শেষ জমানার নদ-নদী ও ভূগোল জানা মুসলিমদের জন্য বড় প্রয়োজন। শেষ জমানার অনেক নদ-নদী শুকিয়ে যাবে ও পানি সংকট দেখা দিবে। ভারতের সাথে পাক-বাংলার পানি দ্বন্দ্ব চলছে তেমনি চীন তিব্বতে বাধ তৈরি করছে, ফলে ইচ্ছে করলে ভারতের নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিতে পারবে। কারণ ভারতবর্ষের বেশিরভাগ নদীর উৎপত্তি হল হিমালয়ের তিব্বত (উচু) হতে। শেষ জমানার নদ-নদীর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণগুলো হলো-
ফোরাত ও দজলা- ফোরাত নদীর একটা অংশ শুকিয়ে যাবে স্বর্ণের পাহাড় উঠবে (মুসলিম, বুখারী)। আল ফিতান অনুযায়ী তা উঠবে সিরিয়ার দেইর আর জুরে। এছাড়া ফোরাতের ও দজলার কাছে বাগদাদ ও মসুলে সুফিয়ানী কালো পতাকাবাহী আসাহব জাতির হাজারও লোককে হত্যা করবে। যাদের মধ্যে বনু হাশেম গোত্র ও আলী (রাঃ) এর বংশধরও থাকবে (আল ফিতান)। আসাহব জাতি সাময়িক ইরাক, সিরিয়ায় ক্ষমতা পাবে।
আমুনদী- যখন ইরাক, সিরিয়ায় আসহাব জাতির পতন হবে তাদের জীবিত লোকগুলো খোরাসান ও আমু দরিয়ার দেশগুলোর দিকে ফিরে যাবে। সেখান হতে হারস হাররাস ও মনসুর ইয়ামেনীর নেতৃত্বে খোরাসান বাহিনী বের হবে। তারা ইরাকের মুসলিমদের উদ্বার করবে এরপর মক্কা-মদীনায় মাহাদীর সাথে যুক্ত হয়ে শামে সুফিয়ানীকে পরাজিত করবে ও জেরুজালেম উদ্ধার করবে। এরপর খলিফা মাহাদী একটা বাহিনী হিন্দুস্তানে পাঠাবে যারা হিন্দ ও সিন্ধের (ভারত, পাক, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, চীন) রাজাদের বন্দী করে জেরুজালেম নিয়ে আসবে। ( আবুদাউদ ৪২৯০, মুসনাদে আহমদ খন্ড ৫ পৃ ২৭৭, ইবনে মাজাহ ৪০৮৮ দুর্বল, তিরমিজি- ২২৬৯, আল ফিতান )। দুর্বল হাদীস অনুযায়ী মাহাদী খলিফা হবার আগে হারস হাররাস আহলে বায়াত (আলী রাঃ বংশধর) ১৮ মাস খলিফা থাকবে। এখানে অধিকাংশ আলেমই হাদীসের ভুল ব্যাখা করে বলে মাহাদী আসার পর হয়তো গাজওয়ায়ে হিন্দ হবে, আসলে এখানে বলা হয়েছে জেরুজালেম বিজয় হওয়ার পর বিজয়ী বাহিনী আসবে, যুদ্ধ বহু আগেই চলবে। যেমন মক্কাবিজয় অল্পসময়ে হলেও এই বিজয়ের পূর্বে বদর, উহুদ যুদ্ধসহ সংঘর্ষ বহুদিন চলেছে। ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় হয়েছে কিন্তু যুদ্ধ চলেছে দীর্ঘ ৯ মাস ও দ্বন্দ্ব ছিল বহুবছরের। তেমনি গাজওয়ায়ে হিন্দ চলবে আর বিজয় আসবে জেরুজালেম বিজয়ের পর। আর ভুলব্যাখার কারণ জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারা। কাশ্মীরের প্রতিরোধকারীরা ওয়াজ করছে তারা গাজওয়ায়ে হিন্দ লড়ছে, তেমনি মায়ানমার ও চীনের অল্পকিছু মুসলিম মুজাহিদরাও। অথচ আমরা ততক্ষণ গাজওয়ায়ে হিন্দ বলবো না যতক্ষণ আমাদের ভূখন্ডে মুসলিম না মরে। কাশ্মীরের ১ লাখ মুসলিম মরলেও পাকিস্তান গাজওয়ায়ে হিন্দ বলবে না কিন্তু নিজদেশে ১০ জন মরলেই বলবে গাজওয়ায়ে হিন্দ শুরু। তেমনি মায়ানমারের হাজারও লোক মরলে বাংলাদেশ গাজওয়ায়ে হিন্দ বলবে না কিন্তু ভারত, মায়ানমারের হাতে নিজ দেশের ১০০ জন মানুষ মরলেই গাজওয়ায়ে হিন্দ ভাববে। অথচ মুসলিমরা পরস্পর ভাই-ভাই। মক্কায় জন্মগ্রহণকারী রসুলের (সাঃ) জন্য মদীনাবাসী মক্কাবাসীর সাথে যুদ্ধ করলো কেন? জেরুজালেম হতে বাহিনী পাঠানো হবে কারণ ইসলামে ভূখণ্ডপূজা নাই সকল মুসলিমের রক্তই আল্লাহর নিকট সমান। আমু নদী হল উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান, তাজাকিস্তান, চীনের কিছু এলাকা দিয়ে প্রবাহিত নদী যা বিশ্বের ১০ বড় নদীর একটি। যেখানে চীন হতে রাশিয়া পর্যন্ত ব্রীজ তৈরির কাজ চলছে। হয়তো ব্রীজ হলে মুসলিমরা এসব ভূখন্ড হতে চীন, রাশিয়া ও জেরুজালেম যেতে সুবিধা হবে।
নীল নদী- হাদীস অনুযায়ী সবার আগে ধ্বংস হবে বসরা (ইরাক) ও মিশর। মিশর ধ্বংস হবে নীলনদী শুকিয়ে যাবে, ক্ষুধা ও রক্তপাত দেখা দিবে। মিশর ধ্বংস হওয়ার পর জাযিরাতুল আরব ধ্বংস হবে (সৌদি, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, ওমান, আরব আমিরাত)। (আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান- খন্ড-৪, পৃ-৯০৭, মুসলিম)। মিশরে নীলনদী প্রবাহের উৎস হল ইথিওপিয়ার ব্লু নাইল। সেখানে দীর্ঘদিন হতে বাধ নির্মান চলছিল, এখন প্রায় শেষ। এ বাধ চালু হলে মিশরে পানিপ্রবাহ বন্ধ হবে ও শুকিয়ে যাবে। ২০১৩ সালে মুরসী বাধ নির্মান বন্ধ করার জন্য যুদ্ধ ঘোষণা করবে বলার কিছুদিন পর সামরিক অভ্যুথানে তার পতন হয়। ট্রাম্প বাধের কারণে প্রয়োজনে যুদ্ধ ঘোষণা করতে বলেন, এই বছরে তিনি নির্বাচনে হেরে যান। হাদীস বলে ইথিওপিয়া হয়ে আবকরা মিশর দখল করে নিবে।
তাবারিয়া ও যুগার- তাবারিয়া (জর্ডান, ইসরায়েল) হ্রদের নিকট সুফিয়ানীকে হত্যা করা হবে। এটা শুকিয়ে আসবে, একসময় ইয়াজুজ-মাজুজ তার সব পানি শেষ করে ফেলবে।যুগার ঝর্না নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে কোথায় তার অবস্হান, তবে দাজ্জাল আসার পূর্বে সেখানে পানি প্রবাহিত হবে না। এখন যুগার ঝর্নায় পানি নেই, খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। (আল ফিতান,মুসলিম)।