কেয়ামতের আলামত পর্ব-৫ (সিনেমা ও অশ্লীলতায় ইসলামকে ব্যাঙ্গ করা)

রসুল (সাঃ)-এর বহু ভবিষ্যৎবানী সত্যে পরিণত হয়েছে। ইনশাআল্লাহ বাকীগুলোও সত্যে পরিণত হবে।

উমর বিন সাঈদ বিন আস (রা.) একদা পিতা বরাবর খুবই পাণ্ডিত্য ও সাহিত্য-পূর্ণ ভাষায় একটি আবেদন পেশ করলেন। আবেদন পাঠ শেষ হলে ছেলেকে উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন- তোমার কথা কি শেষ হয়েছে? ছেলে বলল- জ্বি হ্যাঁ… পিতা বললেন (ওহে বৎস! ভেবো না যে, তোমাকে আমি অবহেলা করছি অথবা তোমার আবেদন পূরণে আমি অসম্মত।
তবে শুনে রাখ- নবী করীম (সা.)-কে আমি বলতে শুনেছি- “অচিরেই এমন জাতির আবির্ভাব হবে, যারা গরু-গাভীর মত মুখ ব্যবহার করে উপার্জন করবে।” (মুসনাদে আহমদ)

বর্তমানে দেখবেন- টকশো, মিডিয়াসহ বহু জায়গায় সত্য না বলে যে যার মতো বক্তব্য, অযৌক্তিক তর্ক, নাটক সিনেমায় অশ্লীল কথা, গালি দ্বারা অর্থ উপার্জন করে চলছে।

আব্দুল্লাহ বিন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেন- “কেয়ামত ঘনিয়ে আসার অন্যতম নিদর্শন হচ্ছেঃ

১. অসৎ ব্যক্তিদের মর্যাদা দান
২. সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদেরকে অসম্মান
৩. অশ্লীল সংলাপ ব্যাপক আকার ধারণ
৪. (দ্বীন ছাড়া) সকল কাজ সুচারুরূপে সম্পাদন
৫. সর্বস্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপক অনাচার প্রকাশ

‘ব্যাপক অনাচার-‘ কি? জিজ্ঞেস করা হলে নবীজী (সা) বললেন- আল্লাহর কালাম ছেড়ে যা কিছুই লেখা হবে, সবই অন্যায়।” (তাবারানী)

দেখবেন- গরিব সৎ দিনমজুরকে সম্মান করা হয় না অথচ ঘুষখোর, সুদখোর, দুর্নীতিবাজরা সমাজে সম্মানিত।

কেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে, মানুষ প্রচুর পরিমাণে বই-পুস্তক পড়বে। বিভিন্ন বিষয়ের বই দিয়ে ঘরোয়া লাইব্রেরী সাজিয়ে তুলবে। কোরআনের জ্ঞান অবহেলা করে পার্থিব জ্ঞানকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

আবু মালেক আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেন- “অবশ্যই আমার উম্মতের মধ্যে একদল লোকের আবির্ভাব হবে, যারা মেয়েদের সাথে অবাধ মেলামেশা, রেশমী কাপড় পরিধান, মদ্য পান এবং গান-বাজনাকে হালাল মনে করবে।
আরেক দল উঁচু পাহাড়ের পাদদেশে মেষপাল নিয়ে অবতরণ করবে, তাদের কাছে ফকির এসে সাহায্যের আবেদন করলে তারা বলবে আগামীকাল এসো! এসকল ব্যক্তিকে আল্লাহ ধ্বংস করে দিবেন, সুউচ্চ পাহাড় (ধ্বসে) তাদের উপর আপতিত হবে। অপর দলকে আল্লাহ (কেয়ামত পর্যন্ত) শুকর-বানরের আকৃতিতে পরিবর্তন করে দেবেন।” (বুখারী)

বর্তমানে অনেকে অশ্লীল চলচ্চিত্র, নাটক ব্যবসা সফল করার জন্য দোয়া করে, একে হালাল বলে প্রচার করে। অনেক নাটক, সিনেমায় ইসলামকে নিয়ে উপহাস করা হয়। তারা যেন আল্লাহর হুকুম-আহকাম নিয়ে উপহাস করে চলছে।

অথচ আল্লাহ বলেন,

“আর যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, তাহলে তারা নিশ্চয় বলবে যে, ‘আমরা তো শুধু আলাপ-আলোচনা ও হাসি-তামাশা করছিলাম।’ তুমি বলে দাও, ‘তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ এবং রসূলকে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করছিলে? ছলনা কর না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার পর। তোমাদের মধ্যে কোন কোন লোককে যদি আমি ক্ষমা করে দেইও, তবে অবশ্য কিছু লোককে আযাবও দেব। কারণ, তারা ছিল গোনাহগার।”

সুরা তওবা ৬৫-৬৬

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *