মনে করুন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর, ধনাঢ্য, সুর্দশন, বিচক্ষণ ব্যক্তিটি আপনাকে ভালোবাসে, সে আপনাকে দামী উপহার দেয় প্রতিনিয়ত। এমনকি তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যেকোন সময় তিনি আপনার সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এমনকি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা বজায় রাখলে আপনাকে এমনকিছু উপহার দিবেন যা আপনার কল্পনার বাহিরে। তখন আপনি এই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইবেন, প্রতিমুহূর্তে তার সাক্ষাৎ কামনা করবেন, তার প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানাবেন, তার প্রশংসা সবার নিকট করবেন কিন্তু এমন মুহূর্তে আপনার সাথে তার সাক্ষাৎ হল আপনি তার বিরোধিতায় লিপ্ত। আর এই কারণে আপনি অনেক বড় পুরস্কার হতে বঞ্চিত হলেন আর ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি আপনাকে শাস্তি দিল, তখন আপনার সবচেয়ে বোকা বন্ধুটিও বলবে মাত্র কয়টাদিন তো সবর করতে পারলি না!? কৃতজ্ঞতা ও সতর্কতার সহিত ভালোভাবে না চলার কারণে কত বড় পুরস্কার হতে বঞ্চিত করলে নিজেকে, এত বোকামি কেউ করে। এবার আসুন সর্বশক্তিমান, ক্ষমতাধর, সবচেয়ে সুন্দর যার সত্তা, মহা দয়ালু, আল্লাহপাক আমাদের ভালোবাসার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আমাদের অনেক নেয়ামত দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন- “তোমরা আমার কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে।” (সুরা আর রহমান)। যেকোন মুহূর্তে মৃত্যু আসতে পারে তার সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে, কৃতজ্ঞ হলে জান্নাতের পুরস্কার আর তার বিরোধিতা অবস্থায় মৃত্যু হলে জাহান্নাম, মাত্র তো কয়টা দিনের দুনিয়া। আমরা কি আল্লাহর পরিচয় জানতে চেষ্টা করছি, তার সাক্ষাৎ এর জন্য প্রস্তুতি কতটা নিয়েছি। আল্লাহর পরিচয় রয়েছে তার গুণবাচক নামের মাঝে। আমরা সারাজীবন সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, সর্বশক্তিমান, বিপদে রক্ষাকারী হিসেবে আল্লাহকে মানলেও বিধানদাতা হিসেবে আল্লাহকে কতটা মানছি। অথচ কেউ যদি সবগুণবাচক নাম ও সত্তা মানে শুধু রিজিকদাতা/ সৃষ্টিকর্তা হিসেবে অন্যকে মানে বা অন্যের কাছে রিজিক চায় তাহলে শিরক হবে। তাহলে আল্লাহর বিধানের বিপরীতে বান্দার কাছে বিধান চাইলে কি শিরক হবে না!? রিযিকদাতা, সৃষ্টিকর্তা আর বিধানদাতা এক আল্লাহই। আল্লাহ বলেন- “বিধান দেওয়ার ক্ষমতা এক আল্লাহরই।” (সুরা ইউসুফ আয়াত- ৪০)। তিনি আরও বলেন- “তারা কি জাহেলিয়াতের বিধান চায়? দৃঢ়বিশ্বাসীগণেরর নিকট আল্লাহর চেয়ে উত্তম বিধানদাতা কে হতে পারে?” (সুরা মায়েদাহ- ৫০)। আল্লাহর দ্বীনের বিপরীত সকল বিধানই জাহেলিয়াত, আমরা আল্লাহকে ভালোবাসার দাবি করি অথচ তার পরিচয়, বিধান জানি না, তার বিধান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা না করে তার বিপরীত বিধান ও বিধানদাতার প্রশংসা ও প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছি। আজ যারা আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা সম্ভব না ভেবে অন্যদের বিধানদাতা ও তাদের বিধান মেনে নিচ্ছে তারা একদিন রিযিকের সংকীর্ণতায় দাজ্জালকে রিযিকদাতা মেনে নিয়ে সিজদাহ্ দিবে।