শয়তান ও রাজনীতিবিদ

মানবজাতির প্রধান শত্রু হল শয়তান যার সম্পর্কে আল্লাহপাক কুরআনে বহুবার সর্তক করেছেন। এই শয়তান ও তার অনুসারী মানুষ ও জ্বিন উভয় হতে হয়। সুরা নাসে বর্নিত- যে কুমন্ত্রণা দেয় অন্তরে। জিনের মধ্য হতে ও মানুষের মধ্য হতে (৫-৬)। বর্তমানে অনেক রাজনীতিবিদের চরিত্র, ইবলিস শয়তানের চরিত্রের আদিরীতি ছাড়া কিছুই নয়। যেমনঃ

১. প্রচলিত রাজনীতিবিদগণ একজন প্রার্থী অন্যজন প্রার্থী হতে শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে। তার শ্রেষ্ঠ হওয়ার দাবির অধিকাংশ কারণ হল সে স্বীয়দলের মহান নেতার নিকট পরিচিত, আত্মীয় অথবা প্রিয়। অথচ মুসলিমদের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ তা আল্লাহপাক জানে। কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তি অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ দাবি করা সুস্পষ্ট অহংকার। “আর অহংকার হল সত্য গোপন রাখা ও অন্যকে নিকৃষ্ট জানা” (সহীহ মুসলিম -৯১)। আর জন্ম বা সৃষ্টি সূত্রে নিজেকে শ্রেষ্ঠভাবা এই জাতীয়তাবাদী চেতনার জন্মদাতা ইবলিশ। আল্লাহ বলেন- “হে ইবলিস আমার দুহাতে আমি যাকে সৃষ্টি করছি কে তোমাকে তাকে সিজদাহবনত হতে বাধা দিল? তুমি কি অহংকার করলে না তুমি অধিকতর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন? সে বলল, আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন অগ্নি হতে আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি হতে (সুরা সাদ)।”

২. নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানো (বিরোধী দল) বর্তমান রাজনীতিবীদদের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য যা ইবলিসের চরিত্রের অনুরূপ। ইবলিস ভুল করেছিল কিন্তু ক্ষমা চায়নি, অথচ আদম (আ:) অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চায় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন আর ইবলিস তার দোষের দায় আদম (আ:) এর উপর চাপায়। তার ধারণা আদম (আ:) এর জন্য আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করেছে তাই সে প্রতিটি আদম সন্তানের উপর প্রতিশোধ নিতে সংকল্পবদ্ধ। কুরআনে বর্নিত- “সে বলল, তুমি যেহেতু আমাকে পথভ্রষ্ট করেছ, আমিও শপথ করেছি যে, আমিও তাদের জন্য আপনার সরলপথে ওৎ পথে বসে থাকবো। তারপর আমি তাদের হামলা করব তাদের সম্মুখ দিক হতে, তাদের পিছন দিক, তাদের ডানদিক হতে, তাদের বামদিক হতেও। আর তুমি তাদের অধিকাংশদের কৃতজ্ঞ হিসেবে পাবে না।” (সুরা আরাফ-১৬-১৭)। আজও ক্ষমতাসীনদের সত্যের পথে আহ্বান করলে বা সমালোচনা করলে বিভিন্ন রকম হামলা ও মামলা শুরু হয়ে যায়। তারা বিরোধীদলের সাথে এমনকি ক্ষমতার জন্য দলের লোকদের সাথেও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

৩. স্বাধীন মতবাদ- বর্তমান রাজনীতিবিদগণ নিজ খেয়াল খুশি মত বিধান রচনা করে যা শয়তানেরই নীতি। শয়তান আল্লাহর নিয়মনীতি প্রত্যাহার করে নিজ ইচ্ছার অনুসরন করে চলছে অথচ ইসলাম হল আত্মসমর্পণ আর মুসলিম হল আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী। সে তার সকল চিন্তাচেতনা বর্জন করে এক আল্লাহর নিয়মনীতির অধীন হবে বিনিমিয়ে আল্লাহপাক তাকে জান্নাত দিবেন। ক্ষমতাসীনরা নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী আল্লাহর আইনকে বাতিল করে নিজস্ব আইন চালু করে। যেমন – আল্লাহ মদ, সুদকে অবৈধ (হারাম) করেছে পরিবর্তে মানবরচিত আইনে তাকে বৈধ (হালাল) করা হয়েছে।

৪. আল্লাহর বিরোধীতা করার জন্য আল্লাহর কাছেই প্রার্থণা করা- বর্তমানে অধিকাংশ রাজনীতিবিদরা ক্ষমতা চায় নিজের দুনিয়ার সুবিধা, নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করার জন্য ও সমোলোচক, বিরোধীদের দমন করার জন্য। এজন্য তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করে, হজ্বে যায় ও মসজিদ-মাহফিলে দান করে। অথচ জুলুম ও জালেম শাসকের জন্য আল্লাহ জাহান্নামের শাস্তি রেখেছেন। এধরনের কর্মকান্ড ইবলিসেরই চরিত্রে বিদ্যামান। সে আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করে আল্লাহর নাফরমানী ও তার শত্রু আদম সন্তানদের ক্ষতি সাধনের জন্য।আল্লাহপাক বলেন- “তিনি (আল্লাহ) বলেন তুমি এখান হতে বের হয়ে যাও। কেননা নিশ্চয় তুমি বিতাড়িত। আর নিশ্চয় বিচার দিবস পর্যন্ত তোমার প্রতি আমার অভিশাপ বলবৎ থাকবে। সে (ইবলিশ) বলল- আমাকে সেদিন পর্যন্ত অবকাশ দিন যেদিন তারা পুনরুত্থিত হবে। তিনি (আল্লাহ) বললেন, আচ্ছা তুমি অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তভুক্ত হলে, নির্ধারিত সময় উপস্হিত হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত। সে (ইবলিস) বলল- তোমার ইজ্জত্বের কসম! আমি তাদের সকলকে বিপদগামী করে ছাড়ব। তাদের মধ্য হতে তোমার একনিষ্ঠ বান্দা ছাড়া। আল্লাহ বলেন- এটি সত্য আর সত্যই আমি বলি, তোমাকে দিয়ে আর তাদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করবে তাদের দিয়ে নিশ্চয় আমি জাহান্নাম পূর্ণ করব।” (সুরা সাদ)। আজ যারা প্রতারণামূলক এই রাজনীতিবিদদের সমর্থন দিচ্ছে ও ওদের মাধ্যমে শান্তি চায় সমাজে, নিশ্চিত থাকুন ওরাই সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *