শয়তানের জাল

মানবসৃষ্টির শুরু হতে মানুষের প্রধান শত্রু ইবলিস শয়তান মানুষকে বিভিন্নভাবে প্রতারিত করে আসছে। দিনে দিনে তার প্রতারণার মায়াবী জাল ছড়িয়ে পড়ছে। আগে সে মানুষকে দিয়ে মূর্তি তৈরি করত নির্দিষ্ট স্হানে আর এখন মূর্তিকে ভাস্কর্য, চেতনার নাম দিয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে দিচ্ছে। আজ চেতনার নামে বাঘ, দোয়েলসহ বিভিন্ন পশু ও মানুষের মূর্তি, স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হচ্ছে তাকে ফুল দিয়ে সম্মান করানোর মাধ্যমে পূজা করানো হচ্ছে। বহু মদকে এখন এনার্জি ড্রিংকস, সুদকে মুনাফা বলে চালানো যাচ্ছে।

আগে মানুষ গণকের কাছে ভবিষ্যৎ জানতে যেত এখন যেকোন নূন্যতম জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিও বুঝে এগুলো মূর্খতা ও প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। অথচ সে মানুষগুলোকে দিয়ে Face App এর ভবিষ্যৎবাণী প্রচার করে চলছে। কোন ব্যক্তির আগামী বছরগুলোতে কি ঘটবে এবং বৃদ্ধ বয়সে তার চেহারা কেমন হবে এসব ভবিষ্যৎবাণী অবলীলায় প্রচার করে চলছে। ভবিষ্যৎ কেবল আল্লাহর জ্ঞানে আছে আর কেউ জানে না। মানুষের ২ মিনিট বাঁচার নিশ্চয়তা নেই সেখানে এসব ভবিষৎবাণী বিশ্বাস ও খুশি মনে প্রচার করা চরম বোকামী।

আর গণকের নিকট ভবিষ্যৎ জানার যে গোনাহ এখানের গোনাহও একই প্রকৃতির। রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেন – “যে গণক বা জ্যোতিষীর কাছে যায় বা কোনকিছু জিজ্ঞাস করে তার চল্লিশ দিন ও রাত্রির সালাত গ্রহণযোগ্য হবে না।” (মুসলিম শরীফ ৫৫৪০)। আজ যারা Face App এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ জানছেন তাদের অবস্হাও একইরূপ। আর এসব ভবিষ্যৎবাণী বিশ্বাস করা শিরক কারণ কেবল মাত্র আল্লাহই ভবিষ্যৎ জানেন।

আল্লাহপাক বলেন – “বল আল্লাহ ব্যতীত কেউই আকাশমন্ডলী ও পূর্থিবীতে অদৃশ্যের জ্ঞান রাখে না।” ( সুরা আন- নামল-৬৫, ৫৯)। রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেন, “যে ব্যক্তি একজন ভবিষ্যৎদ্রষ্টা গণকের নিকট গেল এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করল, সে মুহাম্মদ (সা:) এর নিকট যা অবতীর্ণ হল তা অবিশ্বাস করল।” (আবু দাউদ, আহমদ)।

কোন ব্যক্তি রাসুলের (সা) অবতীর্ণ বিধান অবিশ্বাস করলে মুসলিম থাকে না, কাফের হয়ে যায়। অনেকেই বলবে এগুলো আমরা fun/মজা হিসেবে করছি অন্যকিছু না। অনেকে সিগারেট, মদ খায় fun করে, অনেকে প্রেম করে, জুয়া খেলে মজা হিসেবে তাহলে কি তা গোনাহ নয়? অবশ্যই তা কবীরা গোনাহ বরং যে অনুতপ্ত না হয়ে এগুলোকে গোনাহ হিসেবে অস্বীকার করে সে কুফরী করল। আল্লাহপাক বলেন- “আর তুমি যদি তাদের জিজ্ঞাস কর- তারা বলবে আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতূক করছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তার হুকুম আহকামের সাথে (হালাল-হারাম) এবং তার রাসুলের সাথে ঠাট্টা করেছিল? ছলনা কর না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশের পর। তোমাদের মধ্যে কিছুলোককে যদি ক্ষমা করে দিই, কিছুলোককে আযাবও দিব তারা ছিল গোনাহগার।” (সুরা তাওবা-৬৫-৬৬)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *