কোন ব্যক্তি এক আল্লাহকে ভালোবাসবে, আনুগত্য করবে আবার আল্লাহর নিকট ঘৃণিত ও শয়তানের তৈরি মূর্তিকে ভালোবাসবে, সম্মান প্রর্দশন করবে তা হতে পারে না। প্রত্যেকে তার উপাসনালয়ে ধর্ম মানবে এটাই নিয়ম কিন্তু প্রকাশ্যে মূর্তি বা ভাস্কর্য ইসলামি চিন্তা-চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। আল্লাহ তাআলা বলেন- “হে মুমিনগন! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তির বেদী এবং ভাগ্য নির্ধারন তীর, এসব গর্হিত বিষয়, শয়তানের কাজ। সুতরাং এ থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাক, যাতে তোমাদের কল্যাণ হয়।” (সুরা মায়েদাহ-৯০)। সুতরাং যারা মূর্তিকে সম্মান, ভালোবাসা, সমর্থন দেয় তারাই শয়তানের দলের অন্তর্ভুক্ত। আর এরপর কেউ যদি তাদের মুসলিম ভাবে তারা যেন আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, “আদম ও নূহ (আঃ) এর মাঝে দশ শতাব্দীর ব্যবধান ছিল। এ দীর্ঘসময় তারা সবাই খাটি মুসলিম ছিল। অতঃপর ধীরে ধীরে নেককার, দ্বীনদার ব্যক্তিগণ মারা গেলে শয়তান তাদের অনুসারীদের এই বলে প্ররোচিত করে, তোমরা যেসব মহাপুরুষের পদাঙ্ক অনুসরণ করে উপাসনা কর, তারা যে জায়গাগুলোতে বসতো সেখানে যদি প্রত্যেকের নামে প্রতিমা স্হাপন করে রেখে দাও, তাহলে তোমাদের উপাসনা পূর্ণতা লাভ করবে এবং বিনয় ও একাগ্রতা অর্জিত হবে। শয়তানের ধোকায় পড়ে তারা মূর্তি বানায়, তাদের স্মৃতি স্মরণ করে ইবাদতে মনোযোগী হল। কালক্রমে তাদের মৃত্যু হল, নতুন প্রজন্ম দুনিয়ায় এল, তারা মূর্তি তৈরির ইতিহাস ভুলে গেল, এই সুযোগে শয়তান বলল, তোমাদের পূর্বপুরুষরা এই মূর্তিগুলোর পূজা করত, তোমরাও কর। এভাবে মূর্তিপূজার সূচনা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন- “আর তারা বড় রকমের ষড়যন্ত্র করেছে, এবং বলছে, তোমরা কখনো পরিত্যাগ করো না তোমাদের উপাস্যদেরকে, পরিত্যাগ করো না ওয়াদ, ইয়াগূছ, ইয়াউক ও নাসরকে।” (সুরা নূহ-২২-২৩)। এভাবে দ্বীনে প্রতিটা নতুন সংযোগ ভালোর নামে শুরু হলেও শেষপর্যন্ত কুফর, শিরকে পরিণত হয়। মূলত মুশরিক জাতি যাকে আদর্শ, রব, দাতা ও ইবাদত কবুলের মাধ্যম জানে তার মূর্তি তৈরি করে সম্মান, পূজা করে। আর মুসলিম জাতির রব এক আল্লাহ, আদর্শ রসুলুল্লাহ (সাঃ)। রসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন- “একটি মাছির কারণে একটি লোক জান্নাতে আর একটি লোক জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। সাহাবীরা (রাঃ) বললেন- “হে আল্লাহর রসুল এটা কিভাবে সম্ভব? উত্তরে তিনি বললেনঃ দুই ব্যক্তি কোন এক মূর্তিপূজক সম্প্রদায়ের পাশ দিয়ে অতিক্রম করতেছিল,আর যারা এই পথ দিয়ে যেত তাদেরকে সেখানে কিছু দান করতেই হত। তাই তারা দুজনের একজনকে বলল তুমি কিছু দান কর, লোকটা বলল আমার কাছে দান করার মত কিছুই নেই। তখন তারা লোকটিকে বলল একটা মাছি হলেও দান কর, সে তা করল ফলে জাহান্নামে চলে গেল। অপরজন বলল – আমি মহমান্বিত আল্লাহ ছাড়া কারো উদ্দেশ্য কোন কিছু দান করি না, ওরা তাকে হত্যা করল আর এই কারণে সে জান্নাতে চলে গেল।” (মুসনাদে আহমদ, বুখারী)।