১. জালেমরা ষড়যন্ত্র করেছিল (নমরুদ ও তার সঙ্গীরা), ওরা ভেবেছিল সবার সম্মুখে ইব্রাহিম (আঃ) কে পুড়িয়ে মারলে দ্বীন চিরতরে হারিয়ে যাবে। আল্লাহ পরিকল্পনা করেছিলেন ইব্রাহিম (আঃ) কে কেয়ামত পর্যন্ত উদাহরণ রাখবেন- যদি হক্বের পথে একজনই থাকে সে বিজয়ী হবেই, দুনিয়ার আগুনের মত জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করে তাকে জান্নাতে চিরপ্রশান্তিতে রাখবেন। আর অগ্নিপূজারীদের জন্য দৃষ্টান্ত রইলো- আগুনের নিজের কোন ক্ষমতা নেই বরং সে আল্লাহর নির্দেশে চলে। জালেমদের ষড়যন্ত্র পরাজিত হয় আল্লাহর দ্বীন বিজয়ী হয়।
২. ফেরাউন ও তার সঙ্গীরা ষড়যন্ত্র করেছিল জাদুকরদের কাছে মুসা (আঃ) কে পরাজিত করবে, মুসা (আঃ) কে তুচ্ছ জাদুকর হিসেবে ঘোষণা করবে। আল্লাহ জাদুকরদের হেদায়েত দিলেন সবার সম্মুখে। প্রমাণ করে দিলেন মুসা (আঃ) জাদুকর নয় বরং তার দ্বীনই সত্য। তারা ঈমানের দৃঢ়তা নিয়ে বলেছিল- “তারা (জাদুকররা) বলল, আমাদের রব এবং তার সুস্পষ্ট নির্দেশনাবলি সামনে এসে যাওয়ার পরও আমরা (সত্যের উপর) তোমাকে প্রাধান্য দেবো, এটা কখনো হতে পারে না। সুতারং তুমি যা কিছু করতে চাও করো। তুমি বড়জোর এ দুনিয়ার জীবনের ফয়সালা করতে পারবে।” (সুরা ত্বোহা-৭২)। ফেরাউন ভেবেছিলেন মুসা (আঃ) ও তার সঙ্গীদের হত্যা করে দ্বীন ইসলামকে শেষ করে দিবে, আল্লাহ জালেমদের ধ্বংস করে কেয়ামত পর্যন্ত উদাহরণ করে রাখলেন।
৩. নারীরা ছলনা করেছিল, ইউসুফ (আঃ) এর চরিত্রে কলংক লোপন করতে চেয়েছিল। আল্লাহও পরিকল্পনা করেছেন ইউসুফ (আঃ) এর পবিত্র চরিত্র ও জীবনকাহিনী বিশ্ববাসীর কাছে উদাহরণ করে রাখলেন। কারাগার হতে রাজদরবারে মর্যাদা দিলেন। তার দ্বীন প্রতিষ্ঠা করলেন (সুরা ইউসুফ)।
৪. জালেম শাসক ষড়যন্ত্র করেছিলো, আসহাবে উখদুদের দ্বীনদার বালককে হত্যা করলেই ইসলাম শেষ হয়ে যাবে। আল্লাহ বালককে শহীদ করে তার জাতির নিকট দ্বীনকে ছড়িয়ে দিলেন, তারা দুনিয়ার আগুনে পুড়ে জাহান্নাম হতে রক্ষা পেল, জান্নাত কিনে নিল।
৫. আবুজাহেল, উতবা, শায়েবাসহ ইসলামের শত্রুরা ষড়যন্ত্র করেছিলো ইসলাম ও রসুলকে নিয়ে অপবাদ ও উপহাস করলেই মানুষ ইসলাম হতে দূরে থাকবে। উল্টো তাদের অপবাদে মানুষ রসুল (সাঃ) এর নিকট এল তার ব্যবহার ও ইসলামে আকৃষ্ট হয়ে দ্বীন গ্রহন করলো। বিশ্বের বুকে মদীনায় প্রথম ইসলামী রাষ্ট্র হলো সেখান হতে ইসলামের দ্বীপ্তশিখা ছড়িয়ে গেল। আজকের জালেমরা ষড়যন্ত্র চালু রেখেছে, তারা ভেবেছে কুরআন, রসুল (সাঃ) ও ইসলামকে নিয়ে অপবাদ ও উপহাস করলে মানুষের হৃদয়ে ইসলামের প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টি হবে ও রসুলের (সাঃ) চরিত্রে অপবাদ ছড়াবে। আল্লাহ জালেমদের স্বজন ও স্বদেশীয়দের হেদায়েত দিলেন, তারা কুরআন ও রসুলের (সঃ) জীবনী পড়লো। ফলে সারাবিশ্বে তারা ইসলাম ও রসুল (সাঃ) এর চরিত্রের সৌন্দর্য্যতা প্রচার করে চলেছে, ইসলামের জন্য জীবন দিচ্ছে।
তাই জালেমের ষড়যন্ত্রে বিচলিত হওয়া উচিত নয়, আল্লাহ মহাপরিকল্পনাকারী। তার দ্বীনের বিজয় সুনিশ্চিত বরং চিন্তা করুন এই বিজয়ে আমাদের ভূমিকা কতটুকু হবে!!!