নজর লাগার অর্থ: নজর অর্থ চোখ বা দেখা বা দৃষ্টিপাত। যখন কেউ কোন ব্যক্তি বা জিনিসের প্রতি আশ্চর্য হয়ে কিংবা মজাক অথবা হিংসা করে দৃষ্টি নিক্ষেপ করত: “বারাকাল্লাাহু ফীকা” বা “বারাকাল্লাহু ফীহ্” বা “মাাা শাআল্লাহ” দোয়া না বলে মনে মনে বা সশব্দে তার গুণাগুণ বর্ণনা করে, তখন শয়তান সে সময় বর্ণিত ব্যক্তি বা জিনিসের মাঝে ঢুকে পড়ে আল্লাহর কাওনী তথা সৃষ্টিগত অনুমতিক্রমেই ক্ষতি করে বসে। চোখ বা দৃষ্টিশক্তি স্বয়ং নিজে কোন ক্ষতি করতে পারে না; তাই তো অন্ধ মানুষের দ্বারাও নজরলাগে। সাধারণত চোখ দ্বারা দেখার পরই দোয়া ছাড়া গুণাগুণ বর্ণনা করলে বর্ণিত ব্যক্তির সমস্যা হয় বলে নজরলাগা বলা হয়।
নজর কখনো নিকটের মানুষ ও প্রিয়জন এবং ভাল ব্যক্তির পক্ষ থেকে অনিচ্ছাকৃত আশ্চর্য ও মজাক করেও লাগে। এমনকি নিজের উপর নিজের নজর বা আপনজন তথা স্ত্রী, সন্তান বন্ধু-বান্ধুবি ইত্যাদির প্রতি লাগতে পারে। আবার কখনো হিংসুক ও নোংরা স্বভাবের লোকের নজরলাগে যা খুবই মারাত্মক যাকে বদনজর বলা হয়। নজর যে কোন জিনেসের উপর লাগতে পারে। চাই তা মানুষ হোক বা জীবজন্তু হোক বা গাছ-পালা বা ফল-ফলাদি হোক কিংবা বাড়ি, গাড়ি ইত্যাদি।
আল্লাহ বলেন,
“এবং (ইয়াকুব আলাইহিস সালাম) বললেন হে আমার প্রিয় সন্তানগণ! তোমরা সবাই (শহরে) কোন এক প্রবেশ পথে প্রবেশ করো না বরং বিভিন্ন প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবেশ করিও। আমি তোমাদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা কোন বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারব না। কেননা প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী কেবল আল্লাহ। তার উপর আমার আস্থা রয়েছে। ভরসাকারীকে ভরসা করলে তার প্রতিই করতে হবে। আর যখন তারা দিয়েছিলেন অথচ আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত কোন কিছু থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না। তবুও ইয়াকুবের (আলাইহিস সালাম) অন্তরে একটি আশা ছিল যে, তিনি তা পূর্ণ করেছেন। নিশ্চয় তিনি ইলমে (নবুওয়াতের) বাহক ছিলেন। অথচ অনেক লোক তা জানে না।”
সূরা ইউসুফঃ ৬৭-৬৮
হাফেজ ইবনে কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) উপরোক্ত দু’টি আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এটা সেই সময়ের ঘটনা যখন ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)-এর ভাই বিনইয়ামিনকে তার অন্য ভাইদের সাথে মিশরে পাঠিয়েছিলেন। আয়াতে ইয়াকুবের (আলাইহিস সালাম) উক্ত নির্দেশনার ব্যাখ্যায় ইবনে আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) মুহাম্মাদ বিন কা’ব, মুজাহিদ, যাহহাক, কাতাদা এবং সুদী (রহ) প্রমুখ বলেছেন যে, এমনটি তিনি বদ নজরের ভয়ে বলেছিলেন। কেননা তার সন্তানরা খুবই সুন্দর সুঠাম দেহের অধিকারী ছিলেন। তাই তাদের উপর লোকদের বদনজরের আশঙ্কা করে উক্ত নির্দেশ দেন। কেননা বদনজরের ক্রিয়া বাস্তব; কিন্তু পরে তিনি এও বলেনঃ তবে এ ব্যবস্থা আল্লাহর তাকদীরকে প্রতিহত করতে পারবে না। তিনি যা চাবেন তাই হবে———– পরিশেষে তা তাদের জন্য বদনজর হতে প্রতিরোধক হিসেবেই আল্লাহর হুকুমে কাজ হয়েছিল——- সংক্ষিপ্ত । (তাফসীর ইবনে কাসীরঃ ২/৪৮৫)
নজরলাগার হকিকত
আল্লাহ বলেন,
“কাফিররা যখন উপদেশ বাণী (কুরআন) শ্রবণ করে তখন তারা যেন তাদের তীক্ষ্ম দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়িয়ে ফেলতে চায় এবং বলেঃ সে তো এক পাগল।”
সূরা কলামঃ ৫১
হাফেজ ইবনে কাসীর (রাহেমাহুল্লাহ) ইবনে আব্বাস (রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) এবং মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেন যে, “তোমার প্রতি বদনজর দিবে।” অর্থাৎ তারা তোমাকে হিংসার প্রতিফলন ঘটিয়ে রুগী বানিয়ে দিবে যদি আল্লাহর তোমার প্রতি হেফাযত না থাকে। আয়াতটি প্রমাণ বহন করে যে, বদনজরের কুপ্রভাবের বাস্তবতা রয়েছে, আল্লাহর হুকুমে। যেমন এ ব্যাপারে হাদীসও রয়েছে। (তাফসীর ইবনে কাসীরঃ ৪/৪১০)।
● নবী (সা) বলেন: “যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের অথবা নিজের কিংবা তার সম্পদের কিছু দেখে আশ্চর্যবোধ করে তখন যেন তার জন্য বরকতের দোয়া করে; কেননা নজরলাগা সত্য জিনিস।” [আহমাদ, শাইখ আলবানী (রহ:) সহীহ বলেছেন-সিলসিলা সহীহা হা: নং ২৫৭২]
বদনজর, জাদু ও জিনের চিকিৎসা
● আসমা বিনতে উসাইম (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত যে, “তিনি নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট আবেদন করনে যে, জাফরের সন্তানদের নজর লাগে আমি কি তাদের জন্যে ঝাড়ফুঁক করব? উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ
হ্যাঁ! কোন বস্তু যদি তাকদীরকে অতিক্রম করত তবে বদনজর তা অতিক্রম করত।” (তিরমিযীঃ ২০৫৯, আহমদঃ ৬/৪৩৮)।
● আবু যর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
ان العين لتولع بالرجل بإذن الله حتى يصعد حالقا فيتردى منه
ইমাম আহমদ ও আবু ইয়ালা বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসের সারমর্ম হল, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কোন ব্যক্তির যখন নজর লাগে তখন এত বেশি প্রভাবিত হয় যে, সে যেন কোন উচু স্থানে চড়ল অতঃপর কোন নজর দ্বারা হঠাৎ করে নীচে পড়ে গেল। (শায়খ আলবানী সহীহ বলেছেনঃ ৮৮৮)
● আবূ উমামা ইবনে সহল ইবনে হুনাইফ (রহঃ) বলেন, (জুহফার নিকটবর্তী) হেরার নামক স্থানে আমার পিতা আবু সহল (ইবনে হানীফ) গোসল করার মনস্থ করে জুব্বা খুলে ফেললেন। আমির ইবনে রবীয়া দেখছিলেন। আমার পিতা সহল সুন্দর ও সুদর্শন লোক ছিলেন। আমির বললো, আজকের মতো আর কোনদিন আমি এত সুন্দর মানুষ দেখি নাই, এমন কি এত সুন্দর দেহবিশিষ্ট কোন যুবতীও দেখি নাই। (আমিরের এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই) তৎক্ষণাৎ সহলের গায়ে জ্বর আসলো এবং জ্বরের বেগ ভীষণ হলো। অতঃপর এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের কাছে বললো, সহলের জ্বর হয়েছে এবং সে আপনার সঙ্গে যেতে পরবে না। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহলের নিকট আগমন করলেন, সহল আমিরের সেই কথা নকল করে শোনাল। তা শুনে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোন মুসলিম নিজের ভাইকে কেন হত্যা করে। অতঃপর আমিরকে বললেন, তুমি ‘বারাকাল্লাহ’ বললে না কেন? বদনজর (কুদৃষ্টি) সত্য। সহলের জন্য ওযু কর। আমির সহলের জন্য ওযু করলেন। অতঃপর সহল ভাল হয়ে গেলো এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে গেলেন, আর তার কোন অসুবিধা তখন ছিল না।
হাদিস থেকে জানা যায়, কারও সৌন্দর্য, ধন-সম্পদ বা কোনো প্রকার উন্নতি কিংবা বিস্ময়কর কিছু দেখলে— তার জন্য কল্যাণের দোয়া করা উচিত। শুধু এতটুকুও দোয়া করা যায় যে— ‘বারাকাল্লাহু ফিহি’। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা এতে বরকত দান করুন।
আবার বিভিন্ন কোনো কোনো বর্ণনায় আছে, ‘মাশাআল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলা উচিত। এতে কুদৃষ্টির প্রভাব বিনষ্ট হয়ে যায়। আর ওই ব্যক্তি বা জিনিস কুদৃষ্টির প্রতিক্রিয়া থেকে মুক্ত থাকে।
এছাড়াও এই হাদিস থেকে জানা যায়, কেউ বদনজরে আক্রান্ত হলে যার নজর লাগে, তার হাত-পা ও মুখমণ্ডল ধৌত করা পানি রোগীর দেহে ঢেলে দিলে অনিষ্ট বিদূরিত হয়ে যায়। তাহলে কেউ যদি এরকম গোসলের পানি চায় মনে কোনরূপ কষ্ট না নিয়ে দেওয়া উচিত।
সাধারণত এরকম গোসলের পানি পাওয়া কষ্টকর কারণ কার কারণে বদনজর লেগেছে তা বুঝা যায় না অনেক সময়। সেজন্য কুরআন দ্বারা রুকইয়া করতে হবে, এছাড়া বদনজর হতে বাচার দোয়া রয়েছে।
সাহাবীদের ক্ষেত্রে বদনজর লেগেছিল মাশালাহ বারাকাল্লাহ না বলাতে অথচ আমরা এখন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম কত জায়গায় নিজেদের ও স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের ছবি দিচ্ছি গর্বিত ভঙ্গিতে। মূলত বান্দা যখন আল্লাহর প্রশংসা ও আশ্রয় চায় আল্লাহ সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন জিন ও মানব শয়তান হতে। নাহলে শয়তান বিভিন্নভাবে ক্ষতি করতে পারে, অবশ্যই আল্লাহর ইচ্ছায়। অনেক সময় আল্লাহর নাম বাদ দিয়ে কারো প্রশংসা করলে শয়তান অন্তরে ওয়াসওয়াসা লাগিয়ে হিংসা সৃষ্টি করে।
● নবী (সা) বলেন: “নজর লাগা সত্য। যদি কোন কিছু ভাগ্যের লিখনকে অতিক্রম করত, তাহলে নজরলাগাই করত।” [মুসলিম]
● নবী (সা) আরো বলেন: “আল্লাহর ফয়সালা ও ভাগ্যের পরে আমার উম্মতের সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় নজর লেগে।” [হাদীসটি হাসান, সহীহুল জামে’: হা: নং ১২০৬)
● নবী (সা) আরো বলেন: “বদনজর (মানুষকে) কবরে এবং উটকে পাতিলে প্রবেশ করাই ছাড়ে।” [হাদীসটি হাসান, সহীহুল জামে’: হা: নং ৪১৪৪]
নজরলাগার প্রকার
নজর লাগা যে কোন মানুষ দ্বারা হতে পারে। আলেমদের মতে-
যখন আল্লাহর জিকির ছাড়া গুণাগুণ বর্ণনা করা হয়, তখন শয়তান হাজির হয় এবং বর্ণনা শুনামাত্র বর্ণিত ব্যক্তির মাঝে প্রবেশ করে আল্লাহর কাওনী তথা সৃষ্টিগত ইচ্ছায় প্রভাব ফেলে। মজাক করে বা আশ্চর্য হয়ে বললেও নজর লাগে। ইহা একান্ত নিজস্ব মানুষ বা নিজের প্রতি নিজেরও নজর লাগে।
এটা কিছু দুর্বল ঈমানের মানুষ দ্বারাও হয়। যখন দোয়া ছাড়া গুণাগুণ বর্ণনা করে তখন শয়তান বর্ণিত ব্যক্তি বা নিজের মাঝে প্রবেশ করে আল্লাহর কাওনী তথা সৃষ্টিগত অনুমতিক্রমে তা ধ্বংস করে ফেলে।
● নবী (সা) বলেন: “নজরলাগা সত্য এবং (গুণাগুণ বর্ণনার সময়) শয়তান ও বনি আদমের হিংসা হাজির হয়।” [মুসনাদে আহমাদ: হাদীসটি যঈফ)
বদনজর হতে বাচার উপায়
মানুষের উপর বিভিন্ন কারণে বদনজর হয়ে থাকে। বদনজর শুধু মানুষের পক্ষ থেকে হয় এমনটি নয়, বরং বদজিন থেকেও বদনজর হয়ে থাকে। মানুষের কুদৃষ্টিই মূলত বদনজর। এতে বেশি আক্রান্ত হয় শিশুরা। তবে বড়রাও এ থেকে মুক্ত নয়। তাই সবার উচিত বদ নজর থেকে বাঁচতে কুরআনি আমল ও দোয়া পড়া। আর তাহলো-
● আয়িশা (রা.) বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে ঘুমানোর সময় তাঁর দু’হাতের তালু জড়ো করে তাতে ফুঁ দিতেন এবং তাতে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করতেন। এরপর দুই হাতের তালু দিয়ে দেহের যেখানে সম্ভব, সেখানে মুছে দিতেন। শুরু করতেন মাথার উপরিভাগ দিয়ে; এরপর চেহারা ও দেহের সামনের অংশ। এই কাজ তিনি তিনবার করতেন।’’ [সহিহ বুখারি: ৫০১৭]
● উকবাহ্ ইবনু আমির (রা.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রত্যেক (ফরজ) নামাজের শেষে সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। (সিলসিলা সহিহাতে এসেছে সূরা ইখলাসের কথাও।) [আবু দাউদ: ১৫২৩, হাদিসটি হাসান]
এছাড়াও সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি (সুরা বাকারা, আয়াত ২৫৫), সুরা বাকারার শেষের দুই আয়াত (২৮৫ ও ২৮৬), সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক্ব এবং সুরা নাস পড়া যেতে পারে।
বদনজর থেকে বাঁচার জন্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঝাঁড়-ফুক দেয়া। বদনজরে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য ঝাঁড় ফুকের সময় এসব দোয়া পড়া-
بِسْمِ اللهِ أرْقِيْكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيْكَ وَمِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أوْ عَيْنٍ حاَسِدٍ اللهُ يَشْفِيْكَ بِسْمِ اللهِ أرْقِيْكَ
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি আরক্বিকা মিং কুল্লি শাইয়িন ইয়ুজিকা ওয়া মিন সাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসাদিল্লাহু ইয়াশফিকা বিসমিল্লাহি আরক্বিকা।
অর্থ: আল্লাহর নামে কষ্ট দানকারীর সব অনিষ্টতা থেকে তোমাকে ঝাঁড়-ফুক করছি। হিংসুক ব্যক্তির কুদৃষ্টির অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর নামে তোমাকে ঝাঁড়-ফুক করছি। আল্লাহ তোমাকে আরোগ্য দান করতে তারই নামে ঝাঁড়-ফুক করছি।’ (বুখারি ও মুসলিম)।
أعُوذُ بِكَلِماَتِ اللهِ التاَّمَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطاَنٍ وَهاَمَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
উচ্চারণ: আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শায়ত্বানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লিআম্মাতিন।’
অর্থ: ‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কালামসমূহের মাধ্যমে শয়তানের সব আক্রমণ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। বিষধর প্রাণীর ও বদনজরকারীর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।’ (বুখারি)।
بِسْمِ اللهِ يُبْرِيْكَ ومِنْ كُلِّ داَءٍ يَشْفِيْكَ، ومِنْ شَرِّ حاِسِدٍ إذاَ حَسَدَ، وَمِنْ شَرِّ كُلِّ ذِيْ عَيْنٍ
উচ্চারণ: ‘বিসমিল্লাহি ইউবরিকা ওয়া মিন কুল্লি দাঈন ইয়াশফিকা, ওয়া মিন শাররি হাসাদিন ইজা হাসাদা, ওয়া মিন শাররি কুল্লি জি আইনিন।’
অর্থ: ‘আল্লাহর নামে শুরু করছি, তিনি তোমাকে মুক্ত করুন, প্রত্যেক অসুখ থেকে আরোগ্য দান করুন, প্রত্যেক হিংসুকের হিংসা থেকে এবং প্রত্যেক বদনজরের অনিষ্ট থেকে (মুক্ত করুন)।’ (মুসলিম)।
আমাদের দেশে বদনজর হতে বাচতে শিশুদের কপালে কালো টিপ ও আগুনের ছ্যাকা দেওয়া কুসংস্কার ও শরীয়া বিরোধী।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিয়মিত কুরআনের আমলগুলো আদায় করার মাধ্যমে বদনজর তথা কুদৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আর যারা বদনজরে আক্রান্ত তাদেরকে উল্লেখিত দোয়ার মাধ্যমে তা থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন।’ আমিন।