গনতন্ত্রের শিরকি উৎসব নির্বাচনকে ইসলামের শূরার সাথে তুলনা করে।অথচ শূরার সাথে নির্বাচনের দূর দূর পর্যন্ত কোনো সম্পর্ক নেই।
শুধুমাত্র পরাজিত মানসিকতার কিংবা পশ্চিমা সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত লোকেরাই ইসলামের পবিত্র বিধানগুলোকে এভাবে বিকৃত করে।কারণ তারা প্রকৃত ইসলামকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে লজ্জা ও সংশয় অনুভব করে।
গণতন্ত্র কি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক?
ধরুন কোন ব্যক্তি নিয়ত করলো যে পিতামাতা/অভিভাবক ও এলাকাবাসী যদি বাঁধা না দেয় ও রাজি থাকে সে সালাত, যাকাত ও সিয়াম রাখবে আর যদি বাঁধা দেয় তাহলে বিরত থাকবে। অথবা কোন ব্যক্তি স্ত্রী রাজি থাকলে হজ্ব, যাকাত দিবে ও দাঁড়ি রাখবে আপত্তি করলে পালন করবে না, তার ইবাদত কি কবুল হওয়ার যোগ্য? অথচ ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি, কেউ পক্ষে থাকুক ও বিরোধিতা করুক পালন করতে হবে।
এইক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে বান্দার সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি একত্রিত করলো। সে সামান্য বান্দার বাধায় ও অখুশিতে যদি দ্বীন পালন ছেড়ে দেয় তাহলে আল্লাহর ভয়ের চেয়ে বান্দার ভয় বড় হয়ে গেল, জাহান্নামের ভয়ের চেয়ে দুনিয়ার ভীতি বড় করে ফেললো। তেমনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার মূল্য উদ্দেশ্য হবে – আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন যার বিনিময়ে আল্লাহ জান্নাতে নেয়ামত দিবেন। কিন্তু জনগণ/সংসদ সদস্য রাজি থাকলে ইসলামী আইন চালু করবে আর বিরোধিতা করলে আপাতত স্থগিত। সেক্ষেত্রে ইবাদতের উদ্দেশ্য পরিবর্তন নয় কি- আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে বান্দার সন্তুষ্টি জড়িত হয়ে গেল। বরং আল্লাহর নির্দেশের চেয়ে, বান্দার ইচ্ছে ও নির্দেশ বড় হয়ে যায়। জনগণ সন্তুষ্ট না থাকলে আল্লাহর আইন কার্যকর হবে না, সেই কারণে যদিও আল্লাহ অসন্তুষ্ট হয় হোক?
আবার কোন ব্যক্তি নিয়ত করলো সালাত পড়বে ঠিকই তবে রসুলের (সা:) নির্দেশমত ওয়াক্তে নয়, বরং তার ইচ্ছেমত (সূর্য উঠা ও সূর্য ডুবার সময়) সেই কি সালাতের সওয়াব পাবে নাকি গোনাহগার হবে? অথবা কোন ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নিলো রমাদানে রাতে উপোস থাকবে, দিনে আহার করবে। এটা কি সিয়াম হিসেবে কবুল হবে কি!? এগুলো এজন্যই কবুল হবে না- কারণ সে রসুলের (সা:) সুন্নাহ বাদ দিয়ে নিজের খেয়ালখুশির অনুসরণ করলো। এই ইবাদত কবুলযোগ্য নয় বরং বিদআত, কুফরী। কারণ সে জেনেশুনে রসুলের (সা:) সুন্নাহে পরিবর্তন আনলো।
পবিত্র কোরআনে এসেছে,
আমি তাকে বললাম, ‘হে দাঊদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি, অতএব তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না, করলে এ তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ পরিত্যাগ করে, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি, কারণ তারা বিচার দিনকে ভুলে থাকে।’ (সুরা সোয়াদ-২৬)
তেমনি কেউ যদি রসুলের (সা:) সুন্নাহ বাদ দিয়ে আব্রাহাম লিংকন, কার্ল মার্কসের পদ্ধতি অনুসরণ করে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলে, স্বপ্ন দেখায়, অন্যদের আহবান করে তা কি প্রতিষ্ঠিত হবে! না তার আমল গ্রহণযোগ্য হবে?
অনেকে যুগের পর যুগ গণতন্ত্রসহ বহু মতবাদে নিজ দলকে ক্ষমতায় নেওয়ার প্রচেষ্টা চালায়, হতাশ হয় না। ইসলামের নিয়ম মেনে রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বললে তারা প্রশ্ন ছুঁড়ে – এভাবে হবে না, এগুলো অনেক সময়ের ব্যাপার! এগুলো কি নেফাক নয়?
সবাই যদি গাছ লাগানোর সময় এই ধারণায় দৃঢ় থাকতো ফল খাবার আগে আমরা মৃত্যু আসবে। গাছ রোপন করে লাভ কি? তাহলে পৃথিবী ফল, বৃক্ষশূন্য, মরুভূমি হতো। তাই আমরা ইসলামের বীজ বুনে যাবো – একদিন সেটা মুমিনের অশ্রুসিক্ত দুআ (পানি), সবর (সার), প্রচেষ্টায় বেড়ে উঠবে। ইনশাআল্লাহ একদিন সাফল্যের ফসল আসবে।
ইসলাম প্রতিষ্ঠা হবে রসুলের (সা:) পথে। মুমিন সেই পথে প্রচেষ্টা করতে থাকবে যতসময় লাগুক, উদ্দেশ্য হবে আল্লাহর নির্দেশ পালন ও সন্তুষ্টি অর্জন।