আমরা কি আসলে নিজেদের প্রস্তুত করছি!

মন্দিরে মূর্তিপূজায় তারা, আবার মজলুমের জানাজাও পড়ায় তারা। সংঘর্ষ বাড়লে গাজওয়ায়ে হিন্দের ওয়াজ চলবে, এটা শেষ জমানা ঈমান রক্ষা করার কঠিন হবে হাদীসগুলো বয়ান চলবে। দিল্লির মসনদ কাপিয়ে দেওয়ার শপথ ও হুংকার চলবে। অথচ নিজেরা নিজেরা দলে দলে বিভক্ত হয়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, শত্রুর সাথে লড়ার শক্তিটুকু অর্জন করছে না। আবার তারাই স্বপ্ন দেখাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্রে ইসলাম কায়েমের। অথচ শেষ জমানায় ক্ষমতায় থাকবে নিকৃষ্ট মুনাফেক, কাফেররা যাদের সাথে লড়াই করে ইসলাম কায়েম করতে হবে।

মক্কা বিজয়ের পর রুম, পারস্য বিজয় হয়েছিল। মক্কা বিজয় ছাড়া তা সম্ভব ছিলো না কারণ মদীনা থেকে সিরিয়া, পারস্যের মাঝপথেই পড়ত মক্কা। মক্কার কাফের, মুশরিকরা বিজয়ের পথে বড় বাধা হতো। আজও নিজ দেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠা, মুসলিমদের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা না করে অন্যদেশ দখল, মুসলিমদের রক্ষা করার ভাবনটা অবান্তর নয় কি?

মায়ানমার লাখো মুসলিমদের শেষ করে দিয়েছিল- আমরা আসলে কি কিছু করেছি? আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, নাহলে হাশরে কঠিন হিসাব দিতে পারবো না। আকীদা বিশুদ্ধ না করে তাগুতের অনুসারী হয়ে মরলেও শহীদের হাদীসগুলোর ভুল ব্যাখা করা হয়।

হযরত আবু মুসা (রাঃ) হতে বর্ণিত- “এক ব্যক্তি গনীমতের মাল অর্জনের জন্য জিহাদ করল, একজন নিজের বীরত্ব, সুনামের জন্য জেহাদ করল, এদের মাঝে কে আল্লাহর পথে প্রকৃত জেহাদ করল? রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কালেমা বুলন্দ করার জন্য জেহাদ করল সে প্রকৃত মুজাহিদ।” (সহীহ বুখারি- ২৬৫৫, মুসলিম -৫০২৯)।

উহুদ যুদ্ধের সময় কুযমান নামে এক ব্যক্তি মুসলিমের পক্ষে প্রচন্ড যুদ্ধ করে, একসময় সে আহত হয়, মুসলিমরা বলতে থাকে যে, “হে কুযমান, তুমি আজকে ভীষণ কষ্ট ভোগ করেছ। এর বিনিময়ে পুরস্কারের সুসংবাদ গ্রহণ কর! সে বলল কেমন করে সুসংবাদ নেব, আমি তো লড়াই করছি আমার সম্প্রদায়ের ইজ্জত রক্ষার্থে, তা নাহলে আমি আদৌ লড়াই করতাম না, এক পর্যায়ে ব্যাথায় সে আত্মহত্যা করে, রসুল পূর্বেই তাকে জাহান্নামী ঘোষনা করেছিলেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া- ৪র্থ খন্ড পৃ-৭৩)।

রসুলের যুগে কাফেররা বুঝেছিল ঈমান না আনলে, দ্বীন রক্ষায় যুদ্ধ না করলে শহীদ হওয়া যায় না, যা বর্তমানে মুসলিমরা বুঝে না। আর আহলে বায়াতের ফজিলত ও শাহাদাতের হাদীস, ঘটনাগুলো লুকিয়ে রাখা হয়, ফেতনা ছড়ানোর অজুহাতে।

এছাড়া পানিতে ডুবে, অসুখে, নিজ সম্পদ রক্ষায় মরলেও শহীদ তবে আকীদা বিশুদ্ধ হতে হবে। আবার শাহাদাৎ হলো সাক্ষ্য দেওয়া আর শহীদ হলো সাক্ষ্যদাতা যে জীবন দিয়েছে কালেমার উপর বিশ্বাস রেখে। রোগ, শোক, অপমৃত্যু যতকিছু ঘটুক তার মনে শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষা ছিল এবং কালেমার অর্থ বুঝে অগাধ বিশ্বাস রেখে মরেছে তাই শহীদ।

সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে শাহাদাতের মনোষ্কামনা করে; আল্লাহ তা’আলা তাকে শাহীদের মর্যাদায় উন্নীত করেন, যদিও সে স্বীয় বিছানায় মৃত্যুবরণ করে। (মুসলিম)

অপরদিকে যে জীবনে জেহাদের ইচ্ছে পোষণ করেনি, শাহাদাতের নিয়ত রাখে নি তার জন্য এই হাদীস-

আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“রসূলুল্লাহ্ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জিহাদ না করে বা জিহাদের আকাঙ্খা পোষণ না করে মারা যায় তাহলে সে মুনাফিক অবস্থায় মারা গেল।” (মুসলিম, অধ্যায়ঃ ৩৩, কিতাবুল ইমারহ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *