আল্লাহ যুগে যুগে পৃথিবীতে অসংখ্য নবী রাসূল প্রেরণ করেছেন। মানুষ যখনই গোমরাহ হয়ে যায় তখনই আল্লাহ মানুষকে দ্বীনে ফিরিয়ে আনার জন্য তাদের প্রেরণ করেন। এই মর্মে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
অর্থাৎ, অবশ্যই আমি প্রত্যেক জাতির নিকট রসূল প্রেরণ করেছি এই প্রত্যাদেশ দিয়ে যে, “তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত থেকে দূরে থাক।” (সূরা নাহল ৩৬ আয়াত)।
কাফিররা পরিকল্পিতভাবে রাসূল (সা)-এর উপরে নানা অপবাদ আরোপ করে মানসিকভাবে তাঁকে কষ্ট দিত।
তাদের আরোপিত অপবাদসমূহ যেমন-
(১) পাগল (তূর ৫২/২৯),
(২) কবি (ছাফফাত ৩৭/৩৫-৩৬),
(৩) জাদুকর ও
(৪) মিথ্যাবাদী (ছোয়াদ ৩৮/৪)
(৫) পুরাকালের উপাখ্যান বর্ণনাকারী (আনফাল ৮/৩১; ফুরক্বান-২৫/৫),
(৬) অন্যের সাহায্যে মিথ্যা রচনাকারী (ফুরক্বান-২৫/৪),
(৭) মিথ্যা রটনাকারী (নাহল-১৬/১০১; ফুরক্বান-২৫/৪),
(৮) ভবিষ্যদ্বক্তা (তূর ৫২/২৯),
(৯) পথভ্রষ্ট (তাত্বফীফ ৮৩/৩২),
(১০) বেদ্বীন (আর-রাহীকুল মাখতূম,)
(১১) পিতৃধর্ম বিনষ্টকারী ও
(১২) জামা‘আত বিভক্তকারী (আর-রাহীকুল মাখতূম),
(১৩) জাদুগ্রস্ত (বনী ইসরাঈল ১৭/৪৭),
(১৪) মুযাম্মাম (নিন্দিত) (আর-রাহীকুল মাখতূম, ৮৭) কুরায়েশরা রাসূল (ছাঃ)-কে গালি দিয়ে ‘মুযাম্মাম’ (নিন্দিত) বলত।(বুখারী, মিশকাত হা/৫৭৭৮)
(১৫) ‘রা‘ইনা’ (বাক্বারা ২/১০৪) প্রভৃতি।
এসব নির্যাতনের পরিণতিতে এরা দুনিয়াতে হেদায়াত থেকে বঞ্চিত হয় এবং পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। মহান আল্লাহ বলেন,
‘দেখ, ওরা তোমার জন্য কেমন সব উপমা দেয়। ওরা পথভ্রষ্ট হয়েছে। অতএব ওরা পথ পেতে পারে না’ (বনী ইসরাঈল ১৭/৪৮)।
তাছাড়াও তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে নিপীড়ন করেছে এমনকি বহুবার হত্যার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তিনি সিজদায় গেলে কাধের ওপর নাড়িভুড়ি চাপিয়ে দেন। তাকে তিন বছর অবরোধ করে রাখা হয়। তায়েফে তাকে রক্তাক্ত করা হয়। হিজরতের সময় হত্যাচেষ্টা করা হয়।
আসুন রসুলের (সাঃ) প্রিয় দাঈর জীবনী জানি
মক্কার এক অভিজাত পরিবারে যার জন্ম। তাঁর বাবা ছিলেন মক্কার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বাবা-মা’র অনেক আদরের সন্তান ছিলেন মুসআব। ছোটবেলা থেকেই অঢেল বিত্তের মাঝে বেড়ে উঠেছেন। দুঃখ-ক্লেশ, দারিদ্র্য কিংবা না পাওয়ার বেদনা তাঁকে স্পর্শ করেনি কখনও। আদরের সন্তান হওয়ায় যখন যা চেয়েছেন, পেয়েছেন তার চেয়ে ঢের বেশি।
তিনি যেসব কাপড় পড়তেন তা মক্কায় পাওয়া যেত না। সিরিয়া কিংবা ইয়ামান থেকে নামি দামি কারুশিল্পীদের তৈরী কাপড় আসত তাঁর জন্য। আরবের সবচেয়ে দামি আতর ব্যবহার করতেন তিনি। সে আতরের ঘ্রান এমন হতো যে, তিনি কোনো পথ দিয়ে গেলে মানুষজন তা আন্দাজ করতে পারত। মানুষ বুঝত, এই আতর মুসআব ছাড়া অন্য কারও নয়। তাঁর চালচলন, পোশাক-পরিচ্ছেদ, কথাবার্তায় ছিল আভিজাত্যের ছাপ। আর এই জন্যেই মক্কার অন্যান্য যুবকদের থেকে তাঁকে সহজেই আলাদা করা যেত। যুবক হওয়া সত্ত্বেও বড়ো বড়ো নেতাদের সমাবেশে স্থান পেতেন তিনি। তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়ার মতো
একদিন তিনি শুনতে পেলেন মুহাম্মাদ (সা.) নাকি নতুন দ্বীন প্রচার শুরু করছেন। আর দিন দিন সে দ্বীনের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে মানুষ। প্রতিনিয়ত বেড়েই যাচ্ছে মুহাম্মাদ (সা.)-এর অনুসারীর সংখ্যা। কুরাইশদের শত অত্যাচারের মুখেও মাথা নত করছে না তাঁরা। যত অত্যাচার করা হচ্ছে, তাদের ঈমান তত মজবুত হচ্ছে। এসব শোনার পর তিনি ভাবতে লাগলেন কেন মানুষ মুহাম্মাদের দিকে এতটা ঝুঁকে পড়ছে? প্রশাসনের লোকেরা তাঁকে জাদুকর বলছে, পাগল বলছে। আবার কেউ-কেউ বলছে, মুহাম্মাদকে জিনে ধরেছে। আসল ব্যাপারটা কী? তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন সরাসরি মুহাম্মাদ(সা.) -এর সাথে দেখা করবেন। খোঁজ নিয়ে জানলেন, মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথিরা মাঝে মধ্যে জড়ো হন আরকামের বাড়িতে। সাফা পাহাড়ের পাদদেশেই আরকামের বাড়ি। সব দ্বিধা ঝেড়ে একদিন সন্ধেবেলায় আরকামের বাড়িতে হাজির হলেন তিনি। পৌঁছে দেখলেন মুহাম্মাদ ও তাঁর সাথিরা সেখানে বসা। তিনিও বসে গেলেন তাদের মজলিসে, মনোযোগ দিয়ে শুনতে লাগলেন মুহাম্মাদ (সা.)-এর কথাগুলো। ইতোমধ্যে জিবরীল (আ.) এলেন। কুরআনের আয়াত নাজিল হলো। রাসূল সাহাবিদের তা পাঠ করে শোনালেন। মুসআব হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করার চেষ্টা করলেন আয়াতগুলো। অন্যরকম এক শিহরন অনুভব করলেন হৃদয়ে। আয়াতগুলো তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতে লাগল। চোখেমুখে ফুটে উঠল পরিবর্তনের ঢেউ। মুহাম্মাদ (সা) তাঁর দিকে তাকালেন। পবিত্র হাত রাখলেন মুসআবের বুকের ওপর। গভীর প্রশান্তি অনুভব করলেন মুসআব। ঈমান তাঁর অন্তরে দৃঢ়তর হলো। এদিনই মুসলিম হলেন তিনি।
মুসআব তাঁর মাকে খুব ভয় করতেন। তাই ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি গোপন রাখলেন। চুপি চুপি যেতে লাগলেন রাসূল (সা)-এর মজলিসে। দারুল আরকামে যাওয়া-আসাও চলতে থাকল। একদিন দারুল আরকামে ঢোকার সময় উসমান ইবনু তালহা দেখে ফেলল তাঁকে। আরেকদিন সালাত আদায় করার সময়ও ধরা পড়লেন ইবনু তালহার হাতে। ফলে তাঁর ইসলাম গ্রহণের খবরটি প্রকাশিত হয়ে গেল। বাতাসের বেগে সে খবর ছড়িয়ে পড়ল মক্কার অলিতে-গলিতে। পৌঁছে গেল তাঁর মা’র কাছেও। মক্কার মুশরিকরা যারপরনাই বিস্মিত হলো।
তারা কোনোভাবেই বিষয়টা মেনে নিতে পারছিল না। মুসআবের মতো অভিজাত ব্যক্তি কীভাবে মুহাম্মাদ (সা.) -এর ওপর ঈমান আনতে পারে? তবে কি মুসআবের মতো প্রজ্ঞাবান যুবকের ওপরেও মুহাম্মাদ (সা.) জাদু করল? মুসআবকে হাজির করা হলো মুশরিক নেতাদের সামনে। তাঁর মা-কেও ডেকে আনা হলো। সবাই মিলে তাঁকে বুঝাতে লাগল, এটা তুমি কী করলে? অভিজাত বংশের ছেলে হয়েও গরিবদের সাথে বসে গেলে? এত বিচার- বিবেচনাবােধ থাকা সত্ত্বেও কিনা মুহাম্মাদের কথায় প্রভাবিত হলে? ওদের কথাগুলো মুসআবের ওপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারল না। একটুও বিচলিত হলেন না তিনি। উপদেশ-পর্ব শেষ হলে তিনি তিলাওয়াত করতে শুরু করলেন কুরআনের অমিয় বাণী। তিলাওয়াত শুনে মা রাগান্বিত হলেন।
মারধরও করলেন। কিন্তু চুপ করে সব সয়ে নিলেন মুসআব। এই অবস্থা দেখে মুশরিকরা আরও ক্ষোভে জ্বলতে লাগল। সেদিন বাড়ি ফেরার পর তাঁর মা তাঁকে ঘরে বন্দি করে রাখলেন। বন্দি অবস্থায় চলতে থাকল নানান নির্যাতন। বারবার তাঁকে ইসলাম ত্যাগ করার কথা বলা হলো। কিছু এক চুলও নড়লেন না তিনি। সৃষ্টির ভয় তাঁকে স্রষ্টার ওপর আনীত ঈমান থেকে ফেরাতে পারল না। ইমাম ইবনু তাইমিয়্যা বলেছেন, সৃষ্টিকে কেবল সে-ই ভয় করতে পারে, যার অন্তরে রোগ আছে। মুসআবের অন্তর ছিল পবিত্র, কলুষতামুক্ত। এমন অন্তর কীভাবে সৃষ্টির অত্যাচারে ভীত হতে পারে? তাই তো অত্যাচারের-পর-অত্যাচারও টলাতে পারল না তাঁকে। একদিন সবার চোখে ধুলো দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেলেন তিনি। নিজেকে উৎসর্গ করার যোগ্য করেছেন।
রাসূলুল্লাহ সা.কে ঘিরে সাহাবায়ে কেরাম বসে আছেন। এমন সময় হযরত মুসআব রা. সেখানে উপস্থিত হলেন। তাঁকে দেখেই সকলে মাথা নীচে নামিয়ে নিলেন। চোখগুলো ঢেকে নিলেন। কারো কারো চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু বইতে শুরু করল। কারণ, হযরত মুসআব রা. পুরাতর্ণ জীর্ণ তালিযুক্ত একটি জামা পরে আছেন। তাঁর গায়ে এ জামা দেখে তাদের মনে হযরত মুসআবের ইসলাম গ্রহণের পূর্বের সেই স্বাচ্ছন্দময় দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। যখন তিনি বাগানের তাজা ফুলের মত সুরভি মিশ্রিত পোশাক পরতেন। যে পথে হাঁটতেন তার পোশাক থেকে খুশবু ছড়াতো।
রাসূলুল্লাহ সা. দৃশ্যটি দেখলেন। যে দেখায় ঝরে পড়ছিল হিকমত, কৃতজ্ঞতা, মুহাব্বত। তাঁর পবিত্র ওষ্ঠদ্বয়ে লেগেছিল সেই মুচকি হাঁসির ঝিলিক। তিনি বললেন, “আমি এই মুসআবকে দেখেছি। তখন মক্কায় তার চেয়ে অধিক আদরের ও স্বাচ্ছন্দময় জীবনযাবনকারী কোন যুবক ছিল না। এরপর আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালবাসায় সব কিছু ত্যাগ করল।”
রসুলুল্লাহর (সাঃ) দাঈ হিসেবে তিনি মদীনা গিয়েছিলেন। তার দাওয়াতের বদৌলতে বহু সাহাবী (রা) মুসলিম হয়েছিল। মদীনায় রসুল (সাঃ) ও মুসলিমদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় তৈরি হয়েছিল আস্তে আস্তে ইসলাম ছড়িয়েছে চারপাশে।
জেহাদের ময়দানে প্রিয় দাঈ
উহুদের ময়দান মুসলিমদের অবস্হা ভয়াবহ – এই সুযোগে কুরাইশরা নবীজি (সা.) কে টার্গেট করে বসে। যুবক মুসআব বিপদের তীব্রতা বুঝতে পারলেন। উঁচু করে ধরলেন ইসলামের পতাকা আর তাকবীর দিতে দিতে ঘোড়া ছুটিয়ে গেলেন নবিজিকে নিরাপত্তা দিতে। একহাতে ঝান্ডাধারী মুসআব অন্য হাতে তলোয়ার নিয়ে শত্রুবাহিনীর মধ্যে ঢুকে গেলেন। যুদ্ধ করতে লাগলেন বীর-বিক্রমে।
শত্রুদের আক্রমণ থেকে নবীজিকে রক্ষা করতে নিজেকে ঢাল বানালেন তিনি। ইবনু কামিয়ার আঘাতে তার ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল দেহ থেকে। সাথে সাথে বাম হাতে তুলে নিলেন ইসলামের পতাকা। আর বলিষ্ঠ কন্ঠে বলতে লাগলেন, (ওয়ামা মুহাম্মাদুন ইল্লা রসূল, ক্বদ খলাত মিন ক্ববলিহির রসূল)। পরে তার বাম হাতটিও দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হলো। কর্তিত বাহু দ্বারাই ধরে রাখলেন ঝান্ডাটি। এবার একটি বর্শার আঘাতে তার বুক এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গেল। বীরের মতো লড়াই করতে করতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন মুসআব।
যুদ্ধ শেষ হলো৷ শহীদদের লাশগুলো জড়ো করা হলো এক জায়গায়। মুসআবের লাশটি আনা হলো৷ রক্ত আর ধুলোবালিতে তার চেহারা একাকার। সাহাবিরা এ দৃশ্য দেখে কান্না শুরু করলেন। নবিজি (সা.) ও কাঁদলেন।
মুসআবকে দাফন করার জন্যে একটি চাদর আনা হলো। একপ্রস্থ চাদর ছাড়া আর কিছু পাওয়া গেল না। সে চাদরে মাথা ঢাকালে পা, আর পা ঢাকলে মাথা বেরিয়ে যাচ্ছিল।
নবীজি মুসআবের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমি তোমাকে মক্কায় দেখেছি। সেখানে তোমার চেয়ে কোমল চাদর এবং সুন্দর যুলফি আর কারও ছিল না। আর আজ তুমি এ চাদরে ধুলিমলিন অবস্থায় পড়ে আছো। আল্লাহর রাসুল সাক্ষ্য দিচ্ছে, কিয়ামতের দিন তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে সাক্ষ্যদানককারী হবে।
খাববাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে হিজরত করেছি একমাত্র আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য। আমাদের পুরস্কার আল্লাহ্র নিকটই নির্ধারিত। আমাদের মধ্যে অনেকেই তাঁদের কুরবানীর ফল কিছুই দুনিয়ায় ভোগ না করে আখিরাতে চলে গিয়েছেন; তার মধ্যে মুসআব ইব্নু উমায়ের (রাঃ) অন্যতম। তিনি ওহুদ যুদ্ধে শহীদ হন। তাঁকে কাফন দেওয়ার জন্য তার একটি চাদর ছাড়া আর অন্য কিছুই আমরা পেলাম না। আমরা এ চাদরটি দিয়ে যখন তাঁর মাথা ঢাকলাম তাঁর পা বের হয়ে গেল আর যখন তাঁর পা ঢাকতে গেলাম তখন মাথা বের হয়ে গেল। তখন রসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নির্দেশ দিলেন, চাদরটি দিয়ে তাঁর মাথা ঢেকে দাও এবং পা দু’টির উপর ইয্খির ঘাস রেখে দাও। আজ আমাদের মধ্যে এমন আছেন যাঁদের ফল পেকে গেছে এবং এখন তারা তা সংগ্রহ করছেন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬২৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬২৯)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৯১৪
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সাহাবী সকলেই দাঈ ছিলেন তেমনি ছিলেন মুজাহিদ আবার তারা কৃষিকাজ, ব্যাবসাও করতেন। তারা বেচে থাকবেন আর রসুলকে (সাঃ) আঘাত করবে তা ভাবাও যেত না। তারা ইসলামের জন্য নিজের জানমাল কুরবানী দিয়েছেন।
আজ বহু দাঈ পাবেন যারা ইসলাম প্রচার করে বিলাসী জীবনযাপন করে অথচ ইসলাম ও রসুলকে (সাঃ) গালি দেওয়া হয়, ওদের উপর জেহাদ আসে না, না আসে জেহাদের, না ফজিলতের বয়ান।
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মারা গেল অথচ সে জিহাদ করেনি এবং অন্তরে জিহাদ সম্পর্কে কোন চিন্তা-ভাবনাও করেনি, সে মুনাফিক্বীর একটি শাখায় মৃত্যুবরণ করল।” ( আবূ দাউদ, রিয়াদুস সলেহিন)
রসুলগণ, সাহাবী ও যুগের ঈমামদের জীবনী দেখেন তারা কি বিলাসী ছিলেন, কতটা সম্পদ অর্জন করেছেন ইসলাম দিয়ে তাদের সাথে বর্তমানের কতজনের মিলে।
আর রসুল (সাঃ) ও সাহাবীরা দাওয়াত দিয়েছেন সবচেয়ে বেশি সমকালীন শিরক, অবিচার সম্পর্কে আর বর্তমান হাজারো ওয়াজ হয় – অথচ ইসলামের মূল ব্যাপার কালেমার রুকন, তাগুত, আল ওয়ালা ওয়াল বারা, আহলে বায়াতের ফজিলতের কথা অধিকাংশ মুসলিমই জানে না। ইসলামের মূল ব্যাপার ছেড়ে যেসব ওয়াজ করলে জনপ্রিয় হওয়া যায় অনেকেই তা নিয়ে ব্যস্ত।