যে দৃশ্য প্রতিদিন চলছে গাজায়, সিরিয়ায়, ইয়েমেনে আজ সেই দৃশ্য আমাদের দেশে বিদ্যমান। জ্বলন্ত পোড়া দেহ, শিশুদের লাশ, স্বজনের আকুতি মাইলস্টোন যেন এক টুকরো গাজা।
দুর্ঘটনা যেকোন সময় ঘটতে পারে।
সামরিক ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোতেও এরূপ ঘটনার উদাহরন রয়েছে। তাই পাইলটের দোষ খোজাটা বোকামী। কেউ ইচ্ছেকৃত নিজের জীবন দিবে না।
যে কোন ঘটনা ঘটলে ঘটনাস্থলে শত শত লোক সমাগম ঘটে। তাদের মধ্যে খুব অল্পই সাহায্যকারী হয়। বেশিরভাগ ভিডিও করতে ব্যস্ত থাকে, অধিকাংশ তাদের ভিউ ব্যবসার ধান্দায় থাকে। আর সাংবাদিকরা নিহত, আহত স্বজনদের সাহায্য ও সান্তনার বদলে প্রশ্ন ছুড়ে পেরেশানী করে তুলে।
ওদের কাছে সংবাদ, ভিউ কমানো ব্যবসা। কিন্তু মানুষের কষ্ট, দুঃখ, দূর্দশা তাদের মাঝে কি অনুভূতি সৃষ্টি করে!? হাজার হাজার অর্থ সংবাদ, ভিউ ব্যবসা করে আয় করার পর ও অল্প কিছু অর্থায়ন করে অসহায়দের সাহায্য তারা করে না। অথচ – মুসলিম পরস্পর ভাই ভাই। এমনকি অসহায় বিধর্মীকে উদ্ধার করতেও তার জানমাল নিয়ে ঝাপিয়ে পড়বে এটাই দায়িত্ব।
পূর্বে আমরা দেখেছি – হাজার মানুষের সামনে প্রকাশ্যে হত্যা করা হচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ নির্বিকার, প্রতিবাদ বা প্রতিকার করে না। কিছু লোক ভিডিও করে শুধু।
যে নিরাপত্তা, পরিবারের ঝুকির ভয়ে আমরা প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করি না। আল্লাহ চাইলে আগুন, দুর্ঘটনা দিয়ে আমাদের জানমালের উপর আঘাত করতে পারে। তখন কেউ কি উদ্বার করতে পারবে!?
এসকল ভিউ ব্যবসায়ীর অনেকে ফিলিস্তিন, শেষ জমানা নিয়ে মনগড়া ব্যাখা করে অর্থ আয় করে। অথচ নিকটবর্তী রোহিঙ্গাদের জুলুম নিয়ে তারা চুপ। রোহিঙ্গাদের বিদ্রোহী নেতাকে বন্দী করে রাখা হয়েছে তারা যেন নিরবতা পালন করছে। দেশের বড় বড় জুলুম, অত্যাচার নিয়ে নিরব ভূমিকা পালন করে।
এদেশে আজও এমন যুবক, জনসাধারণ রয়েছে কোন বিপদ, দুর্ঘটনায় মানুষের পাশে দাড়ায় বিনা স্বার্থে। কিন্তু যখন দুর্ঘটনাস্থল ও সড়কগুলো খালি রাখা প্রয়োজন – উদ্ধার ও হাসপাতালে নেওয়ার জন্য। অনেক ভিউ ব্যবসায়ী ও অতি উৎসাহী মানুষগুলো বাধা হয়ে দাড়ায়।
যখন চিৎকিসার জন্য রোগী হাসপাতালে নেওয়া হয় তখন রাজনৈতিক নেতারা কর্মী নিয়ে হাজির হয়। কোন ঘটনা দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন, অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা লক্ষ্য হয়। আপনারা হাসপাতালে ভীড় না করে রোগীর স্বজনদের কাছে যান। তাদের আর্থিক ও মানসিকভাবে সাহায্য করুন।
ডাক্তারদের তাদের দায়িত্ব পালন করতে দিন। পোড়া শরীরের ভয়াবহ যন্ত্রণা এমন যে পুরো দুনিয়ার সুখ ভুলিয়ে দেয়। তাই আপনাদের দেখলে ওদের কষ্ট কমবে তা নয়।
ভাইয়েরা ওদের প্রতিরোধ ও পরিহার করুন- যাদের লক্ষ্য শুধু ভিউ ব্যবসা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল।
স্বজনরা যখন রোগী নিয়ে পেরেশানীতে থাকে – ওরা সাহায্যের বদলে ক্যামেরা ও অবান্তর প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়।
কত অদ্ভুত প্রশ্ন- আপনার সন্তানকে জীবিত দেখে কেমন লাগছে!? সন্তানকে হারিয়ে আপনার কেমন বোধ হচ্ছে !?
পিতামতা সন্তানকে জীবিত দেখে খুশি ও হারিয়ে সর্বস্য হারানোর কষ্ট পাবে অতি স্বাভাবিক। অথচ আমাদের দায়িত্ব হলো – জীবিতদের চিৎকিসার ব্যবস্থা করা, মৃতদের দাফন ও তাদের জন্য দোয়া করা, তাদের স্বজনের যত্ন নেওয়া।
আলহামদুলিল্লাহ অনেক তরুন, যুবক অর্থ, রক্ত দিয়ে সাহায্য করছে। বাকীদের তাদের হতে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
আল্লাহর নিকট কি জবাব দিবেন- আপনার অসহায় ভাইদের সাহায্য না করে ভিউ ব্যবসা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। অথচ আশা করেন ফিলিস্তিন, গাজা মুক্ত করবেন এতই সহজ।