ইসলাম এসেছে বর্ণবাদ রুখতে, তাই ইসলামের সংস্পর্শে এসে কালো হাবশি দাস বেলাল (রাঃ), ইরানের সালমান ফারসী (রাঃ) সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। আজ সারাবিশ্বে মুসলিমরাই বর্ণবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। বহু বছর আগে মোহাম্মদ আলী এক রেষ্টুরেন্টে খাবার খেতে যান, কালো বলে তাকে অবহেলা করা হয় তখন তিনি অনেক কষ্ট পান। এই কেমন নীতি শুধুমাত্র বর্ণের কারণে কাউকে ঘৃণিত হতে হবে””!! পরে মুসলিমদের সংস্পর্শে এসে ইসলামিক ভ্রাতৃত্ববোধ হতে ইসলাম গ্রহণ করেন। আর সে মুসলিমরাই আজ ফেসবুকসহ সর্বত্রই বর্ণবাদ ছড়াচ্ছে। কারো স্বামী কালো, কারো টেকো, কারো স্ত্রী মোটা, কেউ খাটো এসব নিয়ে উপহাসে ব্যস্ত। কে কালো, কে ফর্সা হবে এটা কি তার ইখতিয়ারে থাকে নাকি আল্লাহর ইচ্ছায় হয়? তারমানে তার কালো, খাটো বা অন্য কোনো শারীরিক কারণে সমালোচনা করা মানে আল্লাহর কার্যাবলির সমালোচনা করেছেন। চরিত্রের কারণে ঘৃনা বা ভালোবাসা সেটা হয়তো মানা যায়। আল্লাহ বলেন- “মুমিনগণ, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে, কেননা সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকে যেন উপহাস না করে। কেননা সে উপহাসকারিনী হতে শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্হাপন করলে তাকে মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ হতে তওবা না করে তারাই জালেম (সুরা হুজরাত, আয়াত-১১)। আপনি হয়তো লম্বা, সুন্দর সে অহংকারে কারো খাটো, কালো, টেকো হওয়াকে উপহাস করছেন তাহলে আপনি শয়তানের পথে হাটছেন, ইবলিশই প্রথম জন্ম বা সৃষ্টিসূত্রে অহংকারে লিপ্ত হয়। সে নিজেকে আগুনের তৈরি বলে অহংকার করে অপরদিকে আদম (আঃ) কে কুৎসিত কাদামাটির তৈরি বলে ঘৃণা করে। অথচ আল্লাহর কাছে রং, বংশ, ভাষা কোনকিছুরই মূল্য নেই তাকওয়া (আল্লাহভীতি, ন্যায়নিষ্ঠা) ছাড়া। একজন কালো দাস বেলাল (রাঃ) ছিল আল্লাহর কাছে অতি প্রিয় তাকওয়ার কারণে। হযরত উমর (রাঃ) ছিলেন টেকো অথচ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও আল্লাহর কাছে ছিলেন অতি মর্যাদাবান, আর দীর্ঘাকার সাদ ইবনে মুআয (রাঃ) যার জানাজায় ৭০ হাজার ফেরেশতা অংশগ্রহণ করেন। অথচ অতি সুন্দর আবু লাহাব ছিল অতি ঘৃণিত কারণ তার কর্ম ছিল আল্লাহ ও রাসুল বিরোধী। আজও সালাতে জাত, বর্ণ, পেশা বাদ দিয়ে মুসলিম পরিচয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়। কারো আকার-আকৃতি, গঠন, রং আল্লাহর দান। সে কারণে কাউকে ঘৃণা করা আল্লাহর সৃষ্টিতত্ত্বের ঘৃণা হয়। আল্লাহ মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য কাউকে অন্ধ, কাউকে পঙ্গু, কাউকে কালো, কাউকে অতি সুন্দর করেন। এরপরও যার ঈমান ও আমল উত্তম, আল্লাহর কাছে সে উওম।