শান্তির জন্য পুরষ্কার কতটা যৌক্তিক?

কোন কাফেররা নবী-রসুলদের শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী  বলেনি, তাদের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেয় নি। বরং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ঘোষণা করেছিল।

কুরআনে বর্নিত:

সে বললঃ হে মূসা, তুমি কি যাদুর জোরে আমাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কার করার জন্যে আগমন করেছ? (সুরা ত্বাহা-৫৭)

সুরা আরাফে আছে –

ফেরাউন বলল, তোমরা কি (তাহলে) আমার অনুমতি দেয়ার আগেই ঈমান আনলে! এটা প্রতারণা, যা তোমরা এ নগরীতে প্রদর্শন করলে। যাতে করে এ শহরের অধিবাসীদিগকে শহর থেকে বের করে দিতে পার। সুতরাং তোমরা শীঘ্রই বুঝতে পারবে। (আয়াত-১২৩)।

বরং যারা ঈমান এনেছিলো, দ্বীনের পথে আহ্বান করেছিল তাদের পাগল, কবি, জাদুকর বহু উপাধি দিয়েছিল।

নূহ (আ:) এর সময় কাফেররা যারা ঈমান এনেছিল তাদের সম্পর্কে বলেছিল –

তারা বলল, আমরা কি তোমার (নূহ) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব। অথচ ইতরজনেরা তোমার অনুসরণ করছে? (সুরা আশ শুরা -১১১)

প্রতিটি যুগে নবী, রসুল, মুমিনদের কাফের, মুনাফেকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, স্বজনদের সাথে সম্পর্ক ছিন্নকারী ঘোষণা করেছিল। আর কুরআনে আল্লাহ কাফের, মুশরিকদের উল্টো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী বলেছেন ও আযাবের ভয় দেখিয়েছেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

‘ফেতনা (দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য) হত্যা অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত, ১৯১)।

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,

‘তারা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায়, আল্লাহ ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত ব্যক্তিদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত, ৬৪)

কুরআনে আল্লাহ আরো বর্ণনা করেন,

যারা আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ় অঙ্গীকারে আবদ্ধ হওয়ার পর তা ভঙ্গ করে, যে সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে অভিশাপ। তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট আবাস। (সুরা রাদ, আয়াত : ২৫)

আপনারা কার কথা সত্যি মানবেন – পরম করুনাময়, আলিমুল গায়েব, যিনি সকল কিছু জানেন আমাদের মহান রব আল্লাহ তাআলাকে না কাফের, মুশরিকদের? আজ তাদের হতে পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে বহু মুসলিম দাবিদার ব্যক্তিই গর্ব করে।

অথচ কুরআনের সর্তকবানী,

হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধু বানিয়ো না। তারা পরস্পরে একে অন্যের বন্ধু! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাদেরকে বন্ধু বানাবে, সে তাদেরই মধ্যে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমদেরকে হেদায়েত দান করেন না। (সূরা মায়িদা, আয়াত: ৫১)

আল্লাহ আরো বলেন,

ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানরা তোমার প্রতি কখনও সন্তুষ্ট হবে না; যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর। বল, ‘আল্লাহর পথ-নির্দেশ (ইসলাম)ই হল প্রকৃত পথ-নির্দেশ (সুপথ)।’ তোমার নিকট আগত জ্ঞানপ্রাপ্তির পর তুমি যদি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহর বিপক্ষে তোমার কোন অভিভাবক থাকবে না এবং সাহায্যকারীও থাকবে না। (সুরা বাকারাহ -১২০)

যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ তাদের আদর্শ অনুসরণ, স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত তারা মুসলিমদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে না। যাদের দ্বারা মুসলিম, ইসলামের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়/হয়েছে বা করার চেষ্টা করা হয় তার অংশ হিসেবে শান্তির জন্য পুরষ্কার দেওয়া হয়।

আনোয়ার আল সাদাত (মিশর), ইয়াসির আরাফাত, আবি আহমদ (ইথিওপীয়া), মালালা, ওবামা,
নার্গিস মুহাম্মাদী (ইরান, যিনি তথাকথিত নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেছিলেন) ওদেরকে শান্তিতে পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে। মূলত ওদের দ্বারা তাদের স্বার্থ হাসিল করা ও মুসলিম অধ্যুষিত দেশে তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখা হয়। আনোয়ার সাদাত, ইয়াসির আরাফাত যতদিন লড়াই করছিল ওদের প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের (ইসরায়েল) সাথে ততদিন তারা অপরাধী ছিল। যখনি যুদ্ধ বিরতি দিয়ে ওদের স্বার্থ রক্ষা পেল তখন পুরস্কৃত করলো।

তাই আমাদের কখন গর্ব করা উচিত, কখন সতর্ক হওয়া উচিত বুঝতে হবে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *