আল্লাহ বলেন- “জেনে রাখ! তোমাদের অর্থসম্পদ ও সন্তানসন্ততি পরীক্ষার বিষয় মাত্র। আল্লাহর কাছে এর চেয়েও মহান প্রতিদান আছে।” (সূরা আনফালঃ ২৮)। ধনসম্পদের মত সন্তানও আমাদের জীবনে পরীক্ষা। আল্লাহ যেমন কাউকে সম্পদ দিয়ে পরীক্ষা করেন আবার কাউকে সম্পদ না দিয়ে বা কেড়ে নিয়ে পরীক্ষা করেন। তেমনি আল্লাহ কাউকে সন্তান দিয়ে, কাউকে না দিয়ে বা কেড়ে নিয়ে পরীক্ষা করেন। সন্তান দেওয়া একমাত্র আল্লাহর ইখতিয়ার আর কারো নয়। আমাদের দেশে অনেকে সন্তান না হলে অপবাদ দেওয়া শুরু করে, আর অনেকে ছুটে যায় ভন্ড, পীর, দরবেশের কাছে। যারা তাদের অর্থ, ঈমান দুটোই নষ্ট করে। অথচ দীর্ঘ সময় ইব্রাহিম (আঃ) ও জাকারিয়া (আঃ) এর সন্তান হয়নি তারা কি করেছিলেন আর ভন্ড পীরেরা কি করতে বলে মিলিয়ে দেখুন। নবীগণ ভরসা করতেন আল্লাহর উপর ও সাহায্য প্রার্থনা করতেন। জাকারিয়া (আঃ) দোয়া করেন- “হে আমার প্রতিপালক! তোমার পক্ষ থেকে আমাকে পূতপবিত্র সন্তান দান কর। নিশ্চয়ই তুমি প্রার্থনা কবুলকারী।” (সুরা আলে ইমরানঃ ৩৮)। এছাড়া কুরআন জানায় ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ ধনসম্পদ ও সন্তান-সন্তানি বাড়িয়ে দিবেন। কোরআনে রয়েছে – “অতঃপর বলেছিঃ তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের উপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্তনাদী বাড়িয়ে দিবেন” (সূরা নূহঃ ১০-১২)। মূলত নেককার স্ত্রী ও সন্তান প্রার্থনা করতে হয় বিয়ের পূর্বে। কুরআনে দোয়া বর্ণিত রয়েছে- “হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে।” (সুরা আল ফুরকান- ৭৪)। তারপর আবার পুত্র সন্তানের জন্য পীর, দরবেশের দরবারে যায় অথচ স্বয়ং রসুল (সাঃ) এর পুত্র সন্তান ছিল (জীবিত) না। আর তার কন্যা ফাতেমা (রাঃ) হবেন জান্নাতের নারীদের নেত্রী ও তার সন্তানগণ শহীদ যুবকদের নেতা। অনেকে এমন আছে কারো সন্তান না হলে তাকে অভিশপ্ত ও অপবাদ দিতে শুরু করে। অথচ আয়েশা (রাঃ) ছিল শ্রেষ্ঠতম নারী, তার নিজের কোন সন্তান ছিলো না। আল্লাহ তাকে লাখো, কোটি উম্মতের মা হিসেবে সম্মানিত করেন। তাই সন্তান হওয়ার জন্য রসুল ও সাহাবিদের মত দোয়া ও হালাল চিকিৎসা করা উচিত। তারপরও যদি না হয় বুঝতে হবে এটা আল্লাহর পরীক্ষা ও ইচ্ছে। এমন অনেক মানুষ আছে যাদের নিজেদের সন্তান নেই তাই ইয়াতিম বা স্বজনদের সন্তানদের মায়ামমতা দিয়ে বড় করেন, এভাবে আল্লাহ উভয়ের প্রয়োজন পূরণ করেন।