কসম ও শিরক

Image Editor Output Image1751801975 1641756665079

আল্লাহ তাআলা তার সৃষ্টি জগতের মধ্যে যার নামে ইচ্ছে কসম করতে পারেন। কিন্তু সৃষ্টির জন্য আর কারোও নামে কসম করা জায়েজ নেই। তা স্বত্বেও অনেক মানুষই গায়রুল্লাহর নামে শপথ করে। কসম মূলত এক প্রকার সম্মান যা আল্লাহ ছাড়া কেউ পাওয়ার যোগ্য নয়। ইবনে উমর (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেন- নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের পিতৃপুরুষদের নামে শপথ করতে নিষেধ করেছেন। কারো যদি শপথ করতে হয়, সে যেন আল্লাহর নামে শপথ করে অথবা চুপ থাকে (তিরমিজি)। রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেন- “যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত কারো নামে কসম করল, সে শিরক করল” (আবু দাউদ, তিরমিযি, মিশকাত-৩৪১৯)। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আরও বলেন- “যে আমানতের (আনুগত্য, ইবাদত,গচ্ছিত সম্পদ) নামে কসম করে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয় (আবুদাউদ,মিশকাত-৩৪২০)। রাসুলের (সা:) সাহাবীরা কাবার রব অর্থাৎ আল্লাহর নামে শপথ করতেন। রাসুল (সা:) কাবার নামে কসম বা শপথ করতেন না। অথচ আমাদের সমাজে এখন মসজিদ, পিতামাতা, কারো মাথা ছুয়ে, এমনকি জমিনের উপর দাড়িয়ে বলছি বলে জমিনের শপথ, টেবিল ও খাওয়ার দ্রব্য হাতে নিয়ে শপথ বা কসম করা হয়। পৃথিবীর সকল কিছুর জ্ঞান শুধু আল্লাহর কাছে, কোন ব্যক্তি সত্য বা মিথ্যা বলছে কিনা শুধু আল্লাহই জানে, তাই শপথ বা কসম শুধু আল্লাহর নামে হবে। কেউ যদি আল্লাহ ব্যতীত কোন ব্যক্তি, মসজিদ বা অন্যকিছুর শপথ করে সে আল্লাহর সর্বদ্রষ্টা, সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ গুণের সাথে শরীক করল। যা কেবল আল্লাহরই গুণ, তাই এ ধরনের শপথ শিরক। এছাড়া আমাদের দেশে কতিপয় শিরকী বাক্য হল এই- আল্লাহ ও আপনি ছাড়া আমার কেউ নেই, আমার জন্য উপরে আল্লাহ আর নিচে আপনি আছেন। অথচ আসমান-জমিনের সর্বত্র ক্ষমতা আল্লাহর। আল্লাহ বলেন- “তুমি কি জানো না, আসমান-জমিনের সার্বভৌম ক্ষমতা আল্লাহরই?” (সূরা বাকারাহ- ১০৭)। আর আল্লাহ ছাড়া কেউই বিপদ হতে উদ্ধার করতে পারে না। যেকোন বিপদে আল্লাহই মুমিনের একমাত্র ভরসা, আল্লাহ যেকোনভাবে মানুষকে রক্ষা করেন কখনও মানুষের উছিলায়, কখনও সম্পদ, কখনও গায়েবী মদদে। তাই উছিলাকে নয় বরং তার স্রষ্টা আল্লাহর উপর ভরসা রাখা উচিত। আল্লাহ পাক বলেন- “আল্লাহ এসব লোককে ভালোবাসেন যারা তারই ভরসায় কাজ করে।” (সুরা আল ইমরান- ১৫৯)। আল্লাহ পাক আরও বলেন- “তুমি ভরসা কর এমন চিরঞ্জীব সত্তার যিনি কখন মরবেন না।” (আল ফুরকান- ৫৮)। অথচ মানুষ আল্লাহ ব্যতীত অন্য যার ভরসা করে যেকোন মুহূর্তে তার মৃত্যু বা ধ্বংস আসতে পারে। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- “আর আল্লাহরই উপর মুমিনদের ভরসা করা উচিত।” (সুরা ইব্রাহীম -১১)। আল্লাহ বলেন, “অতঃপর তুমি যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, আল্লাহর উপর ভরসা কর।” (সুরা বাকারহ- ১৫৯)। আল্লাহ আরো বলেন, “আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা রাখে তিনি তার জন্য যথেষ্ট।” ( সুরা তালাক- ৩)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *