হযরত যুবাইয়ের (রাঃ), আলী (রাঃ) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছিলেন। তার জনপ্রিয়তার কারণে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। যুদ্ধের পূর্বে – আলী (রাঃ) তাকে রসুলুল্লাহ’(সাঃ) এর হাদীস স্মরণ করিয়ে দিলেন- “আলী (রাঃ) বলেছিলেন- হে আবু আবদুল্লাহ! সেদিনটির কথা স্মরণ কর, যেদিন আমরা দুজন হাত ধরাধরি করে রসুল (সাঃ) এর সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। রসুল (সাঃ) তোমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন- তুমি কি আলীকে মুহাব্বত কর? বলেছিলেঃ হ্যা, ইয়া রসুলুল্লাহ (সাঃ)! স্মরণ কর তখন রসুল (সাঃ) বলেছিলেনঃ একদিন তুমি আলীর (রাঃ) বিরুদ্ধে অন্যায় যুদ্ধে নামবে। একথা শোনার পর যুবাইয়ের (রাঃ) বললেন – হ্যা তিনি বলেছিলেন, যদিও আমি স্মরণ করতে পারিনি, তবে এখন আমার মনে হচ্ছে। এরপর তিনি মত বদলিয়ে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেন কিন্তু মুনাফেক ইবনু জুরমুজ তাকে শহীদ করে (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)। এটা ছিল রসুলের (সাঃ) সাহাবীদের বৈশিষ্ট্য- লোকচক্ষু, মুনাফেক মিডিয়া (লোকমুখে অপপ্রচার), ব্যক্তিমতকে নয় কুরআন ও রসুলের (সাঃ) হাদীসকে প্রাধান্য দিতেন। জঙ্গে জামাল অনেকে আলোচনা করে না বিতর্কিত বিষয় বলে অথচ রসুলের (সাঃ) বহু ভবিষ্যৎবাণী আছে এই বিষয়ে তা কি বিতর্ক ছড়ানোর জন্য!? না উম্মত শিখে ফেতনা হতে মুক্ত থাকার পথ জানার জন্য? যুবায়ের (রাঃ) এর জীবনীর শিক্ষা হল- তারা (সাহাবীরা) ভালোবাসতেন আল্লাহর জন্য, শত্রুতাও করতেন আল্লাহর জন্য। একদলে আয়েশা (রাঃ) ও যুবাইর (রাঃ) অন্যদলে আয়েশা (রাঃ) এর ভাই ও আলী (রাঃ) যুদ্ধে নেমেছেন। তাদের বিশ্বাস ছিল- ইসলামের জন্য আপন স্বজনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়াতে হলে তাই করা উচিত। মুনাফেকদের অপপ্রচারে তারা ভেবেছিলেন – আলী (রাঃ) ভুল করেছেন, উসমান (রাঃ) এর হত্যাকারীরা তার দলে। কিন্তু যখনি রসুলের (সাঃ) বর্ণিত ভবিষ্যৎ হাদীস – আলী (রাঃ) এর পক্ষে দেখলেন তখন লোকমুখের অপপ্রচার বা চাক্ষুস পরিস্থিতিকে বিচার না করে হাদীস অনুযায়ী আমল করেছেন। আজও ফেতনা হতে বাচার পথ শেষ জমানার হাদীসকে অনুসরণ করুন। মিথ্যাবাদী মিডিয়া বা লোকমুখে যত সংবাদ আসুক তাকে নয়। আজ যদি কাউকে শেষ জমানার হাদীস দেখানো হয়- রসুল (সাঃ) কি করতে বলেছে, কাদের অনুসরণ করতে বলেছে, তারা হাদীস বাদ দিয়ে মিডিয়ার প্রচারণাকে প্রাধান্য দেয়। কে সত্যবাদী!? মিডিয়া না রসুলের (সাঃ) হাদীস!? দেখুন মুনাফেকদের অপপ্রচারে সাহাবীদের মনে হয়েছিল- ইজতেহাদের ক্ষেত্রে আলী (রাঃ) এর ভুল হতে পারে তাই তারা যুদ্ধে নেমেছেন কিন্তু কোন সাহাবী কাউকে কাফের, মুনাফেক বলেনি। অথচ ঐ সময় জীবিত ব্যক্তিদের মধ্যে আলী (রাঃ) ছিলেন সর্বোত্তম। অথচ আজ যদি বলা হয় অমুক পীর, অমুক আলেমের ভুল হতে পারে, তাদের অন্ধভক্ত আছে যারা ইহুদির দালাল, কাফের, মুনাফেক ফতেয়া দিয়ে দিবে।