স্বাধীনতা আর আল্লাহর অধীনতা

এই মহাবিশ্বে একমাত্র স্বাধীন হল আল্লাহ। তিনি যা ইচ্ছে করেন, সবকিছুই তার অধীন। আল্লাহ মানুষকে কিছু ক্ষমতা দিয়েছেন আল্লাহর ইচ্ছেই সে তা কর্মে পরিণত করতে পারে। তবে আল্লাহর কাছে প্রিয় হল মুসলিম যারা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী। আর ইবলিশ শয়তানই আল্লাহর কাছে কেয়ামত পর্যন্ত অবকাশ চান তার ইচ্ছেমত পাপ ও ফেতনা ছড়ানোর জন্য। মুসলিম অর্থ আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পনকারী। মানুষ হয় ইসলামী নিয়মনীতি মেনে আল্লাহর অধীন হয়ে মুসলিম হবে না হয় নিজের মনমতো চলে নফসের অধীন হয়ে শিরকে লিপ্ত হবে। ইসলামি রাষ্ট্র বলতে বুঝায় এমন রাষ্ট্রব্যবস্হা যা আল্লাহর আইন ও একমাত্র সংবিধান কুরআন-সুন্নাহর অধীন যেখানে সার্বভৌম ক্ষমতা আল্লাহর আর তথাকথিত স্বাধীন রাষ্ট্র বলতে বুঝায় জনগনের পছন্দনীয় শাসক, শাসন ও তার আইন বা সংবিধানের অধীন যা প্রয়োজনে আল্লাহর আইনকে বাতিল করে নিজেরা মনমতো আইন রচনা করতে পারবে। এভাবে আল্লাহর বিধানদাতা সত্তার সাথে শিরকে লিপ্ত হয়। যারা এই ধরনের নিয়মনীতিকে ভালোবাসবে, সর্মথন করবে তারা আল্লাহর শত্রুকে ভালোবাসা ও সমর্থন দিয়ে আল্লাহর শত্রুতে পরিণত হয়। মুসলিম অধ্যুষিত দেশ যদি কুরআনের আইন দ্বারা পরিচালিত না করে আল্লাহ সেখানে গৃহযুদ্ধ সৃষ্টি করেন।আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা) হতে বর্নিত- “যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তার রসুলের সাথে অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাদের সহায় সম্পদ কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে গ্রহন করে না, তখন আল্লাহ পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন।” (ইবনু মাজাহ- ৪০১৯)।সারা বিশ্বে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর দিকে তাকালে এই হাদীসের প্রতিফলন দেখা যায়। তারা আল্লাহর আইন দ্বারা রাষ্ট্র চালায় নি তাই গৃহযুদ্ধ শুরু হয় পরে বিজাতীয় কাফেররা তাদের ভূখন্ডের সম্পদ লুন্ঠন করে নিচ্ছে। ব্রিটেন হতে আলাদা হয়ে যখন পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হয় তখন পাকিস্তান ইসলামি রাষ্ট্র গঠন না করে নিজেদের ক্ষমতার জন্য জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র গঠন করে। যদি ইসলামি রাষ্ট্র হত তাহলে পূর্ব-পশ্চিমে হত একই পতাকা, একই সংবিধান আল-কুরআন, একই রসুলের সুন্নাহ চলত, দাপ্তরিক ভাষা হত আরবি আর সবাই নিজ ভাষায় কথা বলার অধিকার থাকত। সকল মুসলিম সবক্ষেত্রে তাদের পরিপূর্ণ অধিকার পেত তা যে ভূখন্ডে থাকুক না কেন!! তাহলে যুদ্ধই হত না কারণ লাখো মুসলিমের ভেতর ইসলামের জ্ঞান না থাকলেও ইসলামের প্রতি ভালোবাসা ছিল। কিন্তু তারা জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র কায়েম করে। নিজস্ব পতাকা, সংবিধান, আদর্শ, ভাষা চালু করতে গিয়ে জুলুম নির্যাতন শুরু করে ফলে শুরু হয় যুদ্ধ। আজ দেখুন কুরআনের আইন নেই এইদেশে তাই একদল ক্ষমতায় এলে আরেক দল ও সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হয়। তথাকথিত স্বাধীনতার নামে আমাদের বার বার বিভক্তি হয়েছে (ভারত হতে পাক-ভারত, পাকিস্তান হতে বাংলাদেশ)। আর শাসক বদল হয়েছে, মানুষ তার অধিকারের সঠিক মূল্যায়ন পায় নি। আর মুসলিমদের সবচেয়ে বড় বিজয় হল মক্কাবিজয় ও জেহাদের ময়দানে বদরের বিজয়। সাহাবীরা কখনও মক্কাবিজয় বা বদর দিবস পালন করে নি কারণ বদর, উহুদের চেতনা একদিনের জন্য না বরং সবসময় পালনীয়। তাহলে স্বাধীনতা দিবস পালন কতটা বৈধ!? আজ ইংরেজ, পাক, ভারত নেই তবুও কি ধর্ষন, দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে!? আজও ক্ষমতাসীনরা খুন, ধর্ষন করছে আর তাদের বিরোধিতা করলে গুম করছে। বিজয় দিবস পালনের নামে কুফর, শিরকী, অশ্লীল নাচ-গান সবই চলছে। যে রমনা, ধানমন্ডিসহ সারাদেশে গান ও বিজয় দিবসের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় করা হয় এসব পার্কে, ফুটপাতে হাজারও শিশু, বৃদ্ধ আশ্রয়হীন, বস্ত্রহীন, খাদ্যহীন থাকে। ওরা কি দেশের অংশ নয়!? স্বাধীনতার নামে আপনি যদি শাসকের অন্যায়, শিরকের বিরোধিতা করলেই দেশদ্রোহী। তাহলে মুজিবও দেশদ্রোহী ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের জালেম শাসকের বিরোধিতা করেছেন। আর রসুলগণ ফেরাউন, নমরুদ, আবু জাহেলদের শিরকী নিয়মনীতির বিরোধিতা করেন। ইসলাম পরিপূর্ণ দ্বীন যা মসজিদ হতে রাষ্ট্র পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে দেশীয় চেতনার নামে বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রনীতির মানার সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *