মুসলিমরা কাফেদের অনুসরন করবে এবং মুসলিম সমাজে শিরকের প্রবেশ ঘটবে, যেমনটা বনী ইসরায়েল জাতির হয়েছিল।
কুরআনে বর্নিত-
আর আমি (রব), বনী ইসরাঈলকে সাগর পার করিয়ে দেই; তারপর তারা মূর্তিপূজায় রত এক জাতির কাছে উপস্থিত হয়। তারা বলল, হে মূসা! তাদের মা’বুদদের ন্যায় আমাদের জন্যও একজন মা’বুদ স্থির করে দাও। তিনি বললেন, তোমরা তো এক জাহিল সম্প্রদায়। (সুরা আরাফ- ১৩৮)
বনী ইসরাঈলদের মত অবস্থা এ উম্মতের মধ্যে ঘটেছে এবং নিত্য ঘটছে। এ উম্মাতের মধ্যেও কিছু না বুঝে না শুনে অন্যান্য জাতির অনুকরণে শির্ক ও কুফরী করার মানসিকতা রয়ে গেছে।
আবু ওয়াকিদ আল-লাইসি থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এক হাদীসে এসেছে, আবু ওয়াকিদ বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হুনাইনের দিকে এক যুদ্ধে বের হলাম। আমরা একটা বরই গাছের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমি বললামঃ হে আল্লাহর নবী! আমাদের জন্য এ গাছটিকে লটকানোর জন্য নির্ধারিত করে দিন যেমনটি নির্ধারিত রয়েছে কাফেরদের জন্য।
কারণ কাফেরদের একটি বরই গাছ ছিল যাতে তারা তাদের হাতিয়ার লটকিয়ে রাখত এবং তার চতুষ্পার্শ ঘিরে বসত। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহু আকবার! এটা তো এমন যেমন বনী ইসরাঈল মূসাকে বলেছিলঃ “তাদের যেমন অনেক উপাস্য রয়েছে আমাদের জন্যও তেমন উপাস্য নির্ধারিত করে দিন”। অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতির অনুসরণ করবে। [তিরমিযীঃ ২১৮০ মুসনাদে আহমাদঃ ৫/২১৮, ইবন হিব্বানঃ ৬৭০২)
বনী ইসরায়েল জাতির মত আমাদের অনেকেও কাফেরদের অনুসরণ করছে, শিরকে লিপ্ত হচ্ছে। কাফেররা রাষ্ট্র হতে ধর্মকে আলাদা করলো, ধর্মীয় কিতাব বাদ দিয়ে বিভিন্ন চেতনা, তন্ত্র দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করলো। ফলে রাষ্ট্রীয় নেতারা, সভাসদ আইন তৈরি করতো, সেই অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা হয় আর ধর্মীয় নেতাদের ক্ষমতা হল উপাসানালয়ে। মানুষকে ধর্মীয় উপদেশ ও শিক্ষা দিবে কিন্তু রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতি পরিবর্তন ও সংশোধনের ক্ষমতা তাদের নেই।
তাদের দ্বীনের আদর্শ বাদ দিয়ে রাষ্ট্রীয় নেতাদের আদর্শ হয়ে উঠল মূখ্য। স্বাধীনতার গর্ব ও বিভিন্ন চেতনার নামে রাষ্ট্রীয় নেতাদের বিভিন্ন উপাধিতে ঘোষিত করল। তাদের ও বিভিন্ন দেশীয় চেতনা (প্রানী, ঐতিহ্য) নামে ভাস্কর্য গড়লো, বহু শিরকী দিবস ও অনুষ্ঠান চালু করলো। ফলে জাতির অধিকাংশ না জেনেই তা অনুসরণ করলো।
অনুরূপ দৃষ্টান্ত – মুসলিম নামধারী রাষ্ট্রব্যবস্হায়। মুসলিমরা শাসন করতো আল্লাহর কিতাব দ্বারা। মজলিসে শুরা ও বিচক্ষণ আলেমদের অভিমত অনুযায়ী নেতা নির্বাচন হতো। ধীরে ধীরে জাতীয়তাবাদ, স্বাধীনতার নামে রসুলের (সা:) আদর্শ বাদ দিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় নেতাগন হয়ে উঠলো আদর্শ।
রাষ্ট্র হতে দ্বীন আলাদা হয়ে গেল। আলেম ওলামাদের আলোচনা ও ক্ষমতা, দ্বীনী ইলেম, আখলাক, ব্যক্তি ইবাদতের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেল। মসজিদে রসুল (সা) আদর্শ হলেও মসজিদের বাহিরে এলাকা হতে শুরু করে রাষ্ট্রীয় বড় পর্যায়ে অন্যদের আদর্শই পালিত হয়। এসব রাষ্ট্রীয় নেতা আদর্শ পুরুষকে বিভিন্ন উপাধিতে ঘোষণা করা হলো। রাষ্ট্রীয় ,স্বাধীনতা, চেতনার নামে ভাস্কর্য ও বিভিন্ন শিরকী আচার অনুষ্ঠান পালিত হল, হচ্ছে। অনেকে অজান্তে এসকল শিরকে লিপ্ত হচ্ছে!!
আল্লাহ সকলকে বুঝার তৌফিক দিন।