বৈধ শাসন ক্ষমতা আসলে কি?

মদের দোকানে দাঁড়ি, টুপিওয়ালা, সালাত পড়া কর্মচারী রাখলেই মদ হালাল হয় না। তেমনি রাষ্ট্রীয় আইনে মানবরচিত কুফর, শির্ক রেখে দাঁড়ি, টুপিওয়ালা, পরহেজগার নামধারী কয়েকজন পরিচালক বা কর্মকর্তা থাকলেই তা বৈধ (ইসলামী) হয়ে যায় না। সবসময় জালেম শাসক, গণতান্ত্রিক কুফরের বিরুদ্ধে আমরা ছিলাম, আছি, থাকবো ইনশাআল্লাহ। অপবাদ দেওয়ার আগে অন্তত একজন মানুষের আকীদা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখা উচিত। ফেরাউন ও তার সমর্থকদের দ্বীনের দাওয়াহ দিলে – উল্টো দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনতো। অথচ ইসলাম ও রসুলদের বিরোধিতা করে তারা আল্লাহদ্রোহী হয়েছিল।

আল্লাহ বলেন,

“নিশ্চয় ফির‘আউন দেশে উদ্ধত হয়েছিল এবং তার অধিবাসীকে নানা দলে বিভক্ত করেছিল। তাদের একদলকে সে দুর্বল করে রেখেছিল, যাদের পুত্রদেরকে সে হত্যা করত আর কন্যাদেরকে বাঁচিয়ে রাখত। নিশ্চয় সে ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের অন্যতম।” (সুরা কাসাস – ২৮:৪)।

গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র নিয়ে উম্মাহ আজ কত দলে বিভক্ত। এগুলোর তৈরি যুগের ফেরাউনরা করেছে জাতিকে বিভক্ত করার জন্য। বিগত জালেম শাসকের বিরুদ্ধে বললে বিরোধী দলের দালাল, দেশদ্রোহী উপাধি দিত। আজকের জালেম ও তার দোসররা তাই দিচ্ছে! সত্য দ্বীন প্রচার করুন, শাসকদের তোষামোদি ছাড়ুন।

শাসক ইসলাম অনুযায়ী শাসন করলে তিনি মাননীয়, মহান। আর এর বিপরীত হলে তাকে সংশোধনের দাওয়াহ দেওয়া উচিত। কিন্তু শাসক আপনাদের প্রিয় ব্যক্তি হলে তার সকল কিছু জায়েজ মনে করেন তাহলে নিশ্চিত ব্যক্তি পূজারী, মুসলিম নয়।

আল্লাহ বলেন-

তারা আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের পন্ডিত-পুরোহিতদেরকে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে এবং মারয়্যামের পুত্র মসীহকেও। অথচ তাদেরকে শুধু এই আদেশ করা হয়েছিল যে, তারা শুধুমাত্র একক উপাস্যের উপাসনা করবে, তিনি ব্যতীত (সত্য) উপাস্য আর কেউই নেই, তিনি তাদের অংশী স্থির করা হতে পবিত্র। (সূরা তওবা, ৩১)

এর ব্যাখ্যা আদী বিন হাতেম (রাঃ)-এর বর্ণনাকৃত হাদীস হতে পরিষ্কার হয়ে যায়। তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ)-এর মুখে এই আয়াত শুনে আরজ করলাম যে, ইয়াহুদী-নাসারারা তো নিজেদের আলেমদের কখনো ইবাদত করেনি, তাহলে এটা কেন বলা হয়েছে যে, তারা তাদেরকে রব বানিয়ে নিয়েছে? তিনি বললেন, এ কথা ঠিক যে, তারা তাদের ইবাদত করেনি।

কিন্তু এটা তো সঠিক যে, তাদের আলেমরা যা হালাল করেছে তাকে তারা হালাল এবং যা হারাম করেছে তাকে তারা হারাম বলে মেনে নিয়েছে। আর এটাই হল তাদের ইবাদত করা। (সহীহ তিরমিযী)

কেননা, হারাম-হালাল করার এখতিয়ার কেবলমাত্র আল্লাহর। এই এখতিয়ার ও অধিকারের কথাকে যদি কোন ব্যক্তি অন্যের আছে বলে বিশ্বাস করে নেয়, তাহলে এর মানে হবে, সে তাকে রব মেনে নিয়েছে।

উক্ত আয়াতে লোকদের জন্য বড় সতর্কতা রয়েছে যারা নিজেদের নেতা, ইমাম-বুযুর্গদেরকে হালাল-হারাম করার অধিকার দিয়ে রেখেছে এবং যাদের কাছে তাঁদের কথার তুলনায় কুরআন হাদীসের উক্তির কোন গুরুত্ব নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *