নুসাইরিয়া ও শিয়াদের ভ্রষ্টতা এবং তাদের ভ্রান্ত আকিদা

সকল মাযহাব এমনকি শিয়াদের বাকীদলগুলো একমত ছিলো নুসাইরিয়ারা কাফের এবং মুসলিমদের বড় শত্রু তারা।কিন্তু আয়াতুল্লাহ খামেনী (আয়াতুল্লাহ অর্থ আল্লাহর নির্দশন শিয়াদের উপাধি, যে আল্লাহর তরফ হতে সরাসরি পথপ্রদর্শক, নাউজুবিল্লাহ), সোলেমানি ওদের সাহায্য করে রাশিয়ার মদদে ফলে ৫ লাখ মুসলিম, শিশু, নারীকে হত্যা করা হয়। এমনকি বনু কাল্ব বংশের নুসাইরিয়া, যারা সিরিয়ার ক্ষমতায় তারা ঈমাম মাহাদীর বিরুদ্ধে প্রথম যুদ্ধ করবে (মুসলিম শরীফ- কেয়ামতের ফেতনা অধ্যায়,আল ফিতান)। আজ বহু মুসলিম দেশ ও মুজাহিদ দাবিদাররা সেসব শিয়া ও তাদের সমর্থকদের সাথে সুস্পর্ক রেখে চলছে। তাদের সাথে বন্ধুত্ব করা মানে রসুলের (সাঃ) সাথে শত্রুতা করা। ইরানের শিয়াদের আকীদা হল- কুরআন বিকৃত, চার সাহাবী ছাড়া সব কাফের এমনকি আবুবকর, উমর, উসমানও। আয়েশা (রা) ও হাফসা (রা) হল রসুলের (সাঃ) হত্যাকারী, নাউজুবিল্লাহ (উসুলুল কাফী,শিয়াদের মূল কিতাব)। অথচ তারা রসুলের (সাঃ) সম্মানিত স্ত্রী ও উম্মতের মা। আমরা আমাদের সম্মানিত মায়ের উপর অপবাদকারীকে কখনও ক্ষমা করতে পারি না যতক্ষণ না তারা তওবা করে ইসলামে ফিরে আসে। সিরিয়ার শিয়া নুসাইরিয়া সম্প্রদায়: বাশার আল আসাদ যে প্রজাতির শীয়া কট্টর বাতেনি এক ফেরকার নাম নুসাইরিয়া। হিজরি তৃতীয় শতাব্দীতে শিয়া দ্বাদশ ইমামিয়া থেকে তাদের উৎপত্তি। ইসলামি আকিদার অন্যান্য শত্রুদের ন্যায় নুসাইরিয়া সম্প্রদায় মুসলিমদের উপর বিপর্যয় ও অনিষ্টের প্রত্যাশায় লেগে থাকে। মুসলিমদের ক্ষতি করার কোনো সুযোগ তারা হাতছাড়া করে না। তারা মুসলিমদের উপর নির্দয়ভাবে নির্যাতনকালে বিশ্বাস করে এ জন্য তাদেরকে অধিক সাওয়াব দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে যার ভূমিকা বেশী, তার সওয়াবও বেশী। এটাই তাদের বিশ্বাস। যুগে যুগে মুসলিমদের প্রতি তাদের আচরণ ও বিদ্বেষ থেকে এসব বিষয় স্পষ্ট। নিকট অতীতে সিরিয়া ও লেবাননের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় তাদের হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। যার শিকার নারী, পুরুষ ও শিশু সবাই। অতীতে তারা মুসলিমদের বিপক্ষে ম্যারোনাইট খ্রিস্টান ও খুমাইনী শিয়াদের সাহায্য করেছে। তারাই সাহায্য করেছিল তাতারি ও ক্রুসেডদের যারা ইসলামি খিলাফত ধ্বংস করেছে, মুসলিম ঐতিহ্য বিনষ্ট করেছে ও মুসলিম নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করেছে। ইতিহাসে যার কোনো নজীর নেই। খোদ নুসাইরি লেখকগণ যা স্বীকার করেছেন।

মুসলিম তথা আহলে সুন্নাহর বিরুদ্ধে যেখানে বিদ্রোহ বা ষড়যন্ত্র দেখা দেয়, সেখানে নুসাইরিয়া সম্প্রদায় মুসলিমদের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। নুসাইরিয়াদের ষড়যন্ত্র, হঠকারিতা ও শত্রুদের সাথে আঁতাতের কারণে যে পরিমাণ হত্যা ও সম্ভ্রম হানি ঘটেছে, তা শুনলে শরীর শিউরে উঠে। তাদের সাথে খ্রিস্টান ও ইহুদিদের রয়েছে গভীর সখ্যতা, আকিদার অনেক মিল। ছয়দিন ব্যাপী আরব-ইসরাইল যুদ্ধ তার স্পষ্ট প্রমাণ। সে যুদ্ধে সিরিয়ার তৎকালিন সেনাপ্রধান আল-আসাদ নুসাইরি ও তার সরকারের ভূমিকা প্রমাণ করে তারা আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত ও তাদের পূর্বসূরী আবু বকর, ওমর, উসমান ও অন্যান্যগণ যারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর শ্রেষ্ঠ মানুষ বলে স্বীকৃত তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে যে কারো সাথে হাত মেলাতে প্রস্তুত।

কুফর, নাস্তিকতা ও গোমরাহিতে নুসাইরিয়া সম্প্রদায় এতটাই নিমজ্জিত যে, তাদের অবস্থা দৃষ্টে হিদায়েতের আশা করা কঠিন। অথচ তাদের দাবি “তারা যাবতীয় কুসংস্কারমুক্ত, সঠিক চিন্তার অধিকারী ও সত্যের অনুসারী”।

প্রিয়পাঠক, তাদের সম্পর্কে জানার জন্য “আল-হাফতুশ শরিফ” কিতাবখানা পড়ুন, যা তাদের বর্তমান যুগের আলেমদের ব্যাপক সম্পাদনা, পর্যালোচনা ও নিরীক্ষার পর মুদ্রিত। আমি আপনাদের সামনে তাদের পবিত্র কিতাব “আল-হাফতুশ শরিফ” থেকে একটি উদাহরণ পেশ করছি, যা থেকে তাদের পথভ্রষ্টতার ধারণা হবে:

“হুসাইন যখন ইরাকের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল, তখন আল্লাহ তার শরীরে অন্তরীণ হলেন। তিনি যেখানে অবতরণ করেছেন, জিবরীল সেখানে তার নিকট এসেছে ও কথা বলেছে। যখন যুদ্ধের দিন উপস্থিত হল, বিরোধী সৈন্য তাকে ঘিরে ধরল, ঘোড়াগুলো সারিবদ্ধ দাঁড়াল ও যুদ্ধের দামামা বেজে উঠল, তখন আমাদের মাওলা হুসাইন জিবরীলকে ডেকে বলেন: হে ভাই! আমি কে? তিনি বললেন: আপনি আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, যিনি চিরঞ্জীব, চিরজাগ্রত, জীবন-মৃত্যুর মালিক। আপনি আসমানকে নির্দেশ করেন, ফলে সে আপনার আনুগত্য করে। আপনার নির্দেশে জমিন স্থির দাঁড়ায়, পাহাড় আপনার ডাকে সাড়া দেয়, সমুদ্রসমূহ আপনার আনুগত্যে দ্রুত ছুটে আসে। আপনি সে সত্তা, যার নিকট ষড়যন্ত্রকারীর ষড়যন্ত্র ও অনিষ্টকারীর অনিষ্ট পৌঁছুতে পারে না।”

“আল-হাফতুশ শরিফের” গ্রন্থকার অন্যত্র বলেন: জিবরীল উমাইয়্যাদের সেনাপ্রধান সাদ ইবনে ওমরকে লক্ষ্য করে বলেন: “তুমি ধ্বংস হও, তুমি দু’জাহানের রব, পূর্বাপর সকল মাখলুকের রব, আসমান-জমিন ও তার মধ্যবর্তী সবকিছুর স্রষ্টাকে হত্যা করছ? ওমর ইবনে সাদ এ ঘোষণা শোনে ভয়ে কম্পিত হয়।” এ জাতীয় আরো অনেক বেহুদা আলোচনা রয়েছে, যা তাদের বোকামি ও নির্বুদ্ধিতার প্রমাণ।

“আল-হাফতুশ শরিফের” লেখক ওমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে গাল-মন্দ করে বলেন: তিনি হুসাইনের যুগে পুনর্জন্ম বিধান মতে ভেড়ার আকৃতিতে ছিলেন, আল্লাহ ফিদিয়া হিসেবে হুসাইনকে তা প্রদান করেন। তিনি ওমরকে জবাই করেন, যার নাম ছিল “দালামাহ” বা “আদলামা”। তিনি মুফাদ্দাল থেকে বর্ণনা করেন, সাদেক তাকে বলেছেন: “হে মুফাদ্দাল, যে ভেড়াটি হুসাইনকে ফিদিয়া হিসেবে দেয়া হয়েছিল, তার নাম আদলাম, কুরাইশদের আদলাম। ওমর তখন বৃদ্ধাবস্থায় ভেড়ার আকৃতিতে ছিল”। অতঃপর তিনি বলেন: তার শিং দু’টি কাবার সাথে ঝুলন্ত রয়েছে। “হে মুফাদ্দাল, বায়তুল হারামে ঝুলন্ত শিং দু’টি তুমি দেখনি? আমি বললাম: হ্যাঁ, হে আমার মনিব। তিনি বললেন: শিং দু’টি ভেড়ার, যা হুসাইনকে ফিদিয়া হিসেবে দেয়া হয়েছিল। অতঃপর সাদেক হাসলেন যে, তার মাড়ির দাঁত পর্যন্ত দেখা গেল। আমি বললাম: হে আমার মাওলা, হাসলেন কেন? তিনি বললেন: হে মুফাদ্দাল, মানুষেরা যখন হজের মৌসুমে মক্কায় সমবেত হয়, তারা ভেড়ার শিং দু’টি উৎসুক হয়ে দেখে, তারা ভাবে এগুলো জান্নাত থেকে এসেছে, তাই আশ্চর্যের দৃষ্টিতে তার প্রতি তাকায়। আর আমরা সেদিকে তাকাই এ হিসেবে যে, এ শিং দু’টি “দালামার”। বস্তু একই, মানুষেরা আশ্চর্য হয় এক হিসেবে, আমরা আশ্চর্য হই অন্য হিসেবে”।

প্রিয়পাঠক, এ অগ্নিপূজক কাবায় ঝুলন্ত দু’টি শিং কোথায়, কিভাবে ও কখন দেখেছে আমরা জানি না, জানি না এর দ্বারা তার উদ্দেশ্য কি। সেখানে আমরা কখনো কোনো শিং দেখিনি, কেউ বর্ণনাও করেনি কাবায় দু’টি শিং রয়েছে।

বর্তমান কালেও (হাফেয আল-আসাদ এর সময়) একবার নুসাইরিয়া সম্প্রদায় হামা শহরে তাদের সেনাবাহিনী নিয়ে যে শ্লোগান নিয়ে হামা শহরের আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে বলছিল, তা কখনও হামার অধিবাসীরা ভুলতে পারবে না, তারা বলছিল, “নাও অস্ত্র, ধর অস্ত্র, মুহাম্মাদের দ্বীন পশ্চাতে ও তিরোহিত” নাঊজুবিল্লাহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *