শেষ জমানায় জলবায়ু পরিবর্তন হবে আলোচনার বিষয়।কোথাও নদী শুকাবে, কোথাও বন্যা দেখা দিবে। কেয়ামত ঘনিয়ে আসার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে- ফসলাদি উৎপন্ন করে না এমন প্রবল বর্ষণ।
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “কেয়ামতের পূর্বমুহূর্তে আকাশ থেকে অবিরাম বর্ষণ হবে, কিন্তু তা থেকে সামান্য ফসল-ও অঙ্কুরিত হবে না।” (মুসনাদে আহমদ)
কোন সন্দেহ নেই ভূ-পৃষ্ঠের বরকত নিঃশেষ হয়ে যাওয়ায় এরকম ঘটবে। যেমনটি নবী করীম সা. বলেছেন- “বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাওয়া দুর্ভিক্ষ নয়; বরং অবিরাম বর্ষণ সত্বেও জমিনে ফসল না ফলানো দুর্ভিক্ষ।” (মুসনাদে আহমদ)।
এছাড়া -কেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে- এমন বর্ষণ, যা মাটি ও পাথরে নির্মিত সকল স্থাপনা ভাসিয়ে নেবে। নির্মিত কাপড়ের ছোট তাঁবু নিস্তার পেয়ে যাবে।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না আকাশ থেকে এমন বৃষ্টি বর্ষিত হয়, যা থেকে চাদরে নির্মিত ঘর (তাঁবু) নিস্তার পেলেও পাথর নির্মিত সুবিশাল ঘরবাড়ী নিস্তার পাবে না।” (মুসনাদে আহমদ)।
তার মানে কেয়ামতের পূর্বে পানিপ্রবাহ, বন্যায় লোকালয় ক্ষতিগ্রস্থ হবে তবে তাবুঘরগুলো বেচে যাবে। সাধারণত তাবু ঘরগুলো পাহাড়-পর্বতে জনশূন্য এলাকায় হয় আর এগুলো স্থানান্তর সহজ। হয়তো একারণে রক্ষা পাবে।
ফোরাত ও দজলা- ফোরাত নদীর একটা অংশ শুকিয়ে যাবে স্বর্ণের পাহাড় উঠবে (মুসলিম, বুখারী)। আল ফিতান অনুযায়ী তা উঠবে সিরিয়ার দেইর আর জুরে। তুরস্ক, ইরাক, সিরিয়ায় ফোরাতের অবস্থান। তুরস্কের বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের ফলে ফোরাতে পানিপ্রবাহ কমে আসছে, কিছু অংশ শুকিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দজলাও কিছুটা শুকিয়ে আসছে।
নীলনদী- হাদীস অনুযায়ী সবার আগে ধ্বংস হবে বসরা (ইরাক) ও মিশর। মিশর ধ্বংস হবে নীলনদী শুকিয়ে যাবে, ক্ষুধা ও রক্তপাত দেখা দিবে। মিশর ধ্বংস হওয়ার পর জাযিরাতুল আরব ধ্বংস হবে (সৌদি, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, ওমান, আরব আমিরাত)। (আসসুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান- খন্ড-৪, পৃ-৯০৭, মুসলিম)। মিশরে নীলনদী প্রবাহের উৎস হল ইথিওপিয়ার ব্লু নাইল। সেখানে দীর্ঘদিন হতে বাধ নির্মাণ চলছিল, এখন প্রায় শেষ। এ বাধ চালু হলে মিশরে পানিপ্রবাহ বন্ধ হবে ও শুকিয়ে যাবে। এই বাঁধ নির্মানের তীব্র বিরোধিতা করেন তৎকালীন মুরসি সরকার কিন্তু এর কিছুদিন পরেই সেনাবাহিনীর অভ্যূত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। আর বাঁধ নিয় চীন, ভারতের খেলা অনেকেরই জানা।
কখনও পানি ছেড়ে বন্যা, কখনও পানি কম দেওয়ায় খরা চলছে। আমাদের নিজেদের প্রস্তুতি নিতে হবে। উঁচু দালানের চেয়ে গ্রাম ও কম জনসংখ্যা বিশিষ্ট জায়গায় বসতি করতে হবে। আর বাধ নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি যেকোন ঘটনা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে হবে।