জুমা মোবারক ফেতনা

মোবারক শব্দের অর্থ বরকতময়, কল্যাণময়, শুভ। জুমা মোবারক অর্থ শুভ জুমা দিবস। আমাদের দেশে নতুন ফেতনা হল জুমা মোবারক শব্দটি। স্কুল-কলেজ হতে শুরু করে মাদ্রাসার ছাত্র সবাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় জুমা মোবারক। অথচ রসুলুল্লাহ (সাঃ), সাহাবী, তাবেয়ীরা, মুজাতিদগণ বহু বছর ধরে জুমা পড়েছেন তারা কখনও এটা ব্যবহার করেন নি। তারা যেন জুমা দিনের গুরুত্ব কম বুঝেছেন বরং তারা জুমা দিনের গুরুত্ব দিতেন আমল দ্বারা। এটা ইবাদতের জন্য বিশেষ দিন আর উদযাপন ও আনন্দের জন্য বিশেষ দিন হল দুই ঈদ। সাহাবীরা ঈদের দিনে একে অপরকে “তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম” অর্থঃ “আল্লাহ আমাদের ও আপনাদের পক্ষ হতে (নেক আমল) কবুল করুন” এভাবে শুভেচ্ছা জানাতেন। কিন্তু জুমার দিনে কিছু বলা হতে বিরত থাকতেন। এখন বলবেন খারাপ কি আছে!?

১. প্রথম কথা হল- কে মহাজ্ঞানী আল্লাহ না আপনি? আল্লাহ যা বলেন নি তাই উত্তম, আর রসুল (সাঃ) যা করেন নি তা যদি কেউ উত্তম মনে করে তাহলে সে নিজেকে রসুলুল্লাহর (সাঃ) চেয়ে উত্তম দাবী করল।

২. শয়তান খুশি হয় বিদআত করলে কারণ অন্যান্য পাপীরা যে কোন সময় তওবা করতে পারে আর বিদআতকারী সওয়াবের নিয়তে করে সে কারণে সে তওবা করে না।

৩. শয়তান প্রতিটি বিদআত ও কর্ম ভালো আকারে শুরু করায়। ধীরে ধীরে তার আসলরূপ প্রকাশ করে তখন মানুষ এতে আসক্ত হয়ে যায় আর ফিরে আসতে পারে না। যেমন- প্রথমদিকে চলচ্চিত্র ছিল শালীন ও মানুষকে সামাজিক মূল্যবোধ শেখানোর নামে শুরু হয়েছিল, ক্রিকেট খেলাকে মুসলিমদের কাছে জনপ্রিয় করা হয় অশ্লীল বিনোদন ও মাদকাসক্ত হতে দূরে রাখার জন্য। আজ ক্রিকেটে অশ্লীলতা ও জুয়া, দীর্ঘসময় ধরে খেলা দেখার কারণে মানুষ দ্বীন হতে দূরে সরে যাচ্ছে। আর বর্তমানে জুমা মোবারক নাম দিয়ে ছবি তুলে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে জুমার দিবস নয় নিজের প্রচার করছে যা রিয়া (অহংকার) অথচ ফজর সালাতে অধিকাংশ লোকের খবর নেই। ভবিষ্যতে হয়তো দেখবেন বেপর্দা নারীরা ছবি তুলে জুম্মা মোবারক জানাচ্ছে।

৪. রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- যে ব্যক্তি আমল করল যার ব্যাপারে আমার নির্দেশ নাই তা প্রত্যাখাত। (সহিহ মুসলিম- অধ্যায়- বিচার ফায়সালা)

৫. ইতিমধ্যে আরেকটা ফেতনা হল- জুমার দিনের উছিলায় ক্ষমা চাওয়া। আচ্ছা সাহাবীরা কি এই ধরনের দিবসের উছিলায় ক্ষমা চেয়েছিলেন!? সর্বোত্তম মাস রমাদানের উছিলায় নয় বরং সিয়াম ও ইবাদতের উছিলায় মানুষ ক্ষমা চায় তেমনি জুমার দিনের ইবাদতের উছিলায় ক্ষমা চাওয়া উচিত, দিবসের উছিলায় নয়। সত্যিই যদি জুমার দিনের বরকত পেতে চান, এই দিন সুরা কাহাফ পাঠসহ রসুলের (সাঃ) সুন্নাতী আমল করা উচিত৷ ইনশাআল্লাহ সুরা কাহাফের কিছু বিশ্লেষণ তুলে ধরবো যা সাধারণত কেউ বলেনি এদেশে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *