সারাবিশ্বে অনেকেই বন্ধু দিবস উদযাপণ করে অথচ তাদের বেশিরভাগই এ দিবসের ইতিহাস জানে না। ১৯১৯ সালে হলমার্ক কার্ডের প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হল দ্বারা এ দিবস উন্নীত হয়েছিল। আগষ্টের প্রথম রবিবারে একে অন্যকে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠাতো ফলে কার্ডের ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠে।
১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এক ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ হয়, এর প্রতিবাদে মৃত ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করে। সেই দিন ছিল আগষ্টের প্রথম রোববার। তখন হতে মার্কিন কংগ্রেস আত্মহত্যাকারীকে সম্মান জানাতে আগষ্টের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেন। যে আত্মহত্যা মহাপাপ আর আত্মহত্যাকারী জাহান্নামী অথচ মুসলিমরা আজ অজ্ঞতাবশত বন্ধুদিবস পালনের মাধ্যমে তাকে সম্মান দিয়ে যাচ্ছে।
বেশিরভাগ তরুনরা বন্ধু বলতে বুঝে যার সাথে প্রায় আড্ডা, খেলা, গল্প নিয়ে সময় কাটানো হয় তাকে। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন-
“আর মুমিন পুরুষ আর নারীরা একে অপরের বন্ধু।”
সুরা তওবাঃ ৭১
আল্লাহ তাআলা আরও বলেন-
“নিশ্চয় জালেমরা একে অপরের বন্ধু আর মুত্তাকীদের (আল্লাহ ভীরু) বন্ধু হল আল্লাহ।”
সুরা জাসিয়াঃ ১৯
আর বেশিরভাগ মানুষ এমন ব্যক্তিদের বন্ধু বানায় যার সাথে দুঃখের কথা শেয়ার করলে হয় উপহাস করে নতুবা সিগারেট নামক নেশা ধরিয়ে দেয় দুঃখ ভোলানের নামে অথবা তাদের সাথে অশ্লীল সিনেমা, নাটক, নাচ-গানের আলোচনারত হয় অথবা কোন সুন্দরী মেয়ের সাথে প্রেমের সাহায্যকারীকে পরমবন্ধু ভাবে, তাহলে বুঝতে হবে এই বন্ধুত্ব জাহান্নামের পথে নিয়ে যাবে। কেয়ামতের দিন এই বন্ধু কোন কাজে আসবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন-
“পাপিষ্ঠদের জন্য কোন বন্ধু থাকবে না আর কোন সুপারিশকারীর কোন সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না।”
সুরা মুমিনঃ ১৮
সুরা মাআরিজে আছে-
“আর (সেদিন) অন্তরঙ্গ বন্ধু অন্তরঙ্গ বন্ধুকে জিজ্ঞাস করবে না।”
আয়াতঃ ১০
আর যদি কোন ব্যক্তি আল্লাহ ও মুমিনদের বন্ধু বানাত তার সুখের সময় আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাত, দুঃখের সময় ধৈর্য্যধারণ, ক্ষমা ও সাহায্য প্রার্থনা করত তাহলে সে ইহকাল ও পরকালে বিজয়ী হত।
আল্লাহতালা বলেন-
“তোমাদের বন্ধু কেবল আল্লাহ, তার রাসুল আর মুমিনগণ যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহর কাছে অবনত হয়। আর যারা আল্লাহ ও তার রাসুল আর মুমিনদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, নিশ্চয় সেটি আল্লাহর দল তারা বিজয়ী হবে।”
সুরা মায়েদাহঃ ৫৫-৫৬
সুতরাং আড্ডাবাজ, বেনামাজী, গানপ্রিয়, প্রেমিক ব্যক্তিদের সাথে বন্ধুত্ব করে কেউ হয়তো সাময়িক গান, প্রেম, নেশার আনন্দ নিতে পারে পরবর্তীতে সে বন্ধু জাহানন্নামের সঙ্গীই হবে পক্ষান্তরে কোন জ্ঞানী দ্বীনদার ব্যক্তিকে বন্ধু বানালে সেই চিরস্হায়ী জান্নাতের সুমধুর গান, পবিত্র মদ, চিরস্হায়ী সৌন্দর্য্য উদ্যান ও চিরকুমারী হুরগনের সঙ্গ লাভের পথ দেখিয়ে দিবে।
আল্লাহপাক বলেন,
“নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের ভয় নেই আর তারা চিন্তিত হবে না। তারা হলো যারা ঈমান এনেছে ও তাকওয়া অর্জন করেছে।”
সুরা ইউনুসঃ ৬২-৬৩