আমরা এখন অদ্ভুত অজ্ঞতার সমাজে বসবাস করছি। একদিকে নাস্তিকরা আমাদের নবীকে গালিগালাজ করছে আর নামধারী মুসলিমরা বিভিন্ন দিবস নামক শিরকীয় শুভেচ্ছা জানাচ্ছে অথচ ওরাই আবার রসুলকে (সাঃ) ভালোবাসার দাবি করে।
আল্লাহপাক বলেন- “আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে রসুল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর ও তাগুতকে বর্জন করো।” (সুরা নাহল-৩৬)। মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম (আঃ) ঘোষণা করেছিলেন- “তোমাদের সাথে এবং তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত কর তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা তোমাদের মানি না। তোমরা এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্হাপন না করলে তোমাদের মধ্যে আমাদের মধ্যে চিরশত্রুতা থাকবে।” (সুরা মুমতাহিনা-৪)। এখন আমরা কার আদর্শ মানছি মুসলিম জাতির পিতার না অন্য কারো? মূর্তি ভঙ্গকারী ইব্রাহিম (আঃ) কে না মূর্তি পূজারী ও বিভিন্ন দেবদেবীর, কাফেরের নামে প্রচলিত দিবসের?
অথচ জাহেলী সমাজে যখন সর্বত্রই শিরক চলছিল তখন সাহাবীরা ঈমান এনে মুসলিম হন। তখন কুরআনের সব সুরা ও আয়াত নাযিল হয়নি তবু শত নির্যাতন স্বত্বেও শিরককে অস্বীকার করেন। তাওহীদকে আকড়ে ধরেন, অথচ আমাদের নিকট পুরো কুরআন বিদ্যমান।
হযরত খাব্বাব (রাঃ) কে দুপুরের প্রচন্ড উত্তাপে মুশরিকরা মক্কার উপত্যকায় টেনে আনত। তার শরীরকে সম্পূর্ণ নগ্ন করে লোহার বর্ম পরাতো প্রচন্ড গরমে পিপাসায় কাতর হলেও তাকে পানি দেওয়া হত না, আবার পৌত্তলিকরা আগুন জ্বালিয়ে তার নগ্ন শরীর টেনে আগুনে শুইয়ে দিয়েছিল। তার পিঠের মাংস, চর্বি খসে পড়ে সে আগুন নিভেছিল তবুও তিনি রসুলুল্লাহ’র (সাঃ) প্রশংসা ও সত্য নবীর স্বীকৃতি দিতেন ও শিরককে অস্বীকার ও ঘৃণা প্রকাশ করতেন।
কাফেররা হযরত খোবাইব (রাঃ) কে বন্দী করে তার হত্যার পূর্বে পাক-সাফ হওয়ার জন্য তিনি একটি ক্ষুর চেয়ে নেন। এমন সময় উকবার একটি শিশু খেলতে খেলতে তার নিকট চলে আসে। তিনি শিশুকে আদর করে কোলে তুলেন, শিশুটির মা ভয় পেয়ে যান। তখন খুবাইব (রাঃ) বলেন- তোমার ধারনা, এই শিশুকে হত্যা করে রক্তের বদলা নেব? এমন কাজ কক্ষনো করবো না।
আমাদের (মুসলিম) চরিত্র এমন নয়, খুবাইব (রাঃ) শহীদ হওয়ার পর মহিলাটি মুসলিম হয়। কাফেররা খুবাইব (রাঃ) এর শরীরের গোশত কেটে কেটে টুকরো করেছিল। আর জানতে চেয়েছিল তোমরা স্হানে যদি মুহাম্মদ (সাঃ) কে আনা হত তুমি কি এটা পছন্দ করবে না? তিনি বলেছিলেন- “আমি আমার পরিবার ও সন্তানদের মধ্যে নিরাপদে অবস্থান করি এবং তার বিনিময়ে রসুলুল্লাহর (সাঃ) গায়ে একটি কাটার আচড় লাগুক,আল্লাহর কসম, আমি কক্ষনো তা পছন্দ করি না।” (সীরাতে ইবনে হিশাম, আসহাবে রসুল-২,৪, আল ইসাবা)।
এমনই ছিল তাদের ঈমান তাদের নিজের জীবন, পরিবার ও সম্পদ!! সবকিছুর চেয়ে আল্লাহ ও তার রসুলকে ভালোবাসতো আর শিরকের বিরোধিতা করে শহীদ হন। আর এখন জালেমরা সামান্য আনন্দের জন্য শিরকী দিবস ও শুভেচ্ছা দিচ্ছে। আর মুসলিমদের দৃঢ়তা দেখে ঈমান আনবে কি!! মুসলিমরা আজ ইসলাম ছেড়ে কুফরকে আকড়ে ধরছে।