বেশ কিছুবছর ধরে মিডিয়ায় কালেমার পতাকাকে উগ্রবাদীর পতাকা হিসেবে প্রকাশ করা হচ্ছে। এর প্রকৃত দায় দ্বীন সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা ও আলেমদের দ্বীন প্রচারে ভীরুতা। দীর্ঘদিন ধরে যারা ইসলামের পতাকা নিয়ে লড়ত তাদের উগ্রবাদী, খারেজি বলে প্রচার করেছে আর আলেমরা চুপ ছিল। আর মুসলিমরাও অজ্ঞতাবশত ওদের জঙ্গি বলত। আজ এমন পরিস্থিতি কেউ কালেমার পতাকা ও শরীয়া আইন চাইলে, জেহাদের হাদীস বললেও মিডিয়া তাকে উগ্রবাদী বলে প্রচার করে। হে মুসলিম উম্মাহ!! রসুলের হাদীসকে যেভাবে বিশ্বাস করা উচিত ছিল আমরা সেভাবে মিডিয়াকে বিশ্বাস করছি। ফলে প্রকৃত সত্য হতে বহুদূরে চলে এসেছি। শেষ জমানার হাদীস দেখুন- মুসলিম শরীফ-কেয়ামতের আলামত, আল-ফিতান, ইবনে কাসীরের লেখা- ওয়াল মালাহীম, বাস্তবতার সাথে মিলান!? হাদীসে যাদের প্রশংসা ও সমর্থন করতে বলা হয়েছে মিডিয়ার অপপ্রচারে আমরা তাদের গালি দিচ্ছিনা তো?! হে আলেম সমাজ, আজও কি স্পষ্ট করে বলার সময় হয়নি? আমরা জাতিতে শুধু মুসলিম, পতাকা একটাই কালেমার, চেতনাও ইসলামের, সংবিধান একটাই আল-কুরআন। আদর্শ একজনই রসুল (সাঃ) ও জাতির পিতা একজনই ইব্রাহীম (আ)। এছাড়া ভিন্ন জাতীয়সত্তা, জাতীয় সংবিধান, জাতির চেতনা, আদর্শ ও পিতা সবই কুফর ও শিরক। অন্যদিকে তুর্কী সিরিয়ালের নামে কাই জাতীর জাতীয়তাবাদের পতাকাকে ইসলামের অংশ বুঝানো হচ্ছে। ইতিহাসে আর্তুগুলের সম্পর্কে ৪ লাাইনের চেয়ে বেশি কিছু পাওয়া যায় না। আর্তুগুলের পরিচালক Metin Gunay নিজেই তা বলছেন। তারা চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে নিজের মত কাহিনী আ্যড করেছেন। একটা কথা আমাদের পরিষ্কার হওয়া উচিত- এসব মিডিয়ার কাজ ইসলাম ছড়ানো নয়, ইসলামকে বিকৃত করা। ইউটিউবসহ, ফেইজে শুধু শেষ জমানার হাদীস শুনালে হুমকি, খুন, গুম হতে হয় অথচ এসব সিরিয়াল দিনের পর দিন চলছে। এসব সিরিয়ালের মাধ্যমে জেনা, ইসলামকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। উসমানী, উমাইয়া, আব্বাসীরা খেলাফত নয় রাজতন্ত্র ছিল। কারণ রসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন- খেলাফত থাকবে ৩০ বছর (আবুদাউদ ২/২৬৪)। এরপর হবে রাজতন্ত্রের সূচনা হবে। হাসান (রাঃ) এর ৬ মাস পর্যন্ত খেলাফত ৩০ বছর হয়। এছাড়া খলিফা হবে কোরাইশ হতে। খেলাফত কুরাইশদের মধ্যে সর্বদা বিরাজমান থাকবে। এমনকি তাদের মধ্য থেকে দু’জন লোক অবশিষ্ট থাকলেও।” (সহিহ বুখারি ৮৯/২৫৪ , সহিহ মুসলিম ৪৪৭৬)।
সকল যোগ্য খলিফারাই কোরাইশ হবেন, তার প্রমাণঃ জাবির ইনবে সামুরা থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “১২ জন খলিফা হবে। তাদের প্রত্যকেই কুরাইশ বংশীয় হবে” (সহিহ বোখারী ৯/৩২৯)।
হযরত মুআবিয়া (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা) এর মুখে শুনেছি তিনি বলেছেন, খিলাফতের পদ কোরাইশ বংশের মধ্যে থাকবে যাবত এই বংশের লোকজন পূর্ণাঙ্গ দ্বীন-ইসলামের ধারক বাহক থাকে। এরূপ ক্ষেত্রে কেহ তাদের প্রতি শুত্রু ভাবাপন্ন হলে আল্লাহ তায়ালা তাকে পরাস্থ ও অপদস্থ করবেনই। (সহিহ বোখারী ২৬৬০)। হা উসমানীদের দ্বারা ইসলামের অনেক উপকার হয়েছে তা প্রশংসিত। তবে প্রকৃত ইসলাম জানতে খেলাফায়ে রাশেদীনের জীবনী পড়ুন, ১০ জন জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীর জীবনী অনেকে জানে না তা বাদ দিয়ে এসব বিকৃত ইতিহাস হতে ইসলাম শেখার নামে জেনা ও ফেতনা ছড়াচ্ছে। অনেকে প্রোপাইল পিকে এসব অভিনেতার ছবি দেয় ভালোবেসে – অথচ এসব অভিনেতা বেশিরভাগ খ্রিস্টান নয় মুনাফেক। যদি শুধু ইসলাম ও মুজাহিদদের ভালোবাসেন বর্তমান মুজাহিদদের ছবি দিয়ে দেখুন হয় আপনার আইডি শেষ হয়ে যাবে বা আপনার বিরুদ্ধে উগ্রবাদের মামলা দিবে। উসমানীদের এর পূর্বেও উদ্দেশ্যপ্রোনীত বহুবার জনপ্রিয় করা হয়েছে। চীন-জাপান যুদ্ধের সময় জাপান উসমান সাম্রাজ্যের একজনকে নেতা বা আমীর হওয়ার জন্য প্রচুর অর্থ দেয় যেন চীনের মুসলিমরা তার নেতৃত্বে চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। এর ফলে জাপানের চীনকে পরাজিত করতে সুবিধা হত। কিন্তু মুসলিমরা পরাজিত হয়, জাপানও সাহায্য বন্ধ করে দেয়। আর তার ফল আজ পর্যন্ত উইঘুরের মুসলিমরা ভোগ করছে। এছাড়া ইসরায়েলও চেষ্টা করে উসমানী বংশের লোকদের ফিলিস্তিনে ক্ষমতায় বসাতে যেন তারা পরে ইসরায়েলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। কিন্তু উসমান বংশধররা রাজি হয়নি পরে ইয়াসির আরাফাতকে (plo) দিয়ে ইসরায়েলের অনেক সফলতা আনে আর তিনি ওদের হতে নোবেলও পেয়ে যান। এসব নিয়ে বিস্তারিত দলিলসহ লিখব ইনশাআল্লাহ। আর ধরুন – কিছু মুসলিম কালেমার পতাকা ব্যবহার করে উগ্রতা ছড়ালো তাই মুসলিমদের দোষ। সেজন্য কেন এই কালেমার পতাকাকে ইসলামের পতাকা না বলে উগ্রবাদীদের পতাকা বলা হবে। দেখুন- যারা দেশের পতাকা ব্যবহার করে তাদের অনেকে জেনাকারী, সুদখোর, মিথ্যাবাদী। তার জন্য এই পতাকাকে মিথ্যাবাদী, জেনাকারীর পতাকা বলা হয়, নাকি দেশের পতাকা বলা হয়!”” তাহলে ইসলামের পতাকার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আচরন কেন!?