দেশপ্রেম ও ভূখন্ডপ্রীতি

এটা দেশের জন্য গর্ব, এটা দেশের নাম উজ্জ্বল করছে, ভাই দেশের সংজ্ঞা কি কেউ সুস্পষ্ট জানেন? দেশপ্রেমের নামে জাতীয়তাবাদ ও ভূখন্ডপ্রীতির নামে কুফর করে চলছে মানুষ।দেশ বলতে যে সীমানাবেষ্টিত প্রাচীর বুঝাচ্ছে তা কি আল্লাহর তৈরি? না ইংরেজদের ধরিয়ে দেওয়া সীমানা প্রাচীর। এই ভূখন্ডের জন্য আজ যুদ্ধ হচ্ছে। জাহেলিয়াতের যুগে মানুষ গোত্রের জন্য যুদ্ধ করত। গোত্রের কোন লোকের সাথে লড়াই হলে গোত্রের বাকী লোকেরা ভাল-মন্দ, দোষী-নির্দোষী বিচার না করে তাতে লিপ্ত হত। ইসলাম এসে সকল বিরোধ মিটিয়ে দেয়। যে ইসলাম গ্রহণ করে কালেমা স্বীকৃতি দিয়েছে সে অতীতে যত বড় শত্রু হোক পরস্পর ভাই-বন্ধু হয়ে যায়। খালেদ বিন ওয়ালিদ ও ইকরামা বিন আবু জাহেল তার উদাহরণ। আর যে এই দ্বীনের সাথে শত্রুতা করবে সে পিতা, মাতা, ভাই হোক সে মুসলিমদের শত্রু। বদর, ওহুদ যুদ্ধ কি তার উদাহরণ নয়?? ইসলাম এই শিক্ষা দেয় সারাবিশ্বের মুসলিমরা ভাই-ভাই, এক আল্লাহর ইবাদাত করবে। এক রাসুলের অনুসরন করবে, তাদের একজন বিশ্বনেতা থাকবে যে এক সংবিধান কুরআনের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। যে একজন মুসলিমের সাথে শত্রুতা করল সে প্রতিটা মুসলিমের শত্রু হল। আর আজ জাতীয়তাবাদের অনুসারীরা আমাদের শিখায় – তুমি যে ভূখন্ডে জন্মাচ্ছ সে ভূখন্ডকে শ্রেষ্ঠ ভূখন্ড মানতে হবে অথচ যিনি ভূখন্ড সৃষ্টি করেছেন তিনি ঘোষনা করেছেন জমিনের শ্রেষ্ঠ স্হান মসজিদুল হারাম (মক্কা) ও মসজিদুল নববী (মদীনা)। দেশীয় চেতনার নামে শিখানো হচ্ছে তুমি যে ভূখন্ডে থাক সে ভূখন্ডের লোকগুলোকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে আর ইসলাম শেখায় আল্লাহর জন্য ভালোবাসতে হবে, আল্লাহর জন্য শত্রুতা করতে হবে। তাই তো মদীনার সাহাবীরা মক্কার রাসুলকে (সাঃ) সবকিছুর উর্ধ্বে ভালোবেসেছেন। মক্কা ও মদীনার লোকেরা রাসুলের (সাঃ) জন্য স্বদেশীয়দের বিরোধিতা করেছেন। এখন সিন্ধান্ত নিন, আপনি ক্ষমতাসীনদের শিখানো বুলি দেশপ্রেম মানবেন না আল্লাহর দ্বীন – আল্লাহ ও রাসুল, মুমিনদের প্রতি প্রেম রাখবেন। আপনি দেশের আইন ও মানবরচিত কুফরী সংবিধান চান, না আল্লাহর প্রদত্ত কুরআনের তাওহীদী সংবিধান চান? আপনি জাতির পিতা ইব্রাহীমকে মানবেন না অন্য কাউকে? আপনার আর্দশ আল্লাহর বিশ্বনেতা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নাকি নিজের পছন্দনীয় কোন তাগুতী নেতা?! আল্লাহতায়ালা বলেন- “বল তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র, তোমাদের অর্জিত ধনসম্পদ, তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের প্রিয় বাসস্থান যদি আল্লাহ, তার রাসুল ও জেহাদ করা হতে অধিক প্রিয় হয় অপেক্ষা কর আল্লাহর ফায়সালার, আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত দেন না।” (সুরা তওবা-২৪)। কি আশ্চর্য!! সালাতে সকল প্রশংসা ঘোষণা ও সাহায্য চাওয়া হয় আসমান ও জমিনের রবের (ফাতেহা) এরপর সালাত শেষে মুসলিম উম্মাহ বিভিন্ন চেতনায় বিভক্ত হয়ে যায়। হজ্ব হতে কি শিখলেন যেখানে কে আরব, অনারব, কালো-সাদা সবাই মিলে আল্লাহর কালেমার স্বাক্ষ্য দেয় যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, একমাত্র তার বিধানই মানতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *