বন্ধুত্ব ও প্রতারণা

আপনার চারপাশের পরিচিতদের সংখ্যা বেশি কিন্তু আপনার সততা ও স্পষ্টবাদীতার জন্য বন্ধুর সংখ্যা হাতেগোনা কয়জন। তাহলে হতাশ হবেন না বরং খুশি হন কারণ নবীরা ছিল স্পষ্ট দ্বীনের প্রচারক। পরিচিতদের অধিকাংশরা ছিল তাদের শত্রু অথচ স্বয়ং আল্লাহ তাদের বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেন। আর আল্লাহর চেয়ে উত্তম বন্ধু কে হতে পারে!! আল্লাহপাক বলেন- “জালেমরা একে অপরের বন্ধু আর আল্লাহ হল মুত্তাকি তথা পরহেজগারদের বন্ধু। (সুরা জাসিয়াহ-১৯)। কাউকে বিশ্বাস করে প্রতারিত হয়েছেন, নিজেকে বোকা ভেবে রেগে যাওয়াটা আসলে বোকামি। কারণ সে আসলে আপনার ক্ষতি করেনি বরং নিজেরই ক্ষতি করেছে আর স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মুনাফিক চিনতে পারেন নি। তারা রাসুলকে (সাঃ) ধোকা দেওয়ার চেষ্টা করেন আল্লাহ তাদের ধ্বংস করেন ও তাদের স্হান জাহান্নাম। আর অপরদিকে রসুল ও সাহাবীরা ছিল দুনিয়াতেও বিজয়ী আর তাদের সর্বোচ্চ জান্নাতুল ফেরদৌস দেওয়া হবে। দীর্ঘদিন জীবনে অভাব-অনটন লেগেই আছে, বার বার প্রার্থনার পর স্বচ্ছলতা আসছে না। এটাই সফলতা, সাহাবীদের জীবন ছিল দারিদ্র্যতার সাথে বসবাস। তারা সামান্য খাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন আর তাদের প্রার্থনা ছিল আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়!! অপরদিকে সীমাহীন রিযিক কাফেরদের অহংকারী করে তুলে ফলে ইহকাল ও পরকালে তারাই ব্যর্থ হয়। এমনকিছু হারিয়েছেন যা আপনার কাছে অমূল্য, ভাবছেন এর বিকল্প কিছু হতে পারে না। বরং সবর করেন আল্লাহ এর চেয়ে অধিক দিতে পারেন যা আমাদের ধারনাতে নেই। রাসুলুল্লাহর (সাঃ) স্ত্রী উম্মে সালামার সাবেক স্বামী আবু সালামা ইন্তেকাল করেন তিনি এই হাদীসটি জানতেন- যখন কোন মুসলিমের উপর কোন বিপদ বা কষ্ট আসে তখন সে এই দোয়া পড়ে-

إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ اللَّهُمَّ أْجُرْنِي فِي مُصِيبَتِي وَأَخْلِفْ لِي خَيْرًا مِنْهَا

ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন, আল্লাহুম্মা আজিরনী ফী মুসীবাতী ওয়াখলুফ লী খাইরাম মিনহা। “আমার এই বিপদে আমাকে প্রতিদান দিন এবং আমাকে এর চেয়ে উত্তম বিনিময় প্রদান করুন।” তিনি উক্ত দোয়া পড়েন আর ভাবছিলেন আবু সালামা হল শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তি, আবু সালামার চেয়ে উত্তম ব্যক্তি আমি কাকে পাব?! আল্লাহ তায়ালা তাকে মানবজাতির শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তি রাসুলের (সাঃ) স্ত্রীর মর্যাদা দেন। আমরা সামান্য কিছু হারিয়ে নিরাশ হয়ে যাই অথচ আদম (আঃ) জান্নাত ও জান্নাতের সঙ্গী স্ত্রীকে হারিয়েও হতাশ না হয়ে আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশায় ইবাদত করে যান। আল্লাহ তাকে স্ত্রী ও জান্নাত ফিরিয়ে দেন, ও তার মুমিন সন্তানগণকে জান্নাতের অধিবাসী করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *