প্রচলিত ভূল

আমাদের সমাজে বহুবছর ধরে কিছু ভুল জনপ্রিয় হয়ে গেছে যা বাস্তবতা ও কুরআন-হাদীসের বিপরীত।

১. ব্যবহারে বংশের পরিচয়- একই পিতা আদম (আঃ) এর সন্তান হাবিল, কাবিল দুরকম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। একজন ছিল সৎ, ধৈর্য্যশীল, তাকওয়াপূর্ণ আর অপরজন চরম হিংসাত্মক খুনী। ইব্রাহীম (আ) ছিলেন মুসলিমদের আর্দশ অথচ তার পিতা ছিল পাপিষ্ঠ নমরুদের সেবক। রাসুলের (সাঃ) চাচা আবু লাহাব, হামজা (রাঃ) বিপরীত চরিত্রের অধিকারী। আবু লাহাবকে অভিশাপ দিয়ে আল্লাহ সূরা লাহাব নাযিল করেন আর হামজা (রাঃ) কে বীরত্বপূর্ণ অবদানের কারণে শহীদদের সর্দার হিসেবে ঘোষণা করেন। আসলে ব্যবহারে বংশের নয় ব্যক্তির পরিচয়। তাই কোন ব্যক্তিকে বংশ ও জন্মগত কারণে ঘৃণা ও ভালোবাসা নয় তার ব্যক্তিত্ব অনুযায়ী উপযুক্ত সম্মান হয়। কারণ তার জন্ম তার ইচ্ছায় হয়নি তা স্রষ্টা কতৃক নির্ধারিত কিন্তু আচরন তার ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ।

২. নিন্দুকরে ভালোবাসাঃ নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো, কবির এই কুফরী উক্তি অনেকে উচ্চারণ করেন।আল্লাহপাক গীবতকে ঘৃণিত ঘোষনা করেছেন। আল্লাহপাক বলেন- ধ্বংস তাদের জন্য যারা অগ্রে পশ্চাৎতে নিন্দা করে বেড়ায়। (সুরা হুমাজাহ-১)। আল্লাহ যে দোষের কারণে নিন্দুকরে অভিশপ্ত করেন, সে কারণে তাকে ভালোবাসা আল্লাহর বিরোধিতার শামিল। পাপে অনুতপ্ত, ঘৃণা করা আর নেক কাজকে ভালোবাসা মুমিনের বৈশিষ্ট্য।

৩. অসম্ভব বলে কিছু নেইঃ আর একটা বহুল আলোচিত ভুল হল ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, অসম্ভব বলে কিছু নেই। মূলত শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই অসম্ভব বলে কিছু নেই, তিনি যা ইচ্ছে করেন তাহাই হয়। মানুষ চাইলে কি অমর হতে পারে!!? সেকি তার মৃত্যুকে ঠেকাতে পারে, পারে কি বার্ধক্য রোধ করতে, পারে কি দুরারোগ্য রোগী ব্যাধি হতে সুস্হতা লাভ করতে? সামান্য একটা ভাইরাসের কাছে সারাবিশ্ব আজও অসহায় আত্মসমর্পণ করছে, এখন সে নাস্তিকগুলো কই!!? যারা বলে ইচ্ছে থাকিলে উপায় হয়, লাখো মানুষের ইচ্ছে থাকাস্বত্বেও কেন ভাইরাস প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। মুসলিমের বিশ্বাস আল্লাহর ইচ্ছায় তার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বান্দা প্রচেষ্টারত হলে সফল হয়। তাই সে ইনশাআল্লাহ বলে। রাসুল (সাঃ) ইনশাআল্লাহ বলেননি অথচ তার একান্ত ইচ্ছে ছিল কুরআনের আয়াত নাযিল হোক কিন্তু আল্লাহ কুরআনে এই ব্যাপারে তাকে নির্দেশনা দেন। আল্লাহপাক বলেন- “কোনকিছুর ব্যাপারে তুমি মোটেও বলবে না আমি এই কাজ আগামীকাল করব। তবে আল্লাহ যদি চান, আর যদি ভুলে যাও, তুমি রবের জিকির কর এবং বল, আল্লাহ আমাকে এরচেয়ে নিকটবর্তী সত্য পথের হেদায়েত দিবেন। (সুরা কাহাফ- ২৩-২৪)। আল্লাহপাক আরও বলেন- তোমরা রাব্বুল- আলমীনের অভিপ্রায়ের বাহিরে কোনকিছু ইচ্ছে করতে পার না। (সুরা তাকভীর- ২৯)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *