ভালোবাসা শুধু মুখে (আল ওয়ালা ওয়াল বারা)

মানুষ যাকে ভালোবাসে তাকে বেশি স্মরণ করে। আমরা দাবি করি আল্লাহকে ভালোবাসি, অথচ দিনে কতবার আল্লাহকে স্মরন করি!? মানুষ যাকে ভালোবাসে তার সাক্ষাতের জন্য অশ্রুঝরায় ও নিঃঘুম রাত কাটায়। কত রাত কেটেছে আমাদের তাহাজ্জুদে অশ্রুসিক্ত আর্তনাদে রবের সাক্ষাতের জন্য!? মানুষ যাকে ভালোবাসে তার বিরোধিতাকারীকে অপছন্দ করে, অথচ আল্লাহর বিরোধিতাকারীর সাথে আমাদের বন্ধুত্ব। খেলা, মুভি ভালোবাসে যে লোকটা সে নিমিষেই কত খেলোয়াড়, তারকাদের নাম বলতে পারে। কত গান, রেকর্ড তার মুখস্থ আছে। অথচ আল্লাহর ভালোবাসার দাবিদাররা আল্লাহর গুণবাচক নামও জানে না, জানে না কুরআনের আয়াত। তার মানে আমাদের ভালোবাসা আল্লাহর প্রতি যতটা তারচেয়ে খেলা, মুভি, তারকাদের প্রতিই বেশি। মানুষ যাকে ভালোবাসে তার কথার মূল্যায়ন করে, তার সাথে করা অঙ্গীকার রাখার শতভাগ চেষ্টা করে, আল্লাহকে ভালোবাসার দাবিদাররা কুরআনের কথার কতটা মূল্যায়ন করে। মানুষ যাকে ভালোবাসে তার শত্রুকে শত্রু ভাবে, তার বন্ধুকে বন্ধু ভাবে। অথচ আল্লাহর শত্রুদের সাথে বন্ধুত্ব আর তার প্রিয় বান্দাদের করে অবজ্ঞা এই কেমন ভালোবাসা!!? আসলে আমরা মুখে আল্লাহকে ভালোবাসার দাবি করি অথচ কর্ম তার বিপরীত। মুসলিমরা সফল তখনই হবে যখন আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে, আল্লাহর জন্য শত্রুতা করবে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- “আল্লাহ পাকের বান্দাদের মধ্যে এমনকিছু মানুষ আছে যারা নবীও নয়, শহীদও নয়। কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে উনাদের সম্মাজনক অবস্থান দেখে নবী ও শহীদগণও অবাক হবে। সাহাবী (রাঃ) বলেন, ওরা কারা, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন- ওরা সেসব লোক যারা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালোবাসে। অথচ তাদের মধ্যে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই, কোন অর্থনৈতিক লেনদেনও নেই। আল্লাহর শপথ! তাদের চেহারা হবে নূরানী এবং তারা নূরের মধ্যে থাকবে। যেদিন মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে, সেদিন তাদের কোন ভয় থাকবে না। যেদিন মানুষ দুশ্চিন্তায় থাকবে, সেদিন তাদের কোন দুঃশ্চিতা থাকবে না।” (আবু দাউদ ৩০৬০)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *