গৃহযুদ্ধ কেন হয়? কোরআন ও হাদিসের আলোকে অনুধাবন।

রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- “যখনই তারা আল্লাহ ও তার রসুলের সাথে অঙ্গীকার ভঙ্গ করবে, তখনই তাদের বিজাতীয় শত্রুকে (আল্লাহ) তাদের উপর বিজয় করে দিবেন, ফলে তারা মালিকানাধীন অনেককিছু দখল করে দিবে। যতক্ষণ শাসক আল্লাহর বিধান অনুযায়ী শাসন করবে না, আল্লাহর নাযিলকৃত বিষয় কার্যকরী করবে না, ততক্ষন আল্লাহ অভ্যন্তরীন সংঘাত লাগিয়ে রাখবেন।” (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৫ম খন্ড পৃ-৩৬৩)। সারাবিশ্বে মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে হাদীসের বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয়। কোথাও সরকারের সাথে বিরোধীদলের সংঘাত চলছে, কোথাও গৃহযুদ্ধ, কোথাও আল্লাহ ও রসুলের সাথে অঙ্গীকার (ইসলাম মেনে চলার) ভঙ্গ করার কারণে বিজাতীয় শত্রুরা অনেকটুকু ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে। বাংলা-পাক মুক্তিযুদ্ধও তার উদাহরণ। ভারতবর্ষ বিভাজন হয়েছিলো ভূখন্ডকে প্রধান্য দিয়ে নয় বরং ধর্মের ভিত্তিতে। তাই ভারত সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়া স্বত্বেও বাংলাদেশের স্হান হয় পাকিস্তানের ভাগে। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ বহু নেতা ও আলেমরা ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখায় তাই ৪৭ এর বিভাজনে বাংলার বহু আলেমও পাকিস্তানের পক্ষ নেয়। আর পাকিস্তান নামকরণ করা হয় মদীনা তাইয়্যেবা নাম অনুসরনে মানে পবিত্র স্হান। রাজধানী ইসলামবাদ রাখা হয় যার অর্থ ইসলামের স্হান। পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্লোগান ছিল কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। কিন্তু সব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে জিন্নাহসহ পাকসরকার জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র ঘোষণা করে। কুরআনের আইনের বদলে মানবরচিত সংবিধান স্হান দেয় রাষ্ট্রে। যদি পাকিস্তান ইসলামী রাষ্ট্র হতো, তাহলে সংবিধান হতো আল কুরআন। পাক-বাংলার সবার সমঅধিকার হতো, সবাই তার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পেত, সবার পতাকা হতো কালেমরা পতাকা। পাক-বাংলার সবচেয়ে দ্বীনী জ্ঞানসম্পন্ন, তাকওয়াপূর্ণ মুসলিমরা মজলিসে শুরা অনুযায়ী শাসন ক্ষমতা পেত। উভয়ের মুদ্রা হতো একই স্বর্ন ও রৌপ্যমুদ্রা, সবাই নিজ নিজ ভাষায় কথা বলার অধিকার রাখতো। যেহেতু কুরআনের সংবিধান অনুযায়ী শাসনকার্য চলত তাই দুদেশের দাপ্তরিক ভাষা হতো আরবি কিন্তু তা না করে মানবরচিত সংবিধান চালু করে তারা দাপ্তরিক ভাষা উর্দু ঘোষণা করে এরপর ৫২ এর আন্দোলন ও ৭১ এর যুদ্ধ তাদের আল্লাহ ও রসুলের প্রতি অঙ্গীকার ভঙ্গ ও কুরআন ব্যতীত শাসনকার্য চালানোর ফল। ফলে কারগিল যুদ্ধে পাকিস্তান ভারতের নিকট কিছু ভূমি হারায়, চীনকে কাশ্মীরের কিছু অংশ দেয় ভারতের বিপক্ষে চীনকে বন্ধু হিসেবে রাখার জন্য। আর বাংলাদেশ হতে তারা অপমানজনকভাবে বিতাড়িত হয়। যদি কুরআন দ্বারা শাসন করত হয়তো যুদ্ধই হতো না। আর আন্দোলন হওয়া উচিত ছিল ৫২ তে নয়, ৪৮ এ যখন সংবিধান হতে কুরআনকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তাহলে হয়তো আমরা ইসলামী রাষ্ট্র পেতাম। আজ দেখুন এদেশে যেদলই ক্ষমতায় আসুক বিরোধীদলসহ ও সাধারণ মানুষ নির্যাতিত ও অবহেলিত হয়। কারণ মানবরচিত আইন তৈরিই হয় শাসকের সুবিধার্থে আর আল্লাহ প্রদত্ত আইন দেওয়া হয়েছে সকল মানুষের কল্যানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *