আবদুল্লাহ ইবনু হাওয়ালাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) এ গনীমতের সম্পদ লাভ করার জন্য আমাদেরকে পদাতিক বাহিনী হিসেবে এক অভিযানে পাঠালেন।
আমরা এমন অবস্থায় ফিরে আসলাম যে, আমরা গনীমতের কিছুই লাভ করতে পারিনি। তিনি আমাদের চেহারায় ক্লান্তি ও দুর্বলতার ছাপ দেখতে পেয়ে আমাদের মাঝে (বক্তৃতার উদ্দেশ্যে) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহ! তাদের দায়িত্ব এভাবে আমার ওপর অর্পণ করো না যে, আমি তাদের পক্ষ হতে তা বহন করতে দুর্বল হয়ে পড়ি।
(হে আল্লাহ!) তাদের ওপর এমন কাজের দায়িত্ব অর্পণ করো না যা সমাধা করতে তারা অক্ষম হয়ে পড়ে। (হে আল্লাহ!) তাদেরকে অন্য লোকের ওপরও অর্পণ করো না। কেননা তারা নিজেদের প্রয়োজনকে তাদের প্রয়োজনের উপর গুরুত্ব দেবে।
বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি (সা.) আমার মাথার উপর স্বীয় হাত রেখে বললেন, হে ইবনু হাওয়ালাহ্! যখন তুমি দেখবে খিলাফাত (মদীনাহ্ হতে স্থানান্তরিত হয়ে) পবিত্র ভূমিতে (বায়তুল মাকদিস) পৌছে গেছে, তখন তুমি বুঝে নিবে যে, ভূমিকম্প, দুঃখ-দুর্দশা, বড় বড় নিদর্শনসমূহ ও ফিতনা-ফাসাদ খুবই কাছে এসে গেছে এবং আমার এই হাত তোমার মাথা থেকে যত নিকটে, কিয়ামত সেদিন এটা অপেক্ষাও অতি কাছাকাছি হবে। (সহীহ: আবু দাউদ ২৫৩৫)।
অনেক আলমের অভিমত তা খলিফা মাহাদীর (হাফিঃ) পূর্বে ঘটবে।
এই হাদীস হতে বুঝা যায় – খেলাফত আসলে সাথে সাথেই সুখ-শান্তি, প্রবৃদ্ধি আসবে তা নয় বরং ভূমিকম্প, দুঃখ-দুদর্শা, ফেতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি হবে।
এটা মুমিনদের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে জান্নাতের মহাপুরস্কার লাভের পরীক্ষা আর মুনাফেকরা এর জন্য হয়তো খিলাফার সৈনিকদের দায়ী করবে। এর পরবর্তীতে ঈসা (আঃ) এর যুগে দাজ্জালকে হত্যার পরে সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি লাভ করবে।
আসলে ইসলামী শরীয়া ব্যবস্হা প্রতিষ্ঠা করা আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব আর মুমিন এর বিনিময়ে জান্নাতের সমৃদ্ধি ও রবের সাক্ষাৎ আকাঙ্খা করে। এছাড়া আর একটা হাদীস হতে তারা ব্যাখা করে তার পূর্বে খলিফা থাকবে।
উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন-
তিনি (সা.) বলেছেন: (শেষ যামানায়) একজন খলীফার মৃত্যুর সময় লোকেদের মধ্যে দ্বিতীয় খলীফাহ নিয়োগের ব্যাপারে মতবিরোধ দেখা দেবে। তখন মদীনাহ্ থেকে এক ব্যক্তি বের হয়ে মক্কার দিকে ছুটে পলায়ন করবে। এ সময় মক্কাবাসীরা তার নিকট এসে তাকে বলপূর্বক ঘর হতে বের করে আনবে।
কিন্তু সে তা পছন্দ করবে না। অতঃপর হাজারে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে লোকেরা তার কাছে বায়’আত গ্রহণ করবে। এরপর সিরিয়া থেকে একটি সৈন্যবাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য পাঠানো হবে।
কিন্তু মক্কাহ্ ও মদীনার মাঝামাঝি ’বায়দা’ নামক স্থানে তাদেরকে মাটিতে পুঁতে ফেলা হবে।
অতঃপর যখন চতুর্দিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়বে এবং লোকেরা বাস্তবে এ অবস্থা দেখতে পাবে, তখন সিরিয়ার ’আবদালগণ এবং ’ইরাকের এক বিরাট দল তার নিকট আসবে এবং তার হাতে বায়’আত করবে। অতঃপর কুরায়শের এক লোক যার একদল সৈন্য পাঠাবে, ইমামের সেনাবাহিনী তাদের ওপর জয় লাভ করবে। এটাই ’ফিতনায়ে কালব’।
ইমাম মানুষের মধ্যে তাদের পয়গাম্বর (মুহাম্মাদ সা.)-এর সুন্নাত মোতাবেক কাজকর্ম পরিচালনা করবেন এবং পৃথিবীতে ইসলাম পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি সাত বছর এ অবস্থায় অবস্থান করবেন। অতঃপর ইন্তিকালের পর মুসলিমগণ তার জানাযাহ্ আদায় করবেন।
য’ঈফ: আবু দাউদ ৪২৮৬, যঈফাহ্ ১৯৬৫, আবু খলীলের সাথি (সহিব) মাজহুল, য’ঈফাহ্ ১৯৬৫; য’ঈফুল জামি ৬৪৩৯, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২০৭৬৯, মুসনাদে আহমাদ ২৬৭৩১, আবু ইয়া’লা ৬৯৪০, সহীহ ইবনু হিব্বান ৬৭৫৭, আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৯৩৬৭, আল মু’জামুল আওসাত্ব ১১৫৩।
বনু কাল্ব বর্তমান সিরিয়ার ক্ষমতায় আছে।