বাংলাদেশে অদ্ভুত সব ফেতনা। যে কোন বক্তা এসে কপি করে বা মনমতো বিশ্বের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি বর্ণনা করে জনপ্রিয় হতে পারে। তার কারণ দুটো – শেষ জমানার হাদীস সম্পর্কে ধারনা নেই, আর বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রকৃত তথ্যের অভাব।
হাদীসে শেষ জমানায় ছোট যুদ্ধ বা যুদ্ধসমূহকে মালাহীম আর মালহামা বলতে বড় যুদ্ধ বুঝায়। আল মালহামা হল একটি যুদ্ধ। একটি অত্যন্ত তীব্র ও ভয়ঙ্কর মহাযুদ্ধ। আল মালাহীম হল পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একাধিক যুদ্ধের সম্মীলনে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ। একটি দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত। যা বছরের পর বছর ধরে চলবে। এটা হল অনেকগুলো ছোট যুদ্ধের সম্মীলনে একটি বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ এবং রাসূলুল্লাহ (সাল্লাললাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল মালাহীম সংঘঠিত হবে মুসলিম এবং রোমানদের মধ্যে। কারা এই “রোমান”? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাললাহু আলাইহী ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে “রোমান” বলতে কোন রাজনৈতিক সত্ত্বা বা শক্তিকে বোঝানো হতো না বরং একটি জাতিকে বোঝানো হতো, সেই সময়ের রোমানরা ছিল – ইউরোপিয়ানরা।
স্বর্ণের পাহাড়ের যুদ্ধ মালাহীমের অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত মালাহীমগুলো দীর্ঘদিন চলা যুদ্ধ আর মালহামা অল্পকিছুদিন হবে তবে ব্যাপাক আকারে হবে। আবু মুগীরাহ রহ.-এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেছেন-
ملاحم الناس خمس فثنتان قد مضتا وثلاث في هذه الأمة ملحمة الترك وملحمة الروم وملحمة الدجال ليس بعد ملحمة الدجال ملحمة . اخرجه نعيم بن حماد في كتاب الفتن : ٢/٥٤٨ رقم ١٠٣٨ و ٢/٦٧٩ رقم ١٩١٢، و الداني في السنن الواردة في الفتن : ١/٩٢٧ رقم ٤٨٦، و ابن الحسين الشجري في الأمالي الخميسية : ٢/٢٩٦ –
“মানুষের (মাঝে) মালহামাহ (তথা মহাযুদ্ধ’র ঘটনা ঘটবে) পাঁচটি। দুটো ইতিপূর্বে (আগের উম্মতদের মধ্যে) ঘটে গেছে। আর (বাকি) তিনটি (ঘটবে) এই উম্মতের মধ্যে। (১) মালহামতুত-তুরক, (২) মালহামতুর-রূম, এবং (৩) দাজ্জাল (-এর সাথে ঘটিত মালহামাহ/মহাযুদ্ধ)। দাজ্জালের পরে আর কোনো মালহামাহ নেই।” [আল-ফিতান, ইমাম নুআইম বিন হাম্মাদ- ২/৫৪৮ হাদিস ১০৩৮, ২/৬৭৯ হাদিস ১৯১২; সুনানুল ওয়ারিদাহ, ইমাম দানী- ১/৯২৭ হাদিস ৪৮৬; কিতাবুল আমালী, ইবনুল হুসাঈন- ২/২৯৬]।
হাদীসমতে মালহামা মোট তিনবার অবশিষ্ট আছে। আর তার মধ্যে রোমের সাথে বাকি আছে আমাক বা দাবিকে হবে মালহামাতুল কুবরা আর দাজ্জালের সাথে।
রোম বলতে মূলত গ্রীস, তুরস্কসহ ইউরোপের বহুস্হানকে বুঝানো হতো অথচ অজ্ঞরা রোমকে প্রচার করছে রাশিয়া বা খ্রিস্টান। অথচ কুরআনে সুরা রুম আছে। সুহাইল আর রুমী (রাঃ) রসুলের (সাঃ) সাহাবী। রোম অর্থ যদি খ্রিস্টান হতো তাহলে রসুল (সাঃ) ও সাহাবীরা কেন তাকে এই নামে ডাকতেন? এছাড়া জালালুদ্দিন রুমীকে কেন রুমী বলা হয় তিনি তো জন্মগ্রহণ করেন বালখে আর সমৃদ্ধি লাভ করেন তুরস্কে। আসলে রোম হল ভূখন্ড পরিচয় যা পরিবর্তনীয় নয় আর বংশগত পরিচয়ে হাদীসে বনু আসফার বলা হয়েছে।
আর মালহামা হবে ঈমাম মাহাদীর নেতৃত্বে রোমের সাথে।
হযরত আবু দারদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন-
إِنَّ فُسْطَاطَ الْمُسْلِمِينَ يَوْمَ الْمَلْحَمَةِ بِالْغُوطَةِ إِلَى جَانِبِ مَدِينَةٍ يُقَالُ لَهَا دِمَشْقُ مِنْ خَيْرِ مَدَائِنِ الشَّامِ . أخرجه أحمد: ٢١٧٢٥، وأبو داود: ٤٢٩٨، و صحّحه الألباني في صحيح الترغيب والترهيب: ٣٠٩٧
‘নিশ্চই মালহামা’র দিন মুসলমানদের জমায়েত (assembly) হবে গুতাহ’তে; (এ স্থানটি) শাম-এর শহর সমূহের মধ্যে সর্বোত্তম শহর -যাকে দামেশক বলে ডাকা হয় -সেই শহরের একদিকে (গুতাহ) অবস্থিত’। [মুসনাদে আহমদ, হাদিস ২১৭২৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪২৯৮]
# হযরত আবু হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
إِذَا وَقَعَتِ الْمَلاحِمُ بَعَثَ اللَّهُ مِنْ دِمَشْقَ بَعْثًا مِنَ الْمَوَالِي هُمْ أَكْرَمُ الْعَرَبِ فَرْسًا ، وَأَجْوَدُهُ سِلاحًا يُؤَيِّدُ اللَّهُ بِهِمُ الدِّينَ . أخرجه ابن ماجه: ٢/٥٢٠ رقم ٤٠٩٠، والفسوي: ٢/٢٩١, وابن عساكر: ١/٢٥٨ ، والحاكم: ٤/٥٤٨, حسنه الالبانى في فضائل الشام: ٦٠
‘যখন মালহামাহ সমূহ (বড় বড় যুদ্ধ) সংঘটিত হবে, তখন আল্লাহ তাআলা (সিরিয়ার) দামেশক থেকে মাওয়ালী’দের এক সৈন্যদল পাঠাবেন। তারা হবে শ্রেষ্ঠ আরব অশ্বারোহী এবং উচ্চমার্গের সমরাস্ত্রবাহী। আল্লাহ তাআলা তাদের মাধ্যমে দ্বীন’কে সাহায্য করবেন’। [সুনানে ইবনে মাজাহ– ২/৫৬০, হাদিস ৪০৯০; মুসতাদরাকে হাকিম- ৪/৫৪৮; তারিখে দামেশক, ইবনু আসাকীর- ১/২৫৮]।
# হযরত আব্দুল্লাহ বিন বুসর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
بَيْنَ الْمَلْحَمَةِ وَفَتْحِ الْمَدِينَةِ سِتُّ سِنِينَ، وَيَخْرُجُ الْمَسِيحُ الدَّجَّالُ فِي السَّابِعَةِ. رواه أبو داود فى سننه, كتاب الملاحم , باب في تواتر الملاحم : رقم ٥٤٩٦ و قَالَ أَبُو دَاوُدَ: هَذَا أَصَحُّ مِنْ حَدِيثِ عِيسَى; قال الحافظ ابن حجر في فتح الباري: (٦/٣٢١) وإسناده أصح من إسناد حديث معاذ; سنن ابن ماجه: ٤٠٩٣; مسند أحمد: ١٧٢٣٨; البحر الزخار بمسند البزار: ٣٥٠٥; السنن الواردة في الفتن للداني:٤٨٩ و٦١٤ و٦٥٩; الفتن لنعيم بن حماد: ١٤٥٤ و ١٤٦٩
‘মালহামাহ (-ই-কুবরা তথা মহাযুদ্ধ শুরু হওয়া) এবং (কুস্তুনতুনিয়া) শহরটির বিজয় (হতে সময় লাগবে) ছয় বছর এবং মাসিহ-দাজ্জাল বের হবে সপ্তম বছরে’। [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৫৪৯৬; মুসনাদে আহমদ- ১৭২৩৮; মুসনাদে বাযযার, হাদিস ৩৫০৫; আস-সুন্নাহ, দানী- ৪৮৯, ৬১৪, ৬৫৯; আল-ফিতান, নুআইম বিন হাম্মাদ- ১৪৫৪, ১৪৬৯]।
ফায়দা: এক হাদিসে এসেছে, হযরত মুয়ায বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
الْمَلْحَمَةُ الْكُبْرَى ، وَفَتْحُ الْقُسْطَنْطِينِيَّةِ ، وَخُرُوجُ الدَّجَّالِ فِي سَبْعَةِ أَشْهُرٍ . رواه أحمد: ٣٦/٣٧١، وأبوداود: ٤٢٩٥، والترمذي: ٢٢٣٨، وابن ماجه: ٤٠٩٢; وضعفه الألباني في ” ضعيف الترمذي
‘মালহামায়ে-কুবরা (মহাযুদ্ধ), কুস্তুনতুনিয়া বিজয় এবং দাজ্জালের বের হওয়া -সাত মাসের মধ্যে ঘটবে’। [জামে তিরমিযী, হাদিস ২২৩৮; মুসনাদে আহমদ- ৩৬/৩৭১; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪২৯৫; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪০৯২]
এই হাদিসটি উপরের হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। এখানে মূলতঃ মালহামায়ে-কুবরা (মহাযুদ্ধ)-এর প্রথম ৫টি বছরের কথা বলা হচ্ছে না, বরং তার ৬ষ্ঠ বছরের শেষ দিককার কিছু সময়, তারপর কুস্তুনতুনিয়া বিজয়, তারপর সপ্তম বছরের শুরু বা মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে দাজ্জালের আবির্ভাব হবে। এসব মোট সাত মাসের মধ্যে ঘটবে বলে ইংগীত করা হয়েছে। الله اعلم
# হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
إِذَا مَلَكَ الْعَتِيقَانِ : عَتِيقُ الْعَرَبِ ، وَعَتِيقُ الرُّومِ ، كَانَتْ عَلَى أَيْدِيهِمَا الْمَلاحِمُ . اخرجه الطبرانى كما فى مجمع الزوائد: ٧/٣١٨ – قال الهيثمى: فيه ابن لهيعة و فيه ضيف و محمد بن سفيان الراوى عنه لم اعرفه; و نعيم بن حماد فى الفتن: ٢/٤٧٠ رقم ١٣٠٦, ١٣٤٠,
‘যখন দুটি পুরানা (আমলের) শাসন ক্ষমতা (তাদের উত্তরসূরীদের দ্বারা পুণরায় চালু) হবে -পুরাণা আরব এবং পুরাণা রোম (সম্রাজ্য), (তখন ঘটনা প্রবাহে একসময় মহাযুদ্ধ) মালহামাহ তাদের দুপেক্ষের হাতেই সংঘটিত হবে। [ত্বাবরাণী: মাজমাউয যাওয়ায়ীদ, হাইছামী- ৭/৩১৮; আল-ফিতান, ইমাম নুআইম বিন হাম্মাদ- ১৩০৬, ১৩৪০, ১৩৪৯, ১৪১০ ; মু’জামু শুয়ূখিল কাবির, যাহবী- ৫২৪; কাঞ্জুল উম্মাল-১১/১৬২, হাদিস ৩১০৪৫; জামউয যাওয়ামে’- ১/৯০]।
তার মানে বুঝা যাচ্ছে বিশ্বে আবার রোম সম্রাজ্যবাদ চালু হতে পারে। এছাড়া হাদীস দ্বারা নিশ্চিত হওয়া যায় – রোম বা পশ্চিমা কারা। আবু নাদ’রা বর্ণনা করেন, আমরা হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি বললেন,
“সেই সময়টি অতি নিকটে, যখন ইরাকিদের ‘দিরহাম’ ও ‘কাফিজ’ এর উপর অবরোধ আরোপ করা হবে”। জিজ্ঞেস করা হল, এই অবরোধ কার পক্ষ থেকে আরোপ করা হবে? উত্তরে তিনি বললেন, “অনারবদের পক্ষ থেকে”। এরপর বললেন, “সেই সময়টিও বেশি দূরে নয়, যখন সিরিয়ার অধিবাসীদের ‘মাদ’ ও ‘দিনার’ এর উপরও অবরোধ আরোপ করা হবে”।
জিজ্ঞেস করা হল, এই অবরোধ কার পক্ষ থেকে হবে? বললেন, “রোম (পশ্চিমাদের) পক্ষ থেকে”। কিছু সময় নীরব থাকার পর বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার শেষ উম্মতের মধ্যে এমন এক খলীফার (ইমাম মাহদির) আবির্ভাব ঘটবে, যে মানুষকে মুঠি ভরে ভরে সম্পদ দান করবে এবং কোন হিসাব গণনা করবে না”।
(সহিহ মুসলিম, অধ্যায় ৪১, হাদিস নং ৬৯৬১)
# আওফ বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- করেন-
أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ وَهُوَ فِي قُبَّةٍ مِنْ أَدَمٍ، فَقَالَ: اعْدُدْ سِتًّا بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ: مَوْتِي، ثُمَّ فَتْحُ بَيْتِ المَقْدِسِ، ثُمَّ مُوْتَانٌ يَأْخُذُ فِيكُمْ كَقُعَاصِ الغَنَمِ، ثُمَّ اسْتِفَاضَةُ المَالِ حَتَّى يُعْطَى الرَّجُلُ مِائَةَ دِينَارٍ فَيَظَلُّ سَاخِطًا، ثُمَّ فِتْنَةٌ لاَ يَبْقَى بَيْتٌ مِنَ العَرَبِ إِلَّا دَخَلَتْهُ، ثُمَّ هُدْنَةٌ تَكُونُ بَيْنَكُمْ
আমি ত্বাবুক যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে এলাম; তিনি তখন চামড়ার একটি তাবুতে (অবস্থান কর)ছিলেন। তিনি এরশাদ করলেন: ‘কেয়ামতের পূর্বে ছয়টি (আলামতের কথা) গণনা করে নাও। (১) আমার মৃত্যু, (২) এরপর বায়তুল মাক্বদিস বিজয়, (৩) এরপর (একটি) মহামারী, (যা) তোমাদের (তখনকার মুসলমানদের) মধ্যে বকরীর-মহামারীর মতো পাকড়িয়ে ধরবে, (৪) অঢেল ধ্বনসম্পদ; এমনকি এক ব্যাক্তিকে এক’শ দীনার দেয়া হলে তাতেও সে অখুশি/ক্রধাহ্নিত হবে। (৫) এরপর (এমন এক) ফিতনা (হবে), যা কোনো আরবের ঘরে প্রবেশ না করা থেকে বাদ যাবে না, (৬) এরপর তোমাদের (মুসলমানদের) এবং বনু-আছফার (রোম)-এর মাঝে (একটি) যুদ্ধ-বিরতি-চুক্তি (ceasefire) সম্পাদিত হবে। (কিন্তু) পরে তারা (এই চুক্তির ব্যাপারে তোমাদের সাথে) গাদ্দারী করবে, তারপর (তোমাদেরকে খতম করে দেয়ার জন্য তারা) আশিটি পতাকা তলে (সমবেত হয়ে) তোমাদের কাছে আসবে, (যার) প্রতিটি পতাকা তলে থাকবে বার হাজার সৈন্য’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ৩১৭৬; সুনানুল কুবরা, বাইহাকী- ৯/৩৭৪ হাদিস ১৮৮১৬]।
এই যুদ্ধের কারণ ও সাহায্যকারী হবে মাওয়ালী বা নওমুসলিমরা।
কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যাবৎ রোম’রা আ’মাক অথবা দাবিক-এ অবতরণ না করে। সেসময় পৃথিবীবাসীর মধ্য থেকে (মুমিনদের) সর্বোত্তম একটি সৈন্যদল মদিনা হতে (বের হয়ে) তাদের দিকে ধাবিত হবে। তারা পরষ্পরে যখন সারিবদ্ধ হয়ে (মালহামাতুল কুবরা তথা মহাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন) রোম’রা বলবে: আমাদের এবং যারা আমাদের লোকদেরকে আটকিয়ে রেখেছে তাদের মাঝ থেকে তোমরা সরে যাও, আমরা ওদের সাথে যুদ্ধ করবো। তখন মুসলমানরা বলবে: (এটা কখনই হতে পারে) না, আল্লাহ’র শপথ, আমারা তোমাদের এবং আমাদের (মুসলমান) ভাইদের মাঝ থেকে সরে দাঁড়াবো না। এরপর তাঁরা তাদের (তথা রোম বাহিনীর) সাথে যুদ্ধ করবে। তখন (যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে মুসলমানদের মধ্যে) তিন ভাগের এক ভাগ (ভয়ে) পালিয়ে যাবে, আল্লাহ তাদের তওবা আর কখনই কবুল করবেন না। আর এক তৃতীয়াংশ শহীদ হয়ে যাবে; তাঁরা হবে আল্লাহ’র কাছে (সেই জিহাদের) সর্বোত্তম শহীদ। আর (অবশিষ্ট) এক তৃতীয়াংশ (যাঁরা বেঁচে যাবে তাঁরা ওই জিহাদে রোমদের উপর) বিজয় লাভ করবে; (পরে) তাঁরা আর কখনই ফিতনায় পতিত হবে না। এরপর তাঁরা (সামনে অগ্রসর হয়ে) কুস্তুনতুনিয়া (কন্সট্যান্টিনোপোল/ইস্তাম্বুল, তুরষ্ক) জয় করবে। তারা যখন তাদের তরবারী জয়তুন গাছে ঝুলিয়ে গণীমতের মাল বন্টন করতে থাকবে, এমন সময় শয়তান তাদের মাঝে চিৎকার দিয়ে বলবে: নিশ্চই মাসিহ (দাজ্জাল) তোমাদের পরিবারের পিছনে লেগেছে। তখন তাঁরা (অবস্থার সত্যতা যাঁচাইয়ের জন্য) বেরিয়ে পড়বে, কিন্তু (বাস্তবে) খবরটি ছিল মিথ্যা। তাঁরা যখন শাম-এ গিয়ে পৌছবে, (তখন) দাজ্জাল বের হবে। তাঁরা জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে সারিবদ্ধ হতে হতেই (আযান ও) নামাযের আকামত দেয়া হবে। তখন ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) নাজিল হবেন। এরপর (নামায আদায় করা হবে ইমাম মাহদীর ইমামতীতে এবং নামাযের পর দাজ্জালের মুকাবেলায় মুসলীম উম্মাহ’র) তিনি নেতৃত্ব দিবেন। আল্লাহ’র দুশমন (দাজ্জাল) যখন তাঁকে দেখবে, তখন সে এমনভাবে গলে যাবে যেভাবে লবণ পানিতে গলে যায়। তিনি যদি তাকে (ওভাবেই) ছেড়ে দিতেন, তাহলে (সে গলতে গলতে) একসময় (পুরাপুরি) ধ্বংস হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ ঈসা (আ.)-এর হাত দ্বারা তাকে হত্যা করবেন। তাই (শেষ পর্যন্ত) ঈসা (আ.)-এর বর্শার মধ্যে তার রক্ত তারা দেখতে পাবে। [সহিহ মুসলীম ২৮৯৭]।
[…] মালহামা ও মালাহীম পোস্টে বিস্তারিত […]
[…] মালহামা ও মালাহীম পোস্টে বিস্তারিত […]