আমাদের বন্ধু ও শত্রু!

মুমিনদের বন্ধুত্ব ও শত্রুতার কারণ হবে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য অর্থাৎ ইসলামের জন্য। কোন ব্যক্তিগত সংঘাতের কারণে নয়। কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা দল, সংগঠন শত্রু নয় বরং শত্রু হল এসকল সিস্টেম, আদর্শ এবং যারা জুলুম ও ইসলাম পালন করতে বাধা দেয় তারা।

আর যারা এসকল সিস্টেম, আদর্শ, রক্ষা ও পরিচালনা করে এবং এসব জুলুম নীতি ছেড়ে হক্বের পথে আসার আহ্বান করলে উল্টো মুমিনদের বিরুদ্ধে জুলুম করে তারাই ইসলাম ও মুমিনদের শত্রু।

বার বার জালেমের পরিবর্তন ঘটে, জুলুমের রীতিনীতি একই থাকে। সেই নীতিতে আবার নতুন কেউ ক্ষমতা পেয়ে জালেম হয়ে উঠে। প্রকৃত ইসলাম বাদে অন্য কোন আইন দ্বারা শাসন করলে জুলুম হবেই। আর শতভাগ শরীয়া বাদ দিয়ে ধীরে ধীরে শরীয়া প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেও কারো না কারো উপর জুলুম হবেই।

ধরুন- কোন রাষ্ট্রে মুমিনদের জন্য যাকাত, উসুর ফরজ করা হয়েছে, অথচ কাফেরদের জন্য জিজিয়ামুক্ত করা হলো। তখন কাফের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে মুমিনের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। আবার কোথাও চুরির শাস্তি দিলেও যাকাত ফরজ না করলে ক্ষুধা, অভাবের তাড়নায় চুরি বাড়বে।

জেনা করলে শাস্তি থাকলেও নারীদের অবাধ চলাফেরা, পর্দা প্রথা ইচ্ছেধীন করলে ফাসেক পুরুষ, নারী জেনায় জড়িয়ে যাবে। আবার একদিকে পতিতালয় চালু থাকবে, অপরদিকে নারী-পুরুষকে জেনার সাজা দিবে, হালাল বিবাহ কঠিন ও ব্যয়বহুল করবে। তাহলে ধনীরা পতিতালয়ে ঠিকই যাবে কিন্তু গরীব হালাল বিবাহ করে নিজের চরিত্র পাপমুক্ত রাখাটা কষ্টকর হবে। তবে সর্বোত্তম মুমিন প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেকে পাপমুক্ত রাাখার চেষ্টা করবে।

ইসলাম হলো পরিপূর্ণ জীবনবিধান যা আদল (ভারসাম্য) ও ইনসাফ (ন্যায়বিচার) প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমান হাস্যকর নীতি দেখুন- একদিকে পতিতালয়, মদ, সিগারেটের লাইসেন্স মিলে অন্যদিকে ভেজাল অভিযান, দ্রব্যমূল্য তদারকির নামে অনেক ছোট ছোট ব্যবসায়ীর উপর কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে।

বহু অভিজাত হোটেল আছে – যেখানে অবৈধ আয়ের লোকগুলো লাখ লাখ টাকা খরচ করে মদ, প্রেমিকাকে নিয়ে আনন্দ উৎসব করে অথচ যাকাত ও আয় কর দেয় না। এসব হোটেলে হালাল পানীয়, খাবারের দামও চরমমূল্যের। এসব স্থানে কি অভিযান চলে বা কারা এত অর্থ ব্যয় করে কতটা হিসাব নেওয়া হয়?

যে কোন ব্যক্তি, আলেম ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায় আমাদের উচিত তাদের সাহায্য, সমর্থন করা। কিন্তু যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার নামে কুফর, শির্ক পদ্ধতি বর্জন করে না- তারা নিজে মুসলিম না হয়ে কিভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে? বরং দেখা যায় ক্ষমতার জন্য তারা আরেকদল মুসলিম পরিচয়দানকারীর বিরোধিতায় কঠোর অথচ জালেম ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে নিরব।

মসজিদগুলোর দিকে তাকান! মসজিদ, মাদ্রাসার নাম লক্ষীপুর, দুর্গাপুর, নারায়নের নামে। আর নামগুলো মসজিদ, মাদ্রাসার দেওয়ালে স্থান পায়। আমরা আজ পর্যন্ত মসজিদ হতে শিরককে মুক্ত করার সাহস অর্জন করতে পারি নি।

দূর্গা ও লক্ষী শিরকী দেবীর নাম আর পুর মানে শহর। আজ কোন মুসলিম তার সন্তানের নাম যদি দূর্গা, লক্ষী, নারায়ন রাখে তাকে কাফের ফাতওয়া দেওয়ার মানুষের অভাব হবে না। অথচ আল্লাহর পবিত্র ঘর মসজিদ ও দ্বীন শিক্ষার স্থান মাদ্রাসার পাশে এসব নাম স্থান পায় তখন সবাই চুপ। রসুল (সাঃ) ইয়াসরিবের নাম বদলে রাখেন মদীনা তাইয়্যেবা বা পবিত্র স্হান। আলহামদুলিল্লাহ অনেকে আমাদের আহ্বানে নাম পরিবর্তন করেছে।

মসজিদের অনেক সভাপতি- কুফর, শির্ক, দুর্নীতি, সুদ ও জেনায় লিপ্ত। অথচ ঈমাম অর্থ নেতা,সভাপতি তার নির্দেশে মসজিদ চলবে।যারা মসজিদে সালাত পড়াবার,খুতবা দেওয়ার যোগ্যতা রাখে না তারা কিভাবে সভাপতি হয়। যেহেতু ওরা রক্ষনাবেক্ষনার দায়িত্ব পালন করে খাদেম বলা যেতে পারে।

আজও যদি মসজিদ হতে কুফর, শির্ক, বিদআত মুক্ত না করা হয় এবং ফাসেক, জালেমদের বদলিয়ে
দ্বীনদার ব্যক্তির হাতে নেতৃত্ব না দেওয়া হয় সমাজ, এলাকায়, রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠা কিভাবে হবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *