বিশ্ববিদ্যালয়, এলাকাবাসী সংঘর্ষ দায়ভার কার?

আমাদের দেশের এলাকাবাসী/শিক্ষার্থী উভয়ের মাঝে গোত্রবাদ বিদ্যমান। আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাই করুক ন্যায় অথবা অন্যায় তার পক্ষেই থাকতে হবে। তাই বিভিন্ন কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পারস্পারিক সংঘর্ষ চলে। একই বিষয় এলাকাবাসীর মধ্যে বিদ্যমান এলাকায়-এলাকায়, পাড়ায়-পাড়ায় সংঘর্ষ চলে।

আল্লাহ আমাদের চোখ, কান, হাত, বিবেকের হিসাব নিবেন – আপনি, আমি অন্যায়কারীর পক্ষে ছিলাম না মজলুমের। রসুল, সাহাবীগন নিজ গোত্র ও বংশের বিরুদ্ধে গিয়ে হক্বের পক্ষ লড়াই করেন। আর জাহেলী যুগে লড়াই হত গোত্রবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, পিতৃধর্ম (শির্কী ধর্ম) রক্ষার নামে।

রাসুলের (সা:) সময় মদীনার আনসাররা মক্কার মুহাজির ও রাসুলের (সা:) পক্ষ নিয়ে কেন বদর যুদ্ধে কোরাইশদের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন পক্ষান্তরে এক যুদ্ধে মদীনার মুনাফিক উবাই ঘোষনা করেছিল- “এবার যুদ্ধ শেষে সম্মানিত ব্যক্তি অপমানিত ব্যক্তিদের বের করে দেবে।”

এখানে সম্মানিত ব্যক্তি বলতে সে নিজকে ও অপমানিত ব্যক্তি বলতে রাসুল (সা:) কে বুঝিয়েছে। উবাইর ছেলে আবদুল্লাহ ছিলেন দ্বীনদার মুসলিম সে তার বাবাকে বলে “আমি আপনাকে মদীনায় প্রবেশ করতে দেব না যতক্ষন না আপনি স্বীকার করে নেন যে, আপনি অসম্মানের পাত্র ও রাসুল (সা:) সম্মানের পাত্র। ছেলের রণভঙ্গি দেখে পিতা বাধ্য হলেন স্বীকার করতে। (সীরাতে ইবনে হিশাম, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)।

আবূ মূসা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্রশ্ন করা হলো, যে ব্যক্তি বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য যুদ্ধ করে, যে ব্যক্তি গোত্রের স্বার্থ রক্ষার জন্য যুদ্ধ করে, যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে এগুলোর মধ্যে কোনটি আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ (বলে গণ্য হবে)? তখন (জবাবে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি এ উদ্দেশে যুদ্ধ করে যে, আল্লাহর বাণী সমুন্নত হবে, (কেবল) সে আল্লাহর রাস্তায় (বলে গণ্য হবে)।

সহিহ মুসলিম ৪৮১৩ (প্রশাসন ও নেতৃত্ব অধ্যায়)

সাহাবীদের কাছে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ছিল ভূখন্ড, পরিবার সবকিছুর উর্ধ্বে। তারা আল্লাহর জন্য ভালোবাসতেন আল্লাহর জন্যই শত্রুতা করতেন।

আলোচনায় বহু কিছু আনা যায়- সহশিক্ষা কতটা জায়েজ, মাহরাম পুরুষ ল-নারীদের গৃহভাড়া দেওয়া। ছেলে মেয়েদের অবাধ চলাফেরা, পিতা-ভাইয়েরা দাইয়ুস হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষিতা হতে গিয়ে অনেক নারী যেন আধুনিক পতিতা হয়ে যাচ্ছে!? মূল্ সমস্যা হলো- ইসলাম বহির্ভূত যত কাজের সমর্থন দিবেন তা বিপর্যয়ের কারণ হবে।

আর যেকোন সংঘর্ষ ঘটলে নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি ভাঙ্গচুর, লুটপাত, গরু-মাছ, জিনিসপত্র চুরিকে জায়েজ করে চলছে – এই যেন গনিমতের মাল। চিন্তা করুন ওরা শিক্ষা শেষে যখন প্রশাসনের বড় বড় চাকরি করবে দেশ, নিরীহের সম্পদ কিভাবে লুটপাত করবে। আর ক্ষমতার জন্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রও চলে- দেশের যত সমস্যা হোক একদলের নিকট সমাধান/দাবি নির্বাচন।

আরেকদল ইসলামের নামে রাজনীতি করে অথচ এখন আর ইসলামী রাষ্ট্র চায় না। সাবেক জালেম শাসকরা কোন ঘটনা ঘটলে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বিরোধী দলের উপর দোষ চাপতো। আর বর্তমান যত দোষ সাবেক জালেম ক্ষমতাসীনদের।তাহলে কি বলতে চান- ক্ষমতা পেয়েও আপনারা সাবেক জালেমদের চেয়ে দুর্বল?

একই দেশে, একই সমাজে আমাদের বেড়ে উঠা। একই মেঠোপথ, সড়ক, রাজপথে চলে, একই স্কুল-মাদ্রাসায় আমাদের পড়াশোনা। একই মাঠে খেলাধুলা ও আড্ডা, একই নদী-পুকুরে আমাদের আনন্দ গোসল। একই আযান শুনে একমাত্র রসুলকে (সা:) আদর্শ মেনে একই ঈমামের পিছনে কাতারবন্দী সালাত পড়া। জুমা, ঈদে গলা গলা মিলানো। কিন্তু সামান্য ঘটনায় কেন আমরা একে অপরের গলা কাটতে চাই?

কাদের ক্ষমতা/রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে আমাদের ভাই – বন্ধুরা একে অপরের শত্রুতে পরিণত হলাম। এসব নেতারা ক্ষমতা পেলে নিজেদের ফায়দা লুঠে। ক্ষমতা হারালে আপনাদের অসহায় ফেলে পালায়। কিসের জন্য ভাই ভাইয়ের জীবন নিতে চায়, দিতে চায়। এসকল ক্ষমতালোভী কাপুরুষ নেতাকর্মীদের!? যারা ব্যক্তি ও পরিবারিক জীবনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করেনি।

আশা করেন কিভাবে – তারা রাষ্ট্রে ইনসাফ আনবে? আর ইসলাম ভিন্ন অন্য কোন বিধান দ্বারা কি জুলুমমুক্ত হবে? ইনসাফ আশা করলো অথচ সেই দ্বীন ইসলামকে অস্বীকার করলো। কারণ আল্লাহ একমাত্র ইসলামকেই আদল ও ইনসাফের জন্য পাঠিয়েছেন। যারা ভাবছেন আপনাদের নেত্রী/নেতার অনুগত্য করা  আপনাদের কল্যাণ, মুক্তি দিবে।

রসুল, সাহাবীরা জীবন উৎসর্গ করেছেন দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *