ধোকার নীতি (অর্থনীতি, রাজনীতি)

সিগারেট কোম্পানি তাদের প্যাকেটে লিখে- ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাদের উদ্দেশ্য এটা নয় যে – মানুষ ধূমপান করা ছেড়ে দিক। বরং সিগারেট বিক্রির প্রচারনায় বহু কর্মচারী নিয়োগ দেয়। বহু নাটক, সিনেমায় স্পন্সর করে যেখানে ধূমপানের দৃশ্য থাকে যাতে মানুষ আকৃষ্ট হয়।

এখানে একটা চতুরতা হলো- যেহেতু কোম্পানি জানিয়ে দিয়েছে ধূমপান ক্ষতিকর, ক্যান্সার হতে পারে সেহেতু দীর্ঘদিন ধূমপান করে কেউ অসুস্থ হয়ে মারা গেলে ওরা কোন ক্ষতিপূরণ বা দায়ভার নিবে না, তাদের উপর মামলা বা জরিমানা হবে না।

এখন প্রশ্ন হল- এভাবে জেনেবুঝে ধূমপান নামক বিষপানে আসক্ত হয়ে রোগে মারা গেলে আত্মহত্যা হবে কিনা?

অপরদিকে বেশিরভাগ দারিদ্র্য দেশে অধিকহারে টেবাকোর কাচামাল তৈরি নিষেধ থাকায়- বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিগুলো সরকারকে অধিক হারে ট্যাক্স দিয়ে গরিব দেশগুলো হতে প্রচুর মুনাফা করে থাকে। আর গরিবদেশে শ্রমিকের খরচ কম, অল্পমূল্যে সিগারেট তৈরি করা যেত!(এটা হারাম আমরা সবসময় এটার বিপক্ষে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে)

আবার সরকার ধূমপান বিরোধী জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য প্রচারনায় (টিভিতে আ্যড, বিলবোর্ডসহ) শত কোটি টাকা ব্যয় করে। অন্যদিকে অসুস্থদের জন্য উন্নত হাসপাতাল, ঔষধের প্রয়োজন হয়- ওদের উপর ভিত্তি করে অনেক কোম্পানি কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে।

অথচ শুধু সিগারেট উৎপাদন, আমদানী ও বিক্রি মন্দ করলেই হাজারো কোটি টাকা অপচয় রোধ করা যেত! যে অর্থায়নে দেশের দারিদ্র্যের উন্নয়ন করা যেত। চিন্তা করেন কারো একদিনের দিনের সিগারেটের খরচ হয়তো ২-৩ দিন গরিবরা পেটভরে খেতে পারতো।

আবার অনেক রাজনীতি দল/আলেম গনতন্ত্রকে হারাম বলে কিন্তু বর্তমানে এর দ্বারা ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখায়। ওদের অভিমত- গনতন্ত্র হতে কুফরসহ ও খারাপ দিক বাদ দিলে রাজনীতি করলে সমস্যা নেই। অথচ আপনি গনতন্ত্র হতে কুফর জীবনেও বাদ দিতে পারবেন না, এই ক্ষমতা তাদের দেওয়া হয়নি।

ধূমপায়ী যেমন শখের বশে ২/১ বার ধূপমান করতে গিয়ে আসক্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তেমনি গনতন্ত্রে একবার প্রবেশ করলে ধীরে ধীরে পরিপূর্ণভাবে এর আর্দশ ও প্রভাবে জড়িয়ে যাবেন যাতে ঈমান ও চারিত্রিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

জেনে-বুঝে হারাম ধূমপানে আসক্ত হয়ে মারা গেলে দায়ভার ব্যক্তির নিজের। এটা অনেকটা আত্মহত্যার মত নয় কি! তেমনি জেনে-বুঝে হারাম গনতন্ত্রে প্রবেশ করে কুফর, শির্ক নীতিতে জড়িয়ে ঈমান হারা হলে দায়ভার তাদের!

আবার যেকোন বিষ/ধূমপান কেউ হালাল ভেবে খেলেও ক্ষতির সম্মুখীন হবে আর কেউ হারাম ভেবে গ্রহন করলেও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। তেমনি গনতন্ত্রের ক্ষেত্রেও হালাল/হারাম যাই ভাবুন এতে জড়ালে ঈমান ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এখন ধূমপায়ী কেন জানলো না সিগারেট ক্ষতিকর যা প্যাকেটে লেখা আছে। নাকি অধিকাংশ নফসের প্রতারণায় হারাম ছাড়তে রাজি নয়। তেমনি গনতন্ত্র হারাম নিয়ে বহু ওয়াজ, পোস্ট, প্রচারণার পরও বর্তমানে জানে না বলা অধিকাংশ লোকেরা আসলে সত্য গ্রহন করতে রাজি নয়।

তাই গনতান্ত্রিক রাজনীতির পিছনে হাজার টাকা খরচ করে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হলো- সিগারেট আমদানী, বিক্রি বন্ধ না করে শুধু এর বিরোধী প্রচারণা ও হাসপাতাল গড়ে রোগ প্রতিরোধের ব্যর্থ চেষ্টার মতন। সিগারেট কোম্পানিগুলো যেমন প্রভাবশালীর ব্যক্তি/দেশের নিয়ন্ত্রনে। তেমনি গণতন্ত্রের নিয়মগুলোও প্রভাবশালী ব্যক্তি/দেশের প্রভাব থাকবেই।

খেয়াল করুন – ধূমপায়ীর সংখ্যা বাড়ছে না কমছে? এত ওয়াজ চলছে গণতন্ত্র মানতে গিয়ে ইসলাম আসছে না বরং মুমিনরা আজ ঈমানহারা হচ্ছে!

তাই হাজারো কোটি টাকা ব্যর্থ পথে খরচ করার চেয়ে আমাদের অর্থ, শ্রম, দাওয়াহ উত্তম পথে করা উত্তম!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *