মানুষের হৃদয় প্রতিনিয়ত প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষায় বিভোর থাকে, কিন্তু তাকে প্রায় এমন কিছু হারাতে হয় যা তার জন্য অপ্রত্যাশিত ও কষ্টকর। প্রায় যখন এরকম সময়ের সম্মুখীন হই বা এরুপ ঘটে তখন মনে পড়ে আমাদের মা উম্মুল মোমেনীন সালামা (রাঃ) এর কথা যা আল্লাহর প্রতি আশা আরও বাড়িয়ে দেয়। হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, একদিন আমার স্বামী আবু সালামা (রাঃ) রসুলুল্লাহ’(সাঃ) এর দরবার হতে আমার নিকট আসেন এবং অন্ত্যত খুশী মনে বলেন- আজ আমি এমন একটি হাদীস শুনেছি, যা শুনে আমি খুবই খুশি হয়েছি। যখন কোনো মুসলিমের উপর কোনো কষ্ট বা বিপদ আসে এবং সে পড়ে- “আল্লাহুমা আঝিরনি ফি মুসিবাতি ওয়াখলুফ লি খাইরাম মিনহা। অর্থ – হে আল্লাহ! আমার এ বিপদে আমাকে প্রতিদান দিন এবং আমাকে এর চেয়ে উওম বিনিময় প্রদান করুন।” এ দোয়ার বরকতে আল্লাহ অবশ্যই তার বান্দাকে উত্তম বিনিময় ও প্রতিদান দিয়ে থাকেন।উম্মে সালমা (রাঃ) এই দুআটি মুখস্থ করেন, তার স্বামী আবু সালামা (রাঃ) মারা গেলে ইন্না —— রাজিউন ও এই দুআটি পড়েন। কিন্তু তার মনে ভাবনা আসে আবু সালামা (রাঃ) হতে ভালো লোক তিনি কাকে পাবেন? তার ইদ্দত শেষ হবার পর স্বয়ং রসুল (সাঃ) এর জন্য তার বিয়ের প্রস্তাব আসে ও বিয়ে হয়। সালমা (রাঃ) হারিয়েছিলেন গোত্রের উত্তম এক ব্যক্তিকে, তার সবর ও আল্লাহর কাছে দোয়া, ভরসার বদৌলতে আল্লাহ তাকে মানবজাতির শ্রেষ্ঠ মানবের স্ত্রীরূপে দুনিয়া ও জান্নাতে সম্মানিত করেন যা তার কল্পনাতেও ছিলো না। পৃথিবীতে কোন ব্যক্তি আদম (আঃ) এর চেয়ে বেশি কিছু হারাননি, তিনি জান্নাত ও জান্নাতের সঙ্গী হারিয়ে নিরাশ না হয়ে আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার ও দুআ করে যান। ফলে তিনি তার সঙ্গী স্ত্রী ও জান্নাতবাসী তার অনেক সন্তানসহ (যাদের মধ্যে রসুল ও নবীগণ রয়েছে) চিরস্হায়ী জান্নাতে বসবাসের মর্যাদা লাভ করবেন। তাই বিপদে, শোকে হতাশ না হয়ে তওবা করা ও আশাবাদী হওয়া মুমিনের স্বভাব। আর প্রকৃত সফলতা হল রবের সাক্ষাৎ, জান্নাত অর্জনে। আল্লাহ বলেন- আর পার্থিব জীবন তো ক্রীড়া কৌতুক বৈ কিছুই নয়। আর যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য পরকালের আবাসই শ্রেয়, তোমরা কি তা অনুধাবন করো না? (সুরা আল আনআম-৩২)।