হারামে ইসলামী নামকরণ কতটা যৌক্তিক?

মদের বোতলে বিসমিল্লাহ লিখলে তা হালাল হয়ে যায় না বরং তা ইসলামের ভুল ব্যাখা করা হয়। মনে করুন, কেউ একটা ভবন তৈরি করলো। তার নাম দিল মাসজিদ। অথচ ভবনের ভিতর কেউ সালাত পড়ছে, কেউ আবার বিদআতী আমল করছে, কেউ মদ বিক্রি করছে, কেউ পতিতালয় চালু করেছে।

মাসজিদ নাম দিলে কি এসব হারাম বৈধ হয়ে যাবে?

মুমিন ব্যক্তি চাইবে সকল হারাম মুক্ত করে যেন এটাকে রসুলের (সা:) যুগের মত তাকওয়াপূর্ণ মাসজিদ হিসেবে গড়ে উঠানো যায়। অথবা এটাকে ফেতনা ও জাহেলিয়াতের ঘর ঘোষণা করবে। যতদিন পর্যন্ত সংশোধন হবে না চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

তেমনি কেউ ইসলামী রাষ্ট্র ঘোষণা করলো – অথচ এই রাষ্ট্রে হালাল ও হারাম দুটোই বৈধ ঘোষণা করল। বরং অনেক হালালকে আইন করে হারাম (অবৈধ) ঘোষণা করলো এবং অনেক হারামকে হালাল ঘোষণা করলো। যেমন: বাল্যবিবাহ, লাইসেন্সপ্রাপ্ত মদ, পতিতালয়, ব্যাংকের মাধ্যমে সুদ ইত্যাদি। তখন মুমিন চাইবে এসব হারাম পরিবর্তন করে রাষ্ট্রকে প্রকৃত ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে। যতদিন তা হবে না সে চেষ্টা চালিয়ে যাবে এবং ঘোষণা করবে এটা ইসলামী রাষ্ট্র নয় বরং ফেতনার রাষ্ট্র।

এটা যদি ইসলামী রাষ্ট্র হয় তাহলে কিছু রাজনৈতিক দল ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য ভোট কেন চায়? ইসলাম প্রতিষ্ঠা নাহলে কিভাবে ইসলামী রাষ্ট্র হয়? তাহলে আপনারা ঘোষণা করুন এটা ইসলা-মী রাষ্ট্র নয়। যেহেতু আপনারা ইসলাম কায়েম করতে চান তাহলে আপনারা ইসলামী দল আর আপনাদের প্রতিপক্ষ যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠা চায় না বা অন্য চেতনা প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাদের ইসলাম বিরোধী দল/শত্রু ঘোষণা করুন। তখন ওরা আপনাদের রাজনীতির বৈধতা দেয় কিনা দেখুন!?

এদেশে চলচ্চিত্রের শুরুতে বিসমিল্লাহ লাগানো হয়। নারী বেপর্দা ছবির পাশে/উপরে আল্লাহু আকবর, বিসমিল্লাহ লাগিয়ে ভোট চাওয়া হয়! আর কত জাহেলিয়াত চলবে?

ইসলামী ব্যাংক নামে কোন ব্যাংকই যেমন সুদমুক্ত নয় – তেমনি ইসলামী গনতন্ত্র বলে কিছু নেই। ইসলামে এরকম হাজার কোটি সম্পদ জমাতে উৎসাহ দেয় না- বরং যাকাত, সদকা ও দানে অনুপ্রেরণা দেয়। একদিকে ব্যাংকগুলো সম্পদ জমাচ্ছে অন্যদিকে কতজন না খেয়ে কষ্ট পাচ্ছে!!

(ইসলামী রাষ্ট্র হলে সম্পদ নিজগৃহে নিরাপদে থাকতো)

ইসলামী নির্বাচন পদ্ধতি সম্পূর্ণ ভিন্ন – মজলিসে শুরায় অল্পকিছু ঈমানদার আলেম দ্বারা নির্বাচিত হয় খলিফা। যেখানে কাফের, ফাসেক, মুনাফেকদের সমর্থন দেওয়ার অধিকার রাখে না। ফাসেক, কাফের, মুনাফেক কি কখনও মুমিন ব্যক্তি ক্ষমতাসীন হোক চাইবে?

যদি বলেন বর্তমানে এটার আধুনিকায়ন প্রয়োজন! তাহলে বলবো ইসলাম সকল যুগের উপযোগী। আর যদি এরকমই নির্বাচন চান, সহজ ও কম খরচে পদ্ধতি চালু করুন- প্রত্যেক এলাকায় মসজিদ ও মসজিদের ঈমাম আছে যাদের মুসল্লীরা যাচাই বাচাই করে নিয়োগ করবে।
আর সকল মসজিদের ঈমামরা একজন নেতা নির্বাচন করুক। তাহলে দ্বীনদার লোক নির্বাচিত হবে, খরচও কম হবে। অথচ আজ পর্যন্ত দেশের মসজিদের ঈমামরা ঐক্য হতে পারেনি- কারো কাছে যেটা ইসলাম। অন্যদের কাছে শির্ক, কুফর, বিদআত। তাহলে ওরা কি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে!

মানুষ যখন বুঝবে কোনটা হারাম, হালাল তখন হারামকে অপসারিত করে হালালকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইবে। কিন্তু বিভিন্ন বিভ্রান্তি ও সুবিধামত ফাতওয়া দিয়ে হারামকে জায়েজ করার প্রচেষ্টা হলো ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে প্রকৃত ইসলাম প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *