আমাদের নিরবতা আযাবের কারন হতে পারে!

গাজার অসহায় নারী, শিশু, বৃদ্ধাদের অভিশাপ নিয়ে বয়ান করে জনপ্রিয় হওয়া সহজ। নিজদেশের ক্ষুধার্ত শিশু, ধর্ষিত নারী- শিশু, আশ্রয়হীন অসহায় নারী, পুরুষের অভিশাপের কথা চিন্তা করছেন কি? যাকাতহীন রাষ্ট্র, সুদ, করভিত্তিক জুলুমী রাষ্ট্রের ব্যাপারে জাতিকে সচেতন করছেন কি?

অন্যায়, জুলুম দেখলে প্রতিরোধ করা উচিত। জাতিকে জুলুম, শির্ক সম্পর্কে সচেতন করে নূন্যতম ঈমান রক্ষা করা উচিত। আর এগুলো প্রতিরোধের জন্য সামর্থ্য অর্জনের প্রচেষ্টা করা উচিত।

মায়ানমার, ভারতের মুসলিমদের জুলুম নিয়ে ভাবছেন কি, কুরআন সুন্নাহ ও ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধের প্রস্তুতি প্রয়োজন! মজলুম যে দেশের হোক আল্লাহ তার আর্তনাদ শুনেন। আমাদের নিরবতা আমাদের উপর আযাব যেন না হয়।

যেমন আফগান আক্রমণ হয়েছিল পাশ্ববর্তী দেশগুলো (পাক, ইরাক, ইরান) চুপ ছিল যুদ্ধে জড়ালে নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভেবে। তারা কি যুদ্ধ হতে মুক্ত হতে পেরেছিল, না নিজদেশে যুদ্ধে জড়িয়েছিল।

অনেকে শত্রুকে সাহায্য করেছিল। আফগানের জনগণ অনেকে ইরাকে, ইরানে আশ্রয় নিয়েছিল, এরপর ইরাক যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইরাকের লোকজন সিরিয়া, লিবিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিল পরবর্তীতে তাদের লিবিয়া, সিরিয়া যুদ্ধ হয় ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কিন্তু একদল মুহাজির, আনসার ঠিকই লড়াই করেছে ইনশাআল্লাহ ঠিকই বিজয়ী হবে। ফিলিস্তিনের অনেক লোক মিশর, লেবানন জর্ডানে আশ্রয় নিয়েছে, নিচ্ছে। আর আরব নির্বিকার।

হাদীস জানায়- মিশর ধ্বংস হবে, অবরোধ আসবে (মুসলিম শরীফ)। জর্ডান, লেবাননে সুফিয়ানী মুনাফেক ক্ষমতায় আসবে ও তান্ডব চালাবে। সৌদি আরব মদীনায় অবরুদ্ধ হবে।

ইবনু উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অচিরেই মুসলিমরা মদীনায় অবরুদ্ধ হবে এবং তাদের দূরবর্তী সীমান্ত হবে ’সালাহ’ নামক স্থান।

সহীহ। (আবুদাউদ ৪২৯৯)

কিন্তু খলিফা মাহাদী হাফি মক্কায় বায়াত নিবে ও তার সাথীরা লড়াই করে সুফিয়ানীসহ রুমকে পরাজিত করবে।(মুসলিম – কেয়ামতের ফেতনা অধ্যায়)

একটু ভাবুন- মায়ানমারের শরণার্থীরা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে, ভারতে জুলুম হচ্ছে। নিরব থাকলে আল্লাহ আমাদের উপর যেন যুদ্ধ না চাপিয়ে দেন!? তখন আমরা কোন দেশের শরনার্থী হতে পারবো কি? দুপাশে দুই শত্রু দেশ। ফিলিস্তিনের ব্যাপারে জাতি, ওলামা সচেতন অথচ চীনের উইঘুর, বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরনার্থী শিবির রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে নিরব কেন?

আসলে বিশ্বরাজনীতি ও অর্থনীতির যুদ্ধের ষড়যন্ত্রে না চাইলেও আমরা জড়িয়ে যাচ্ছি। ইসরায়েল, ভারত পশ্চিমাদের বিরোধিতা ও ওদের পন্য বয়কট যৌক্তিক ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এসব বয়কট হতে চীনসহ বহুদেশ লাভবান হতে চায়- যেন বিকল্প হিসেবে ওদের পন্য গ্রহন করে, পশ্চিমাদের অর্থনীতি পতন ঘটে এটা ওদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক লড়াই। অথচ সবচেয়ে বেশি মুসলিম নির্যাতিত দেশ চীন ও মায়ানমারের সাহায্যকারী।

অন্যদিকে সারা বিশ্বে ফিলিস্তিনের পতাকা, জানাজা, টুপি বিক্রির শীর্ষ দেশও তারা, সমৃদ্ধও তারা। বয়কট বিভিন্ন দেশের পন্য, এমনকি বয়কট চীনের পন্য লেখা টিশার্টগুলো অধিকাংশ চীনেই তৈরি হয়।

আমাদের ব্যর্থতা আমরা মুনাফেক শাসকদের হটিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। নিজেদের অর্থনীতি, টেকনোলজি দিয়ে উন্নত করতে পারিনি। ফলে জেনে, না জেনেই আমরা ইসলামের শত্রুদের সমৃদ্ধ করছি।

আবার দেশীয় পন্যের দখল নিয়েছে কাদিয়ানীসহ বিভিন্ন ফেতনাবাজ কোম্পানিগুলো। নিজেদের শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সচেতনা বৃদ্ধির প্রয়োজন। এমনও সংবাদ শোনা যাচ্ছে – পশ্চিমাদের মদদে মায়ানমারের ক্ষমতা পতনের, সকল বিদ্রোহী দলকে ঐক্য করে সুচিকে মুক্ত করে ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব আসছে। যার সাহায্যকারী ভূমিকা হিসেবে অবতীর্ণ হবে আমাদের দেশের সেনা ও নৌ-বাহিনীর ভাইরা।

অন্যদের স্বার্থে জড়িয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারি। যদি মায়ানমারর চীন সমর্থিতরা আমাদের আক্রমণ করে, এই সুযোগে ভারত আঘাত করতে দেরি করবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *